উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে আওয়ামী লীগ নেতা রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদক রাজশাহীর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক বোরহান উদ্দিন বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করার বিষয়টি বুধবার (২২ জানুয়ারি) নিশ্চিত হওয়া গেছে। মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) বিকেলে দায়েরকৃত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, তাহেরপুর পৌরসভার মেয়র থাকাকালীন ঠিকাদার এবং প্রকৌশলীদের যোগসাজশে আবুল কালাম আজাদ একটি উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। অভিযোগে বলা হয়েছে, পরিবেশ ও জলবায়ু তহবিলের আওতায় ১৩ কোটি টাকার একটি বিশেষ প্রকল্পের অধীনে ৪ কোটি ৯৮ লাখ টাকায় তাহেরপুর পৌরসভায় ৪১৫ মিটার বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজ ছিল। কিন্তু তদন্তে দেখা যায়, প্রকল্পে ৪০৫ মিটার কাজ সম্পন্ন হয়, কিন্তু পুরো ৪১৫ মিটারের বিল পরিশোধ করা হয়। এই অতিরিক্ত ৩৩ লাখ ৬৫ হাজার ৬৬১ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এছাড়াও তার ভ্যাট ও ট্যাক্স আত্মসাতের পরিমাণ ৫৫ লাখ ৬ হাজার ৭৮২ টাকা। মামলায় আবুল কালাম আজাদ ছাড়াও আরও তিনজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তারা হলেন, ঠিকাদার খালেদ মোহাম্মদ সেলিম, তাহেরপুর পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল কাদের ও উপসহকারী প্রকৌশলী জাহিদুল হক। দুদক আরও জানায়, মেয়র থাকাকালীন আদায় করা ভ্যাট ও ট্যাক্সের ৫৫ লাখ ৬ হাজার ৭৮২ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেছেন আবুল কালাম আজাদ। কৃষি ও পরিবেশ অডিট অধিদপ্তরের তদন্তে এই অর্থ আত্মসাতের তথ্য প্রমাণিত হয়। আওয়ামী লীগের টিকিটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়া আবুল কালাম আজাদ বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। মামলার কপি ইতোমধ্যে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে পাঠানো হয়েছে এবং শীঘ্রই অভিযোগপত্র দাখিল করা হবে বলে দুদক জানিয়েছে। রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসন থেকে আবুল কালাম আজাদ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের টিকিটে এমপি নির্বাচিত হন। এর আগে তিনি তাহেরপুর পৌরসভার তিনবারের মেয়র ছিলেন। আর এমপি হওয়ার পর আবুল কালাম আজাদ তাহেরপুর পৌরর উপ-নির্বাচনে তার স্ত্রী খন্দকার শায়লা পারভিনকে মেয়র করেছিলেন। এলাকায় নিজের প্রভাব ও প্রতিপত্তির বিষয়টি প্রতিপক্ষদের জানান দিতেই মূলত এমন ঘটনার জন্ম দিয়েছিলেন বলে অভিমত দলীয় নেতা-কর্মীদের।