চাঁদপুরে ছাত্র-জনতার আয়োজনে ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরীফ ওসমান হাদির গায়েবানা জানাজা ও হত্যার প্রতিবাদে কফিন মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (২০ ডিসেম্বর) দুপুর আড়াইটার দিকে চাঁদপুর সরকারি কলেজ মাঠে হাজারো ছাত্র-জনতার অংশগ্রহণে গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা ঘিরে পুরো কলেজ এলাকা শোকাবহ পরিবেশে পরিণত হয়। রাজধানীর সংসদ ভবন চত্বরের সাথে সঙ্গতি রেখে চাঁদপুর সরকারি কলেজ প্রাঙ্গণে গায়েবানা জানাজা শেষে শহরে বের করা হয় এই বিক্ষোভ মিছিল। কফিন মিছিলটি শহরের বিভিন্ন সড়ক পদক্ষিণ করে।
জানাজার নামাজের পূর্বে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর শহর জামায়াতে ইসলামীর আমীর অ্যাড. মো. শাহাজান খান, চাঁদপুর জেলা এনসিপির সমন্বয়ক মাহবুব আলম এবং গণঅধিকার পরিষদের চাঁদপুর জেলা কমিটির সেক্রেটারি মো. জাকির হোসেন।
জানাজার সময় শরীফ ওসমান হাদির প্রতীকী কফিন সামনে রেখে শপথ বাক্য পাঠ করান স্থানীয় ইনকিলাব মঞ্চের নেতা নিয়াজ মোর্শেদ। শপথে হাদির আদর্শ বাস্তবায়ন এবং ন্যায়ের পক্ষে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়। কফিন মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা বিভিন্ন স্লোগানের মাধ্যমে হামলার প্রতিবাদ জানান এবং বিচার দাবি করেন।
বক্তারা বলেন, ওসমান হাদি চলে গেছেন কিন্তু জীবন দিয়ে তিনি সাহসের ইতিহাসে তার অবদান রেখে গেছে। হাদির জীবন ছিল সংগ্রাম, সাহস ও দায়বদ্ধতার এক অনন্য দলিল।
তারা ওসমান হাদির খুনিদের দ্রুত খুঁজে বের করে আইনের আওতায় এনে ফাঁসির দাবি জানান।এ সময় এনসিপি, গণঅধিকার পরিষদ ও উপস্থিত ছাত্র জনতা ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেন। মিছিলে দেওয়া স্লোগানগুলোর মধ্যে ছিল ‘তুমি কে, আমি কে, হাদি, হাদি’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে’, ‘আওয়ামী লীগের দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘চব্বিশের হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’, ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা, ঢাকা’ এবং ‘ইনকিলাব জিন্দাবাদ’। হাদি ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন।
গত ১২ ডিসেম্বর দুপুর সোয়া ২টার দিকে রাজধানীর বিজয়নগর পানির ট্যাংকির সামনে রিকশায় করে যাওয়ার সময় ওসমান হাদির উপর আক্রমণ হয়। ওই সময় মোটরসাইকেলে করে এসে দুজন তাকে খুব কাছ থেকে গুলি করে পালিয়ে যায়।
পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় দ্রুত তাকে ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। একপর্যায়ে পরিবারের ইচ্ছায় তাকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। এরপর সেখানে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) তার চিকিৎসা চলে।
পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য সোমবার এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে হাদিকে সিঙ্গাপুর নিয়ে যাওয়া হয়েছিল; সেখানেই বৃহস্পতিবার তার মৃত্যু হয়।