প্রায় বিশ বছর ধরে ঝুলে থাকা ২৭তম বিসিএসের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অবশেষে গতি এলো। ২০০৫ সালের ২৭তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেও দীর্ঘদিন নিয়োগবঞ্চিত থাকা ৬৭৩ জন প্রার্থীকে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের বিভিন্ন ক্যাডারে নিয়োগ দিয়েছে সরকার।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নব নিয়োগ শাখা থেকে বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) এ সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করা হয়। এতে জানানো হয়, নিয়োগপ্রাপ্তদের জাতীয় বেতনস্কেল ২০১৫ অনুযায়ী ২২ হাজার থেকে ৫৩ হাজার ৬০ টাকা বেতনক্রমে চাকরিতে নেওয়া হয়েছে। আগামী বৃহস্পতিবার (১ জানুয়ারি) নিজ নিজ ক্যাডার নিয়ন্ত্রণকারী মন্ত্রণালয় বা দপ্তরে যোগদান করতে বলা হয়েছে।
সূত্র অনুযায়ী, ২৭তম বিসিএস পরীক্ষা ২০০৫ সালের মাধ্যমে প্রথম পর্যায়ে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের সুপারিশে এই নিয়োগ কার্যকর করা হয়েছে। দীর্ঘদিন আইনি ও প্রশাসনিক জটিলতার কারণে এ ব্যাচের একটি বড় অংশ নিয়োগের বাইরে ছিল। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি প্রশাসনে এক ধরনের অচলাবস্থারও সৃষ্টি করেছিল।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, নিয়োগপ্রাপ্তদের বাংলাদেশ লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র বা সরকার নির্ধারিত প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ নিতে হবে। এই প্রশিক্ষণ শেষ হলে সংশ্লিষ্ট চাকরির ধরন অনুযায়ী পেশাগত ও বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। পাশাপাশি তাঁদের দুই বছর শিক্ষানবিশকাল সম্পন্ন করতে হবে, যা প্রয়োজনে সরকার আরও বাড়াতে পারবে।
শর্ত অনুযায়ী, শিক্ষানবিশকাল সন্তোষজনকভাবে শেষ করা, প্রশিক্ষণ সফলভাবে সম্পন্ন করা এবং বিভাগীয় পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরেই স্থায়ীভাবে চাকরিতে বহাল করা হবে। প্রজ্ঞাপনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, শিক্ষানবিশকাল বা তার পরবর্তী তিন বছরের মধ্যে কেউ চাকরি থেকে ইস্তফা দিলে প্রশিক্ষণ ও বেতন বাবদ সরকারের ব্যয় করা অর্থ ফেরত দিতে হবে।
নিয়োগপ্রাপ্তদের জ্যেষ্ঠতা সংরক্ষণের বিষয়টিও প্রজ্ঞাপনে স্পষ্ট করা হয়েছে। ব্যাচের প্রথম নিয়োগ প্রজ্ঞাপনের তারিখ থেকেই তাঁদের ধারণাগত জ্যেষ্ঠতা কার্যকর হবে। তবে এর জন্য কোনো বকেয়া আর্থিক সুবিধা পাওয়া যাবে না।
দীর্ঘ অপেক্ষার পর এই নিয়োগের খবরে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। অনেকেই এটিকে প্রশাসনিক জট খুলে যাওয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হিসেবে দেখছেন।