দীর্ঘ নির্বাসন শেষে দেশে ফেরার পথে বড় একটি ধাপ এগোলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বাংলাদেশে ফিরতে তিনি ট্রাভেল পাসের জন্য আবেদন করেছেন। লন্ডনে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশনে এই আবেদন জমা দেওয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত হয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।
যুক্তরাজ্যের একটি সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তারেক রহমানের ট্রাভেল পাসের আবেদন হাইকমিশনে জমা পড়েছে। রাজনৈতিক কারণে দীর্ঘদিন লন্ডনে অবস্থান করা তারেক রহমানের বাংলাদেশি পাসপোর্টের মেয়াদ আগেই শেষ হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সুযোগ থাকলেও তিনি পাসপোর্ট নবায়নের আবেদন করেননি। ফলে দেশে ফিরতে হলে তাঁকে একবারের জন্য ট্রাভেল পাস নিতে হচ্ছে।
এই বিষয়ে এর আগে সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করেছিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। গত মাসে ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছিলেন, “তারেক রহমান দেশে আসতে চাইলে কোনো বিধিনিষেধ নেই, এক দিনে ট্রাভেল পাস দেওয়া সম্ভব।” তিনি আরও জানান, পাসপোর্ট না থাকলে বা মেয়াদোত্তীর্ণ হলে ওয়ান টাইম ট্রাভেল পাস দিয়ে দেশে ফেরার সুযোগ দেওয়া হয় এবং এতে জটিলতার কিছু নেই।
বিএনপি সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, ১৭ বছরের বেশি সময় পর তারেক রহমান যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফিরছেন। তিনি বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে বেলা ১১টা ৫৫ মিনিটে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবেন।
তারেক রহমানের এই প্রত্যাবর্তনকে ঘিরে দলীয় অঙ্গনে ব্যাপক প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “আমরা চাই, তাঁর এই ঐতিহাসিক প্রত্যাবর্তন যেন বিগত ৫৫ বছরের সব দৃষ্টান্তকে ছাড়িয়ে যায় এবং আগামী ৫৫ বছরেও যেন এমন ঘটনা আর না ঘটে। সে লক্ষ্যেই সব আয়োজন করা হচ্ছে।”
পারিবারিক কারণও এই সফরে গুরুত্ব পাচ্ছে। তারেক রহমানের মা ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তিনি শনিবার (২৩ নভেম্বর) থেকে সেখানে ভর্তি। দেশে ফিরেই তারেক রহমান মাকে দেখতে হাসপাতালে যেতে পারেন বলে জানানো হয়েছে। সে কারণেই বিমানবন্দর ও এভারকেয়ার হাসপাতালের কাছাকাছি সংবর্ধনার জন্য উপযুক্ত স্থান খোঁজা হচ্ছে।
২০০৭ সালে এক এগারোর রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর গ্রেপ্তার হন তারেক রহমান। ২০০৮ সালে কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে চিকিৎসার জন্য সপরিবার যুক্তরাজ্যে যান। এরপর থেকে তিনি সেখানেই অবস্থান করছিলেন। দীর্ঘ এই সময়ে দেশে ফেরা নিয়ে নানা আলোচনা থাকলেও এবার সেটি বাস্তব রূপ নিতে যাচ্ছে।