নওগাঁর মহাদেবপুরে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষরা প্রতি মৌসুমে একের পর এক খেতের ধান বিনষ্ট করছে। কোনবার জমিতে হাল দিয়ে বাড়ন্ত ধানগাছ বিনষ্ট করছে, কোনবার আগাছানাশক প্রয়োগ করে বিনষ্ট করছে ফলন্ত ধান। সবশেষ গত ২৮ অক্টোবর ধান পুড়ে দেয়া হয়। কিন্তু থানা পুলিশ গত এক মাসেও এব্যাপারে দাখিল করা মামলা এন্ট্রি করেনি। উপজেলার ভীমপুর ইউনিয়নের চক দাশড়া গ্রামের আশরাফুল ইসলামের ছেলে মামুনুর রশিদ অভিযোগ করেন যে, চক দাশড়া মৌজার ৮নং খতিয়ানের ৩৮৯নং দাগের ৫৪ শতক জমির মালিক ছিলেন মামুনুর রশিদের দাদা রফিক উদ্দিন। তার পিতা আশরাফুল ইসলাম পৈত্রিক সূত্রে ২৬ শতক ও ওয়ারিশদের কাছ থেকে বনি ইসরাইলের ক্রয়সূত্রে পাওয়া ৪৬ শতক সম্পত্তি দীর্ঘদিন থেকে ভোগ দখল করে আসছেন। প্রতিপক্ষরা অবৈধভাবে জমির দখল নিতে একের পর এক ওই জমিতে রোপিত ধান বিনষ্ট করছে। গত ২৮ অক্টোবর প্রতিপক্ষরা আগাছানাশক স্প্রে করে ওই জমিতে লাগানো ফলন্ত ধানগাছ পুড়ে দিলে মামুনুর রশিদ এব্যাপারে ওইগ্রামের সফির উদ্দিনের ছেলে আব্দুল হামিদ, আব্দুস সাত্তারের তিন ছেলে আতাউল ইসলাম, মিঠুন হোসেন ও আজিজুল ইসলাম, মৃত সফির উদ্দিনের তিন ছেলে আব্দুস সামাদ, শহীদুল ইসলাম ও আব্দুস সাত্তার, আব্দুস সামাদের ছেলে সৈকত ইসলাম ও আব্দুল হামিদের ছেলে আল আমিনের বিরুদ্ধে গত ৩ নভেম্বর মহাদেবপুর থানায় একটি এজাহার দাখিল করেন। এজাহারটি লিখে থানায় গেলে ডিউটি অফিসার এজাহারটি ওসি থানায় আসলে তাকে দিতে বলেন। মোবাইলফোনে মহাদেবপুর থানার ওসিকে জানালে তিনি এজাহারটি ডিউটি অফিসারকে দিতে বললে মামুনুর রশিদ সেটি ডিউটি অফিসারকে দিয়ে যান। কিন্তু তিন সপ্তাহেও এব্যাপারে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় গত ২২ নভেম্বর পুনরায় থানায় গিয়ে আগের এজাহারের কোন হদিস পাওয়া যায়নি। ওসি আবার একটি এজাহার দাখিল করতে বললে মামুনুর রশিদ একই বিষয়ে আবার লিখিত এজাহার দাখিল করেন। কিন্তু এরিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মামলাটি থানায় এন্ট্রি হয়নি। জানতে চাইলে আগের লিখিত এজাহার খুঁজে না পাবার কথা স্বীকার করে মহাদেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাশমত আলী জানান, পরের এজাহার বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নওহাটা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর আলীকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। মোবাইলফোনে শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) বিকেলে এসআই আকবর আলী জানান, মামলাটি থানায় রেকর্ড হয়নি। তবে তিনি এলাকায় গিয়েছিলেন, কিন্তু বিবাদীদের কাউকে পাননি। উল্লেখ্য, গত মৌসুমেও প্রতিপক্ষরা এই জমিতে রোপিত চিনি আতপ ধান গত ৩১ আগষ্ট আগাছানাশক প্রয়োগ করে পুড়ে দেয়। মামুনুর রশিদ এব্যাপারে নওগাঁর ৩নং জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতে মামলা দায়ের করলে বিচারক মহাদেবপুর থানা পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দেন। তদন্ত করে নওহাটা ফাড়ি পুলিশ এসআই জিয়াউর রহমান এব্যাপারে আসামীদের বিরুদ্ধে রিপোর্ট দেন। মামলাটি এখনও চলমান রয়েছে। কিন্তু থানা পুলিশ এবারের ধান পোড়ার ব্যাপারে মামলা গ্রহণে দীর্ঘ সূত্রিতায় বাদি ন্যায় বিচার পাবেন কিনা তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। বিষয়টি জানতে চাইলে মোবাইলফোনে আসামীদের পক্ষে মামলা পরিচালনা কারি মিঠুন হোসেন জানান, জমিজমা নিয়ে আদালতে মামলা রয়েছে। তবে এবারে ধান বাদি মামুনুর রশিদেরা লাগিয়েছেন বলে জানান। কে ধান পুড়িয়েছে তা তিনি জানেন না বলে জানান।