দেশের স্বর্ণবাজারে আবারও তৈরি হয়েছে নতুন ইতিহাস। মাত্র ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে ভরিতে ৬ হাজার ৯০৬ টাকা পর্যন্ত দাম বাড়িয়ে ২২ ক্যারেট স্বর্ণের ভরির মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ৯ হাজার ১০১ টাকা—যা বাংলাদেশের ইতিহাসে স্বর্ণের সর্বোচ্চ দাম।
বুধবার (৮ অক্টোবর) রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) জানায়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) দাম বেড়ে যাওয়ায় নতুন এই মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) থেকে এই নতুন দাম কার্যকর হবে।
নতুন দামের তালিকা অনুযায়ী, ২১ ক্যারেট স্বর্ণের ভরি ১ লাখ ৯৯ হাজার ৫৯৪ টাকা, ১৮ ক্যারেট ১ লাখ ৭১ হাজার ৮৮ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির স্বর্ণের ভরি ১ লাখ ৪২ হাজার ৩০১ টাকায় বিক্রি হবে।
এর আগে মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) বাজুস ভরিতে ১ হাজার ৪৬৯ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম ২ লাখ ২ হাজার ১৯৫ টাকা নির্ধারণ করেছিল। অর্থাৎ মাত্র একদিনের ব্যবধানে দাম বেড়েছে ৬ হাজার ৯০৬ টাকা।
বাজুসের বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, স্বর্ণ বিক্রয়ের সময় সরকার নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট এবং বাজুস নির্ধারিত ন্যূনতম ৬ শতাংশ মজুরি যুক্ত করতে হবে। গহনার ডিজাইন ও মানভেদে এই মজুরির তারতম্য হতে পারে।
এদিকে, আন্তর্জাতিক বাজারেও সোনার দাম পৌঁছেছে নজিরবিহীন উচ্চতায়। যুক্তরাষ্ট্রে সুদের হার কমার সম্ভাবনা এবং আংশিক সরকারি কার্যক্রম স্থগিতের আশঙ্কায় বিনিয়োগকারীরা ঝুঁকছেন নিরাপদ সম্পদে। এর প্রভাবে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দাম আউন্সপ্রতি ৪ হাজার ডলার অতিক্রম করেছে।
বাজার বিশ্লেষকদের মতে, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা এবং ডলারের দামের অস্থিরতা বাংলাদেশের বাজারেও সরাসরি প্রভাব ফেলছে। ফলে স্থানীয় বাজারে স্বর্ণের মূল্য বারবার নতুন উচ্চতায় পৌঁছাচ্ছে।
শুধু স্বর্ণ নয়, একই সঙ্গে বেড়েছে রুপার দামও। ভরিতে ৩২৭ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেট রুপার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ হাজার ৯৮১ টাকা, যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। ২১ ক্যারেট রুপা বিক্রি হবে ৪ হাজার ৭৪৭ টাকায়, ১৮ ক্যারেট ৪ হাজার ৭১ টাকায় এবং সনাতন পদ্ধতির রুপা ৩ হাজার ৫৬ টাকায়।
এ নিয়ে চলতি বছরে দেশে মোট ৬৩ বার স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হয়েছে—যার মধ্যে ৪৫ বার দাম বেড়েছে এবং ১৮ বার কমেছে।