আশুগঞ্জের স্টীল রাইস সাইলো নির্মাণ কাজ শেষ হয়নি

এফএনএস (মো: আক্তারুজ্জামান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া) : : | প্রকাশ: ১ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০৪:২০ এএম : | আপডেট: ৫ জানুয়ারী, ২০২৫, ১২:৩৫ পিএম
আশুগঞ্জের স্টীল রাইস সাইলো নির্মাণ কাজ শেষ হয়নি

অবশেষে আগামী বছরের জুনের মধ্যেই শেষ হচ্ছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে নির্মাণাধীন আধুনিক স্টিল রাইস সাইলো‘র নির্মাণ কাজ। বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে প্রায় সাড়ে ৫‘শ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি নির্মিত হচ্ছে। খাদ্য বিভাগের তত্ত্বাবধানে লক্ষাধিক টন ধারন ক্ষমতা এ বিশেষ প্রকল্পটির অবকাঠামো নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান “তমা কনট্রাকশন”। সংশ্লিষ্টদের দাবী, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে দেশে খাদ্য সংরক্ষনে যুগান্তকারি অধ্যায়ের সুচনা হবে।  খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশের খাদ্য মজুদ পর্যাপ্ত ও মজবুত করতে দেশের কয়েকটি স্থানে প্রায় ৩৬‘শ কোটি (৩৫,৬৪৯ কোটি ৪ লক্ষ) টাকার ব্যয়ে ৮টি আধুনিক স্টীল রাইস সাইলো নির্মাণের উদ্যোগ নেয় খাদ্যমন্ত্রণালয়। অর্ন্তভুক্ত এ প্রকল্পের আওতায় প্রায় সাড়ে ৫‘শ কোটি (৫৪০ কোটি ৪৫ লক্ষ ৪৯ হাজার ২৬৪ টাকা) ব্যয়ে আশুগঞ্জের পুরাতন কংক্রীট সাইলোর পাশে মেঘনা নদীর তীরে নির্মিত হচ্ছে আধুনিক স্টিল রাইস সাইলো।  জানা গেছে, প্রকল্পের অবকাঠামো নির্মাণে দেশীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান “তমা কনট্রাকশন” এর সাথে (০৪/০৪/২০১৮) চুক্তি করে খাদ্য মন্ত্রণালয়। একই বছর প্রকল্পের নির্মাণ কাজও শুরু হয় এবং এপ্রিল/২০২১ এর মধ্যে হস্তান্তরের কথা ছিল। কিন্ত করোনা মহামারি, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাথে বিদেশী প্রতিষ্ঠানের টানাপোড়ন ও সরকারের পট পরিবর্তনের কারনে প্রকল্পের মেয়াদ ৪ দফা বৃদ্ধি করা হয়। সর্বশেষ মেয়াদে ডিসেম্বর/২০২৪ এর মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা থাকলেও ৩০ নভেম্বর/২০২৪ পর্যন্ত কাজ হয়েছে মাত্র ৭৮-৮০ ভাগ। জুলাই-আগষ্ট পট পরিবর্তনের পর আশুগঞ্জ সাইলৈার কাজ বন্ধ কওে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজ ফেলে পালিয়ে যান। জুলাই-আগষ্ট পট পরিবর্তনের পর এই প্রথম খাদ্যমন্ত্রনালযের মহাপরিচালক প্রকৌশলী আব্দুল খালেক নিামানাধীন আশুগঞ্জ স্টীল সাইলো পরিদশর্েেন আসেন।পরিদর্শনে এসে তিনি কেন বারবার কাজ শেষ করতে সময় নেওয়া হচ্ছে তা জানতে চান এবং ক্ষোভ প্রকাশ করে আগামী জুনের মধ্যে কাজ শেষ করতে নির্দেশ দেন। যেখানে ২০২১ সালের জুনে কাজ শেষ করার কথা ছিল।এসময় তিনি প্রকল্প কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে জানান, প্রায় ৮০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। আগামী বছরের জুনের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা জানান তিনি। তিনি আরো বলেন, এটি চালু হলে খাদ্য সংরক্ষন আরো মজবুত ও আধুনিক হবে। স্টিল সাইলেঅর একটি সুত্র জানায়,৩১শে ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানে ও গাফিলতির কারণে বারবার সময় নেওয়ার পরও কাজ শেষ করতে পারছে না ঠিাকাদারী প্রতিষ্ঠান।এ নিয়ে অন্তত চারবার সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে। আধুনিক এ রাইস সাইলোর বৈশিষ্ট হলো এটি ৩টি স্টীল সাইলো বিনে গঠিত এবং প্রতিটি বিনের ধারণ ক্ষমতা ৩৫ হাজার টন। এতে কীটনাশক ছাড়া স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রের মাধ্যমে চালের আদ্রতা ও তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রন করে চালের গুণগত মান বজায় রেখে ৩ বছর চাল সংরক্ষন সম্ভব হবে। চাল প্যাকেট ও বস্তাবন্দি করতে এতে রয়েছে ৫০০ টন স্পিডের বেল্ট কনভেয়িং ও চেইন কনভেয়িং সিস্টেম-যা প্রতি ঘন্টায় স্বয়ংক্রিয় মেশিনে ৫০ কেজির ৮০০ এবং ৫ কেজির ৯৬০০ প্যাকেট তৈরি করতে সক্ষম। নদীপথে চাল পরিবহনে ঘন্টায় ১২০ টন স্পিডে লোডিং কার্যক্রম সম্ভব হবে। এ প্রকল্পের আওতায় চাল রক্ষনের পাশাপাশি এখনে নির্মিত হচ্ছে অফিস স্টাফ ডরমেটরি বিল্ডিং, অফিসার্স ডরমেটরি, ইন্সপেকশন বাংলো, আনসার ব্যারাক, এমটি গানী বেগ গোডাউন, স্ক্রেপ গোডাউন, ওয়ার্কসপ কাম স্টোর, বৈদুতিক সাবস্টেশন, ট্রাক পার্কিং এরিয়া ও অভ্যন্তরীণ সড়ক ইত্যাদি। এদিকে নানা সমস্যায় কাজের ধীরগতি ও ব্যাহতের কথা স্বীকার করে তমা কনট্রাকশনের প্রকল্প ব্যবস্থাপক মোঃ খুর্শিদ আলম জানান, বিদ্যমান সমস্যার সমাধান শেষে কাজ শুরু হয়েছে। তিনিও আগামী বছরের জুনের মধ্যেই নির্মাণ কাজ শেষ করার কথা জানান।

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW
আপনার জেলার সংবাদ পড়তে