তেঁতুলিয়ায় বোতলজাত সোয়াবিন তেলের কৃত্রিম সংকট

এফএনএস (এম এ বাসেত; তেঁতুলিয়া, পঞ্চগড়) : : | প্রকাশ: ২২ জানুয়ারী, ২০২৫, ০৩:০১ পিএম
তেঁতুলিয়ায় বোতলজাত সোয়াবিন তেলের কৃত্রিম সংকট

আসন্ন রমজানের দেড় মাস আগেই পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার হাট-বাজারে বোতলজাত সোয়াবিন তেলের কৃত্রিম সংকট। জানা যায় এস আলম গ্রুপ, সিটি গ্রুপ, মেঘনা গ্রুপ দেশে ভোজ্য জাত আমদানী করে অন্যান্য কোম্পানীর নিকট বিক্রি করে। বড় এ তিনটি কোম্পানীর কাছে কেনা সোয়াবিন তীর, ফ্রেস, রূপচাঁদা, পুষ্টি একাধিক কোম্পানীর নামে ডিলারের মাধ্যমে খুচরা বাজারে মূদিখানার দোকানে বিক্রি হয়। সাধারণ গ্রাহকরা মূদিখানার দোকানে  এসব কোম্পানীর  ২৫০ -৫০০ গ্রাম, ১ লিটার ও ২ লিটার বোতলজাত সোয়াবিন তেল পাচ্ছে না। বোতল জাত তেলের দামে খোলা সোয়াবিন তেল  কিনতে হয়। নিত্যদিনের অন্যতম ভোজ্য তেল সংকট থাকায় সাধারণ গ্রাহকরা হয়রানির শিকার হচ্ছে। মুদিখানা দোকানের খুচরা ব্যবসায়ীরদের অভিযোগ,  তীর, ফ্রেস, রূপচাঁদা, পুষ্টি এ চারটি বোতল জাত সোয়াবিন তেল সরবরাহ কোম্পানীর সেলম্যান ও ডিলার যোগসাজসে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করছে। তাদের চাহিদা অনুযায়ী বোতল জাত সোয়াবিল তেল সরবারহ দিচ্ছে না। কোন কোম্পানী বোতলজাত সোয়াবিন তেল দিলেও উহার বিপরীতে প্যাকেটজাত আটা, লবন, আতব চাল, মশার কয়েল, সাবান, ডাল এসব পণ্য নিতে বাধ্য করছে। অন্যথায় খুচরা ওই দোকানদারকে শুধুমাত্র সোয়াবিন তেল দিচ্ছে না। ব্যবসায়ীরা বলেন, এক লিটার সোয়াবিন তেল বোতল জাত মোড়কে ১৭৫ টাকা এবং কেনেলা তীর ১৯০ টাকা কোম্পানীর মূল্য নির্ধারন করা। উক্ত তেল দোকানীদের কাছে পাইকারী দরে কেনা পড়ে ১৭৩ থেকে ১৭৪ টাকা। ফলে ব্যবসায়ীরা মোটা অংকের মূলধন খাটিয়ে লাভের পরিমাণ থাকে ১ থেকে ২ টাকা। তেঁতুলিয়া চৌরাস্তা বাজারে মূদিখানা ব্যবসায়ী মৃদুল বলেন, খোলা সোয়াবিন তেলের দামও ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে দাম উঠা নামা করে। একদিন আগেও যে তেলের পাইকারি দাম ১৬৭টি টাকা লিটার পরের দিন সেই তেল কিনতে হয় ১৭২ টাকা। ফলে ১৬৭ টাকা কেনা তেল খুচরা ক্রেতাদের কাছে ১৭৫ টাকা বিক্রি করেছি। কিন্তু পাইকারি ১৭২ টাকা লিটার কেনা তেল কত বিক্রি এনিয়ে হিমসীম খাচ্ছি।  তেঁতুলিয়া উপজেলার এস কে এস এন্টারপ্রাইজ এর স্বত্তাধিকারী ও ডিলার সাজিদ বলেন,  বর্তমান বাজারে খুচরা সোয়াবিন তেল সরকারিভাবে ৮ টাকা দাম বাড়ানোর পরও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। দেশে তেল আমদানীকারক বড় কোম্পানীগুলোর কারসাজি রমজানে খোলা সোয়াবিন ২০০ টাকা লিটারে বিক্রির জন্য কৃত্রিম সংকট তৈরি করছে। যে কারণে ডিলারদের চাহিদা মত প্রতিমাসে বোতল জাত সোয়াবিন তেল সরবরাহ করছে না। অন্তবর্তীকালীন সরকার এই সিন্ডিকেট ভাংতে না পারলে সহজে ভোজ্য  তেলের সমস্যা মিটবে না। শালবাহান বাজারের ফাবিহা ট্রেডার্স  এর স্বত্তাধিকারী  তীর সোয়াবিন কোম্পানীর ডিলার ফরিদ বলেন, আমার ডিলারশীপ নেওয়ার প্রায় ৪ মাস হয় এপর্যন্ত কোন বোতল জাত সোয়াবিন তেল পাইনি। কিন্তু প্রতি মাসে গোটা উপজেলায় ২০ লাখ টাকার বোতল জাত সোয়াবিন তেল চাহিদা আছে। পুষ্টি সোয়াবিন তেল কোম্পানীর ডিলার জাহিরুল স্টোরের স্বত্তাধিকারী সামজিদ বলেন, আমার প্রতিমাসে চাহিদা প্রায় ৪৫ লাখ টাকার। কিন্তু খোলা সোয়াবিন তেলের দাম বেশি। বোতল জাত তেলের দাম বাড়ানোর জন্য কোম্পানী সরকারের কাছে আবেদন করেছে। যে কারণে আমাদের কাছে ডিও (অর্ডার) টাকাও জমা নিচ্ছে না। পঞ্চগড় জেলা রূপচাঁদা কোম্পানীর সেল অফিসার (এসও) রাসেল বলেন, পঞ্চগড় জেলায় প্রতি মাসে বোতলজাত সোয়াবিন তেলের চাহিদা রয়েছে ৭০-৮০ লাখ টাকার। কিন্তু কোম্পানী ডিলারের চাহিদা মত সরবরাহ করছে না। কেন পারছে না ছোট চাকুরিজীবি হিসেবে তা জানা নেই। খুচরা ব্যবসায়ীদের মতে, সরকার আসন্ন রমজান মাস আসার পূর্বেই অন্যতম ভোজ্য তেল সোয়াবিনের দাম নির্ধারন সহ বাজারে সরবরাহ নিশ্চিত করতে না পারলে তেল সংকট তীব্র হবে। তাই সরকারের এ বিষয়ে বাজার মনিটরিং সহ নজরদারী বাড়াতে হবে।

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW
আপনার জেলার সংবাদ পড়তে