অপরাধ দমনে সরকারকে আরও কঠোর হতে হবে

এফএনএস : | প্রকাশ: ২০ জানুয়ারী, ২০২৫, ০৭:১০ পিএম
অপরাধ দমনে সরকারকে আরও কঠোর হতে হবে

সাধারণ মানুষ তাদের জান মালের নিরাপত্তাজনিত কারণে অসহায় পড়েছে। বিশেষ করে শহরাঞ্চলের আপামর জনসাধারণ নিরাপত্তাহীন পরিস্থিতিতে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা ও শঙ্কিত অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অনেকটা দেখেও দেখেনা, শুনেও শুনে না বলে সাধারণ মানুষের অভিযোগ রয়েছে। অপরাধ বাড়ছে, অপরাধী সর্বদাই সক্রিয় রয়েছে। যাদের দায়িত্ব অপরাধ প্রতিহত করা, অপরাধীদের দমন করা, তারা তা যথাযথভাবে পালন করতে পারছে না। অপরাধ প্রবণতা এতই বৃদ্ধি পাচ্ছে যে, কে কখন কীভাবে আক্রান্ত হবে, কার সম্পত্তি কে দখল করবে, কে কখন লাঞ্ছিত হবে, কে কখন অপহরণ হবে এ আশঙ্কায় সাধারণ মানুষের উদ্বেগের শেষ নেই। অপরাধীদের এতটা বেপরোয়া হয়ে যাওয়ার কথা নয়। দেখা যায়, বারবার পুলিশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে অপরাধীরা তাদের কাজ হাসিল করে পার পাচ্ছে। পুলিশ তাদের খোঁজও পাচ্ছে না। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার সুযোগে পেশাদার অপরাধী যেভাবে সক্রিয় হয়ে উঠেছে, তাতে আসরেই উদ্বিগ্নের বিষয়। তুলে নিয়ে মুক্তিপণ আদায়, চুরি-ডাকাতি, ব্যবসায়ীদের হুমকি প্রদান ও চাঁদার জন্য প্রকাশ্যে কোপানোর মতো ঘটনা ঘটতে দেখেছি। ছিনতাইয়ের মতো অপরাধ তো নগরবাসীর জন্য মূর্তিমান আতঙ্কের নাম হয়ে উঠেছে। সবচেয়ে উৎকণ্ঠার বিষয় হচ্ছে, খোদ পুলিশই বলছে, এসব অপরাধে পেশাদার অপরাধীদের সঙ্গে শীর্ষ সন্ত্রাসীদের জড়িত থাকার তথ্য তাঁরা পেয়েছেন। দেশের সার্বিক উন্নতি ও সমৃদ্ধির পূর্বশর্ত হচ্ছে, আইন-শৃঙ্খলাজনিত স্বাভাবিক পরিবেশ ও সুষ্ঠু পরিস্থিতি। অথচ সেরূপ পরিস্থিতির নিশ্চয়তার জন্য প্রচেষ্টা কি চালানো হচ্ছে? যদি হয়ে থাকে তবে ফলাফল কোথায় ? দেশের জনগণকে সকল শক্তির-সকল ক্ষমতার উৎস বলা হলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই অস্ত্রধারী, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজদের আশ্রয় দেওয়া হয়।আমাদের মনে রাখতে হবে, ঐক্যবদ্ধ সামাজিক প্রতিরোধ আর শাস্তির কঠোর বিধানই সন্ত্রাসের একমাত্র জবাব। একথা অবশ্য আমরা মাঝে মধ্যে বলে থাকলেও কার্যক্ষেত্র তার প্রতিফলন ঘটাতে পারি না। ন্যায় ও নীতির অনুসরণে আইনের প্রতি আস্থাশীল জনসাধারণ সহযোগী শক্তিতে পরিণত হয়। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হলে এবং ব্যবস্থা গ্রহণে সময়ক্ষেপণ করা হলে প্রতিকার পাওয়া যায় না। অপরাধীরা আরও দুঃসাহসী ও শক্তিশালী হয়। পরিস্থিতি আয়ত্তের বাইরে চলে যায়। তাই উপযুক্ত সময়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণই বুদ্ধিমত্তার পরিচায়ক। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ও অপরাধ দমনে পুলিশ পুরোপুরি সক্ষম না হয়ে ওঠার সুযোগই নিচ্ছে অপরাধীরা। এ ছাড়া অভ্যুত্থানের সময় ঢাকাসহ সারা দেশে পুলিশের খোয়া যাওয়া অস্ত্র ও গোলাবারুদের বড় অংশ এখনো উদ্ধার করা যায়নি। নাগরিকের নিরাপত্তাবিধানের প্রশ্নে এটাও একটা বড় শঙ্কার কারণ। যেকোনো মূল্যেই পুলিশকে নিষ্ক্রিয় অবস্থান থেকে সক্রিয় হতে হবে।

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW