নীলফামারীর সৈয়দপুরে আবারো ছড়িয়ে পড়েছে মাদক ব্যবসা। অনেকটা প্রকাশ্যে কতিপয় তরুন যুবক এ ব্যবসা করে যাচ্ছে। মাঝে মধ্যে দিনের বেলাও চোখে পড়ে মাদক সেবী এবং ব্যবসায়ি দলবদ্ধ হয়ে চলতে। এদের দেখলে কেউ কোন কিছু বলার সাহস পায় না। কারণ এদের আচরণ খুবই অদ্ভুত। তাই সম্মানহানি হবে এমন ভয়ে তাদেরকে কেউ কোন কিছু বলতে যাননা। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কার্যালয়টি ছিল সৈয়দপুরে। তখন ওই দপ্তরের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা সর্বক্ষণ মাদক নির্মুলে অভিযান চালাতেন।
তাদের অভিযানের কারণে মাদক ব্যবসায়িরা থাকতো গ্রেফতার আতংকে। তখন কিছুটা হলেও ভয়ে থাকতো মাদক ব্যবসায়িরা। কিন্তু কয়েক বছর হল ওই দপ্তরটি সৈয়দপুর থেকে নিয়ে যাওয়া হয় নীলফামারীতে। ফলে মাদক ব্যবসা এখন সৈয়দপুরে অনেকটা ওপেন সিক্রেট।
ইতিপূর্বে সৈয়দপুর থানায় মোঃ সহিদার রহমান নামে একজন ওসি ছিলেন। তিনি ছিলেন মাদক সেবী এবং ব্যবসায়িদের আতংক। তার ভয়ে সে সময়ে সৈয়দপুর থেকে মাদক ব্যবসায়িরা পালিয়ে যায়। মাসের পর মাস মাদক সেবী এবং ব্যবসায়িরা ছিল বাড়ি ছাড়া। তিনি থানায় যোগদানের পর নিজেই মাদক নির্মুলে মাঠে নামেন তাও আবার একাই। সাদা পোষাকে তিনি একাই মাদক ব্যবসায়ি ও সেবনকারীদের দমনে কাজ করতেন।
ওই সময়ে শহরে মাদক ব্যবসা তেমন ছিল না। পরবর্তীতে পদোন্নতি পেয়ে তিনি এএসপি হয়েছিলেন। তারপর কয়েক বছর হল তিনি ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
সৈয়দপুরে মাদক সেবী ও ব্যবসায়ির সংখ্যা না কমে বরং বেড়েছে। বিভিন্ন নামে মাদক এখন শহরে ছয়লাব। এক মাদক সেবনকারী জানায়,এখন হিরোইন, ফেন্সিডিল,লাল টেবলেট,গাঁজা,ইয়াবাসহ নানা ধরনের মাদক বিক্রি হয়। তবে ওই সকল মাদকের দাম বেশির কারণে সবাই এটি ক্রয় করতে পারে না। তাই সস্তায় এখন সহজে পাওয়া যায় চুয়ানি। এটিও নেশা জাতীয় তরল পানীয়।
সে জানায়,শহরের রেললাইন ধারে বাঁশ হাটি,মক্কা হোটেল সংলগ্ন,বাঙ্গালীপুর শাইল্লার মোড়,হাতিখানা ক্যাম্প, গোলাহাট ক্যাম্প,চামড়া গুদাম,কাজিহাট পানির ট্যাঙ্কি, গোলাহাট মাজার রোড, সৈয়দপুর প্লাজা,মুন্সিপাড়া রামকৃষ্ণ স্কুল সংলগ্ন,তামান্না সিনেমা হলের পিছনসহ আরো অনেক স্থানে মাদক বিক্রি হয়।
চুয়ানি শহরে সহজেই পাওয়া যায়। কেউ স্পটে বসে খায়, আবার কেউবা পলিথিন বা বোতলে করে নিয়ে যায়। কেউ বুঝতেই পারবে না কি নিয়ে যাচ্ছে।
তারা জানায়,ওই চুয়ানি আসে দিনাজপুর জেলার দাগলাগঞ্জ,ভুষিরবন্দর,পার্বতীপুরসহ বেশকিছু এলাকা থেকে। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ডাঃ আব্দুর রহিম জানান,চুয়ানি অ্যালকোহল জাতীয় তরল। ল্যাবে পরীক্ষা নিরীক্ষা ছাড়াই ইচ্ছামতো রাসায়নিক দ্রব্য মিশিয়ে তৈরি করায় সেবনকারীর তীব্র মাথাব্যথা,আচরণগত সমস্যা ও মৃত্যুও হতে পারে।
সৈয়দপুর থানার অফিসার্স ইনচার্জ ওসি আব্দুল ওয়াদুদ বলেন,মাদককে আমরা কোনভাবেই সাপোর্ট করি না। যারা এ মরণ নেশার সাথে জড়িত তাদের গ্রেফতারে পুলিশ কাজ করছে।