বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলায় নিহত জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও পোড়াহাটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম হিরণ ও তাঁর গাড়ি চালক আক্তার হোসেনের মৃত্যুদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে বৃহস্পতিবার উপজেলার আড়ুয়াকান্দি ও ভূপতিপুর গ্রামের কবরস্থান থেকে দুজনের মৃতদেহ উত্তোলন করা হয়।সকালে উপজেলার আড়ুয়াকান্দি ও ভুপতিপুর গ্রামের পারিবারিক কবরস্থান থেকে এ দুজনের লাশ দাফনের ৫ মাস ১০ দিন পর উত্তোলন করা হল।এ ঘটনায় দুই পরিবারের পক্ষ থেকে ১৭ ও ২০ নভেম্বর আদালতে অজ্ঞাত ২০০ থেকে ৩০০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়। অভিযোগটি আমলে নিয়ে সদর থানায় এজাহার গ্রহনের জন্য আদেশ দেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোছা রুমানা আফরোজ। থানায় এজাহার গ্রহনের পর মামলাটি তদন্তের জন্য আদালতের নিদের্শে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর উপস্থিতিতে লাশ উত্তোলন করা হয়। মামলাটি তদন্ত করে ঘটনার সাথে জড়িতদের বিচারের দাবি জানিয়েছে স্বজনরা। জনতার ওপর নির্বিচারে গুলিবর্ষণের জেরে গণপিটুনী ও অগ্নিকান্ডে নিহত আওয়ামীলীগ নেতা শহিদুল ইসলাম হিরণ ও তার গাড়ি চালক আক্তার হোসেনের লাশ উত্তোলন করা হয়েছে।গত বছরের ৫ আগষ্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় জনতা তার বাড়ি ঘেরাও করলে শহিদুল ইসলাম হিরণ জনতার উপর নির্বিচারে গুলিবর্ষন করেন। এতে অনমশত ২৫ জন গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন।এ ঘটনায় ক্ষুদ্ধ হয়ে শহিদুল ইসলাম হিরন শহরের স্টেডিয়াম পাড়ার বাসা ঘেরাও করে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে হিরন ঘরের মধ্যে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান। প্রচন্ড জনরোষে তার গাড়ি চালক আক্তারকেও কুপিয়ে হত্যা করে জনতা।হিরণকে হত্যার পর ৫ আগষ্ট সন্ধ্যার দিকে তার লাশ শহরের পায়রা চত্বরে ঝুলিয়ে রাখা হয়। এই ভিডিও বিশ্ব্যাবপী ভাইরাল হলে। ফলে চারদিকে আতংক ছড়িয়ে পড়ে।এ ঘটনায় শহিদুল ইসলাম হিরণের ভাতিজা জিয়াউল আলম গত বছরের ২০ নভেম্বর ও ড্রাইভার আক্তার হোসেনের ভাই মুক্তার হোসেন ১৭ নভেম্বর বাদী হয়ে পৃথক দুইটি মামলা করেন। আদালতের নির্দেশ পেয়ে ডাবল হত্যা মামলা রেকর্ড করে, যার মামলা নং ৩৭। শহিদুল ইসলাম হিরণের ভাতিজা ও মামলার বাদী জিয়াউল আলম বলেন, আদালতে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে থানায় মামলা রুজু হয়েছে। আমরা এই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের শাস্তির দাবি করছি। এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমরান জাকারিয়া জানান, আদালতের নির্দেশে মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে। হত্যা মামলার ঘটনায় কারা জড়িত রয়েছে তা পুলিশ তদন্ত করছে। ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, নিহত গাড়ি চালক আক্তারের ভাই মুক্তার হোসেন ও হিরণের ভাতিজা জিয়াউল আলম বাদি হয়ে আদালতে মামলা করেন। আদালতের নির্দেশনায় দু’জনের লাশ উত্তোলন করা হয় ও এই মামলায় অজ্ঞাত ২/৩শ’ জনকে আসামি করা হয়েছে।