সৈয়দপুর রেলওয়ে ওয়ার্কশপ মালামাল ক্রয় না করেই টাকা ভাগাভাগির অভিযোগ

এফএনএস (ওবায়দুল ইসলাম; সৈয়দপুর, নীলফামারী) : : | প্রকাশ: ২৪ জানুয়ারী, ২০২৫, ০৩:১১ পিএম : | আপডেট: ২৪ জানুয়ারী, ২০২৫, ০৩:১১ পিএম
সৈয়দপুর রেলওয়ে ওয়ার্কশপ মালামাল ক্রয় না করেই টাকা ভাগাভাগির অভিযোগ

দেশের সর্ববৃহৎ রেলওয়ে কারখানা সৈয়দপুরে অবস্থিত। সচল এ কারখানাটি আজ ধ্বংসের মুল কারণ হল চুরি। দিনে রাতে চুরির কারণে কারখানাটি এখন অচলের পথে। আর ওই চুরির সাথে জড়িত কতিপয় রেল শ্রমিক নেতা,কর্মকর্তা, নিরাপত্তা বাহিনী এবং চোরচক্র।

 সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা শ্রমিকলীগের কতিপয় নেতা তাদের বাহিনী দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করতো এ কারখানাটি। ক্ষমতার পট পরিবর্তনে ওই বাহিনীসহ নেতারা গা ঢাকা দেয়। ফলে কারখানার নিয়ন্ত্রণ চলে যায় নতুন একটি সিন্ডিকেটের হাতে। নতুন এই সিন্ডিকেট কারখানার শীর্ষ কর্মকর্তা ডি.এসসহ কতিপয় দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা কর্মচারীর যোগসাজোসে কারবানায় এল,টি.এম এর ১০ কোটি টাকার যন্ত্রাংশ সরবরাহর কাজসহ সকল টেন্ডার এবং সরবরাহ কাজ নিয়ন্ত্রণ করছে। এল,টি,এম এর ১০ কোটি টাকা বরাদ্দের যন্ত্রাংশ সরবরাহের কাজ ১০% কমিশনের বিনিময়ে কারখানার ডি.এস মোস্তফা জাকির হাসান ও আইওডব্লিউ শরিফুল ইসলাম ভিসেন্ট নামের এক ঠিকাদারকে দিয়েছেন সাড়ে চার কোটি টাকার কাজ। করিম ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস ও কোর ইন্টারন্যাশনাল এর প্রোপাইটার শাহিন হোসেনকে দেয় সাড়ে তিন কোটি টাকার কাজ। লিজা এন্টারপ্রাইজ নামীয় এক নতুন ঠিকাদারকে দিয়েছে ৭০ লক্ষ টাকার কাজ। এছাড়া কারখানার নিয়মিত রেগুলার এবং রোলিং ঠিকাদারদের কাজ না দিয়ে কমিশন বাণিজ্য করেছে ডিএস মোস্তফা জাকির হাসানসহ তার সিন্ডিকেট। এইভাবে সিন্ডিকেট ঠিকাদারকে কাজ দিয়ে বিল উত্তোলন করে মাল সরবরাহ না করেই মোটা অংকের টাকা ভাগ করে নেন। ফলে প্রতিটি শপেই কাঁচামাল সংকটে কাজ বন্ধের পথে। 

সৈয়দপুরের বৃহত্তম রেল কারবানায় পূর্বের ন্যায় মাল সরবরাহ না করেই ঠিকাদার কর্তৃক বিল উত্তোলন যেন রেওয়াজে পরিনত হয়েছে। এ ব্যাপারে একাধিক ঠিকাদার সরাসরি অভিযোগ করেন ১০% দিয়েছি কাজ নেওয়ার সময় বিল একাউন্টস থেকে পাশ হয়েছে। একাউন্টস কর্মকর্তার কাজ থেকে ডি.এস মোস্তফা জাকির হাসান চেক নিজ জিম্মায় নিয়ে আরো অতিরিক্ত ৩০% কমিশন দাবী করেন। 

এব্যাপারে বঞ্চিত ঠিকাদারদের অভিযোগের ভিত্তিতে আরো জানা যায় যে বিপুল পরিমান কাজের মাল সরবরাহ না করেই বিল নিয়ে গেছেন তার পছন্দের ঠিকাদার। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট শপগুলোর ইনচার্জসহ অন্যান্য দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদেরও প্রাপ্ত কমিশনের ভাগ দিয়ে অগ্রীম মালামাল বুঝে পাওয়ার ক্লিয়ারেন্স দেওয়া হয়েছে। নতুন যোগদানকারী ওয়ার্কস ম্যানেজারকে আড়ালে রেখে প্রডাকশন ম্যানেজারকে দিয়ে এই অপকর্ম সম্পাদন করা হয়েছে। এটি নিয়ে শোরগোল শুরু হলে ঢাকা রেল ভবন থেকে একটি তদন্ত টিম সৈয়দপুর কারখানায় এলে আগত তদন্ত কর্মকর্তাকে একইভাবে ম্যানেজ করা হয়। আর চুরির তথ্য প্রকাশকারী ও অন্যায়ের বিরোধিতাকারী অফিস ক্লার্ক সাইফুল ইসলামের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে তাকে পাকশীতে শাস্তিমূলক বদলী করা হয়। 

এ ব্যাপারে ডি.এস মোস্তফা জাকির হাসানকে মোবাইল করা হলে তিনি ফোন রিসিপ করেননি। ফলে তার মন্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। রেলের জি.এম এর মুঠোফোনে কল দিয়ে তাকেও পাওয়া যায়নি। সম্প্রতি বেশ কিছু ঠিকাদার তার কার্যালয় ঘেরাও করে এই সমস্ত অনিয়মের ব্যাখ্যা চান। কিন্তু ডিএস তাদের প্রশ্নের কোন উত্তর না দিয়ে সটকে পড়েন।

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW
আপনার জেলার সংবাদ পড়তে