রাজধানীর জিগাতলায় একটি ছাত্রী হোস্টেল থেকে জাতীয় নাগরিক পার্টির নেত্রী জান্নাত আরা রুমির ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তিনি এনসিপির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের ধানমন্ডি থানা সমন্বয় কমিটির যুগ্ম সমন্বয়কারী ছিলেন। ঘটনার পর থেকেই আত্মহত্যা নাকি হত্যাকাণ্ড, তা নিয়ে নানা প্রশ্ন ও আলোচনা তৈরি হয়েছে।
জিগাতলা পুরান কাঁচাবাজার রোডের পাশে জান্নাতী ছাত্রী হোস্টেলের একটি কক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) সকালে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। পুলিশ জানায়, খবর পেয়ে তারা হোস্টেলে গিয়ে কক্ষের দরজা ভেঙে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচানো অবস্থায় জান্নাত আরা রুমিকে ঝুলতে দেখে। পরে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
হাজারীবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান বলেন, “প্রাথমিকভাবে এটি আত্মহত্যা বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে নিশ্চিত হতে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ও অন্যান্য বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” পুলিশ আরও জানায়, পারিবারিক ও ব্যক্তিগত কারণে তিনি মানসিক চাপে ছিলেন বলে প্রাথমিক তথ্য পাওয়া গেছে।
নিহত জান্নাত আরা রুমি নওগাঁ জেলার পত্নীতলা উপজেলার নাজিরপুর এলাকার বাসিন্দা। তাঁর বাবা মো. জাকির হোসেন এবং মা নুরজাহান বেগম। তিনি আগে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নার্স হিসেবে কাজ করতেন। পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হন এবং এরপর এনসিপির রাজনীতিতে সক্রিয় হন।
নিহতের সাবেক স্বামী মো. বিপ্লব সরকার জানান, তাঁদের মধ্যে চার থেকে পাঁচ মাস আগে বিচ্ছেদ হয়। তিনি বলেন, “ডিভোর্সের পর কয়েক মাস ধরে আমাদের কোনো যোগাযোগ ছিল না। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে পুলিশ ফোন করে তার মৃত্যুর খবর জানায়।”
এদিকে ঘটনাটি ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনেও প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্যসচিব তারেক রেজা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে দাবি করেন, জান্নাত আরা রুমি আত্মহত্যা করেননি, বরং এটি হত্যাকাণ্ড। তিনি পোস্টে উল্লেখ করেন, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের জেরে তিনি হুমকি ও সাইবার বুলিংয়ের শিকার ছিলেন।
তবে পুলিশ বলছে, সব দিক বিবেচনায় নিয়ে তদন্ত চলছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাবে।