বাংলাদেশের নাগরিকদের অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে উদ্যোগী হয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের ওপর জোর দিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, ‘দেশের জনগণের সিদ্ধান্তই নির্ধারণ করবে আগামী নির্বাচন কীভাবে পরিচালিত হবে।’
বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) প্রতিষ্ঠাতা ক্লাউস শোয়াবের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। বৃহস্পতিবার সুইজারল্যান্ডের দাভোসে অনুষ্ঠিত ডব্লিউইএফ-এর বার্ষিক সম্মেলনের ফাঁকে তাঁদের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
ড. ইউনূস বলেন, ‘গত ১৬ বছরে বাংলাদেশে যারা নতুন ভোটার হয়েছেন, তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ হয়নি, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। সরকার এ বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখছে।’
অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ কেমন নির্বাচন চায়, সেটি না জেনে সরকার নির্বাচন আয়োজন করবে না। জনগণের চাহিদা অনুযায়ী আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’ তিনি আরও বলেন, ‘যদি মানুষ দ্রুত সংস্কার চায়, তাহলে আমরা এ বছরের শেষ নাগাদ নির্বাচন আয়োজন করব। আর যদি দীর্ঘমেয়াদি সংস্কারের প্রয়োজন হয়, তাহলে আরও ছয় মাস সময় লাগবে।’
বর্তমান প্রজন্মকে মানব ইতিহাসের সবচেয়ে শক্তিশালী প্রজন্ম আখ্যায়িত করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘তরুণরা পুরনো বাংলাদেশে ফিরে যেতে চায় না, তারা একটি নতুন বাংলাদেশ গড়তে চায়।’ এই লক্ষ্যে তরুণদের মতামত ও রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি ‘ঐকমত্য কমিশন’ গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘সরকারের সংস্কার কর্মসূচির অন্যতম অংশ হিসেবে ‘জুলাই সনদ’ প্রস্তুত করা হচ্ছে, যা দেশের রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজের মতামতের ভিত্তিতে প্রণয়ন করা হবে।’
দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতির বিষয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ইতিবাচক ধারায় ফিরিয়ে আনতে কাজ করছি। ইতোমধ্যে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ও ব্যাংকিং ব্যবস্থায় গতি ফিরে এসেছে।’
বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ক্লাউস শোয়াব ড. ইউনূসের বক্তব্যে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন এবং বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার উদ্যোগকে স্বাগত জানান।