কাউখালীর দুই শহীদ বুদ্ধিজীবী

ড. আবুল খায়ের ও ইয়াকুব মিয়াকে ভুলে গেছে নতুন প্রজন্ম

এফএনএস (মোঃ রফিকুল ইসলাম রফিক; কাউখালী, পিরোজপুর) : | প্রকাশ: ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫, ০১:১৫ পিএম
ড. আবুল খায়ের ও ইয়াকুব মিয়াকে ভুলে গেছে নতুন প্রজন্ম

১৪ই ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। বাঙালী জাতির ইতিহাসে দিনটি স্মরণীয় ও বেদনাদায়ক। ১৯৭১ সালের ১৪ই ডিসেম্বরের এ দিনে বাঙালির বিজয় নিশ্চিত জেনে পাকিস্থানের সেনাবাহিনী ও স্বাধীনতা বিরোধী চক্র দেশের প্রথিতযশা ও খ্যাতনামা বুদ্ধিজীবীদের নির্বিচারে হত্যা করে বাংলাদেশকে মেধাশূন্য করার চেষ্টা চালায়। এ বর্বর হত্যাকাণ্ডটি বিশ্বব্যাপী ঘৃনিত। ১৪ই ডিসেম্বর বাঙ্গালী জাতি গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করছেন জাতির শ্রেষ্ঠ ওইসব শহীদ সন্তানদের। স্বাধীনতার ৪৮ বছর পরেও জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের পরিবার পাননি তাদের প্রাপ্ত সম্মান। পিরোজপুরের কাউখালীর এই দুই কৃত্তি সন্তানের অবদানের কথা ভুলে গেছে নতুন প্রজন্ম।

বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার দুই শহীদ বুদ্ধিজীবি শহীদ ড. আবুল খায়ের এবং শহীদ মুহাম্মদ ইয়াকুব মিয়াকে স্মরণ করছে গভীর শ্রদ্ধাভরে কাউখালী বাসী। গোটা জাতি যাদের নিয়ে গর্ব করে সে রকম দুই কৃতি সন্তানের জন্ম পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলায়।

কাউখালী উপজেলার কাঠালিয়া গ্রামে শহীদ ড. আবুল খায়ের জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের রিডার ছিলেন। তিনি ছিলেন বাঙালি জাতির স্বাধীনতার একজন প্রবক্তা। ১৯৭১ সালের ১৪ই ডিসেম্বর পাকিস্তানি সেনাবাহিনী তাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোয়াটার থেকে ধরে নিয়ে রায়ের বাজারে (বধ্যভূমি) অত্যচারের পর হত্যা করে। ৪ জানুয়ারি তার লাশ উদ্ধার করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে সমাহিত করা হয়।

আরেক বুদ্ধিজীবী মুহাম্মদ ইয়াকুব মিয়া কাউখালী উপজেলার পার সাতুরিয়া গ্রামের মিয়া বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি শেরে বাংলা এ.কে.এম ফজলুল হক গভর্নর থাকাকালে তার একান্ত সচিব ছিলেন। ১৫ই ডিসেম্বর পাকিস্তানি দোষরেরা তাকে ঢাকার তোপখানার বাসা থেকে ধরে নিয়ে যায়। পরে তাকে মোহাম্মদপুরের সাত গম্বুজ মসজিদের নিকট কাটাসুরের ইট খোলার নিকট হত্যা করে। ১৯ ডিসেম্বর তার লাশ পাওয়া গেলে তাকে আজিমপুরে সমাহিত করা হয়।

কাউখালীর উপজেলা বিশিষ্ট শিক্ষা অনুরাগী ও রাজনীতিবিদ এইচ,এম দ্বীন মোহাম্মদ বলেন, এই দুই মহান ও স্বাধীনতা প্রেমী সন্তানদের জন্য কাউখালী বাসী গর্বিত। তবে দেশের নতুন প্রজন্ম তাদেরকে চিনে না। বিশেষ করে আবুল খায়েরের জন্য এখানে নেই কোন স্মৃতি স্তম্ভ। আমারা এ সময় তাদের জন্য শুধু মাত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটু দায়সাড়া ভাবে স্ট্যাটাস দিয়ে আমাদের দায়িত্ব সেরে ফেলি। বিষয়টি স্বাধীনতা প্রেমী মানুষ হিসাবে খুবই লজ্জাদায়ক বলে মনে করি।

কাউখালীর বিশিষ্ট সমাজ সেবক ও প্রবীন ব্যক্তিত্ব মো. আব্দুল লতিফ খসরু জানান, দেশের এমন সব মহান ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নতুন প্রজন্মের জানার জন্য সরকারি উদ্যোগে পাঠাগার বা স্মৃতি জাদুঘর নির্মাণ প্রয়োজন।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে