মাদারীপুরে মানবপাচারকারীকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ

মাদারীপুরে  কামাল মাতুব্বর(৫৫) নামে এক মানব পাচারকারীকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করছে ভুক্তভোগী পরিবার।শুক্রবার এ তথ্য নিশ্চিত করছে পুলিশ। 

মানবপাচার ও প্রতিরোধ দমন আইনের মামলায় বৃহস্পতিবার মাদারীপুরে লোকজন নিয়ে কোর্টে হাজিরা দিতে আসলে একাধিক ভুক্তভোগী  পরিবার তাকে গণপিটুনি দিয়ে মাদারীপুর সদর থানায় সোপর্দ  করেন।

জানাগেছে, মাদারীপুরের শতাধিক যুবককে উন্নত জীবন আর ভাগ্য বদলের স্বপ্ন দেখিয়ে লিবিয়া দিয়ে অবৈধপথে ইউরোপের দেশ ইতালি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে রাজীব মাতুব্বর,নিজাম,তাইফুল ও তাহের,মুজাম হাওলাদর,শাহাবুদ্দিন,তারেক মাতুব্বরসহ শতাধিক যুবককের পরিবারের কাছ থেকে প্রথমে ১৩-১৪ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় মানবপাচাকারী চক্রের মুলহোতা কামাল মাতুব্বর। এরপরে লিবিয়া পৌঁছালে  মাফিয়াদের হাতে বিক্রি করেন মানবপাচারকারী কামাল মাতুব্বর। লিবিয়ার মাফিয়ারা বন্দী শালায় আটকে রেখে যুবকদের  উপর চালায় অমানুষিক নির্যাতন। মুক্তিপণের টাকা আদায় করতে পরিবারকে নির্যাতনের ভিডিও দেখিয়ে ২০ -৪০ লাখ হাতিয়ে নেয় মাফিয়া ও মানবপাচারচক্র। প্রতিটি পরিবার ভিটেমাটি সহায় সম্বল বিক্রি দালালের হাতে টাকা তুলে দিয়ে হন নিঃস্ব। টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পরে লিবিয়ার বন্দীশালা থেকে কেউ কেউ ফিরে আসতে পারলেও অনেকে এখনও নিখোঁজ। নিখোঁজ ও বন্দীদের ফিরে পেতে মানবপাচাকারী কামাল মাতুব্বরের বাড়িতে ভিড় করেন ভুক্তভোগী পারিবার ও স্বজনরা।কিন্তু টাকা হাতিয়ে নিয়ে গাঁ ঢাকা দেন কামাল মাতুব্বর। বৃহস্পতিবার  মাদারীপুর জজ কোর্টে লোকজন নিয়ে মানবপাচারকারী কামাল মাতুব্বর হাজিরা দিতে গেলে একাধিক ভুক্তভোগীরা তাকে ঘিরে ধরে। একপর্যায়ে গণপিটুনি দিয়ে আটক  করে মাদারীপুর  সদর থানায় সোপর্দ করেন। কামাল মাতুব্বর ডাসার উপজেলার পূর্ব কমলাপুর গ্রামের মৃত কাদের মাতুব্বরের ছেলে।

ভুক্তভোগী রাজিব মাতুব্বর বলেন,কামাল মাতুব্বর লিবিয়া পাঠিয়ে আমাকে একটা অন্ধকার ঘরে এক মাস আটকে রেখে নির্যাতন করে। আমার পরিবার থেকে ২০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়।মুক্তিপণের টাকা দিয়ে কোনমতে বেঁচে ফিরে এসেছি। আমি মানবপাচারকারী দালাল কামাল মাতুব্বর এর শাস্তি চাই।

মাদারীপুরের সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন,আসামী কামাল মাতুব্বর জামিনে থাকায় মামলার আয়ু ও বাদীর উপস্থিতিতে আদালতের রি-কল দেখে তাকে পরিবারের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে। তাৎক্ষণিক পরিস্থিতির কারণে  কিছু সময় আমাদের জিম্মায় ছিল।