দেশের শীর্ষ দুই গণমাধ্যম প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার কার্যালয়ে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি এই ঘটনাকে পরিকল্পিত সন্ত্রাস হিসেবে উল্লেখ করে অবিলম্বে দোষীদের বিচারের দাবি জানান এবং সব পক্ষকে দায়িত্বশীল আচরণের আহ্বান জানান।
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) ভোরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশ একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ, যেখানে প্রতিটি নাগরিকের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব। শহিদ ওসমান হাদির মৃত্যুতে যখন জাতি শোকাহত, তখনই গণমাধ্যম ও সাংবাদিকদের ওপর এমন হামলা অত্যন্ত নিন্দনীয়।
পোস্টে তিনি লেখেন, “শহিদ হাদির মৃত্যুতে শোকার্ত জাতি যখন সৃষ্টিকর্তার কাছে তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করছে, তখন ডেইলি স্টার ও প্রথম আলোসহ বিভিন্ন গণমাধ্যম কার্যালয় এবং বরেণ্য সাংবাদিক নুরুল কবিরসহ আরও অনেকের ওপর হীন হামলা সংঘটিত হলো।”
এই পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে যারা সহিংসতা ছড়াতে চায়, তাদের দেশের শত্রু হিসেবে আখ্যা দেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, “দেশের সংকটময় মুহূর্তকে কাজে লাগানোর জন্য যারা অপেক্ষা করে, তারা এই দেশের শত্রু। দুঃখভারাক্রান্ত এই সময়কে ধ্বংসাত্মক কাজে রূপান্তর করা হয়েছে। আমি এই সন্ত্রাসের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।”
মির্জা ফখরুল আরও উল্লেখ করেন, ওসমান হাদি একজন নির্বাচনী প্রার্থী ছিলেন এবং সাধারণ মানুষের কাছে গিয়ে প্রচারণা চালিয়েছিলেন। তার ভাষায়, “নির্বাচন হবে। বাংলাদেশে একটি গণতান্ত্রিক জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে ইনশাআল্লাহ। হাদির আততায়ী এবং প্রতিটি মব সন্ত্রাসের বিচার করতে হবে।”
সরকারের দায়িত্বের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, স্বৈরাচারী আওয়ামী সরকারের পতনের পর সরকারের প্রথম ও প্রধান দায়িত্ব জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করা এবং একটি গণতান্ত্রিক, স্থিতিশীল ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গড়ে তোলা। এজন্য সব রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তিকে দায়িত্বশীলতার সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি। একই সঙ্গে অনতিবিলম্বে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও জানান বিএনপি মহাসচিব।
উল্লেখ্য, জুলাই অভ্যুত্থানের অন্যতম সংগঠক ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি গত ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর বিজয়নগরে গণসংযোগকালে গুলিবিদ্ধ হন। দীর্ঘ চিকিৎসার পর বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে, যার মধ্যে গণমাধ্যম কার্যালয়ে হামলার ঘটনাও ঘটে।