সৈয়দপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নজরদারির অভাবে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার চাড়ালকাঁটা নদীর বালু লুট হচ্ছে। সকাল থেকে মধ্য রাত পর্যন্ত বাহাগিলি,চাঁদখানা,পুটিমারী ও নিতাই ইউনিয়নের ১৫ থেকে ২০টি পয়েন্টের বালু লুট করছে বালুখেকো সিন্ডিকেট। ফলে সরকার লক্ষ লক্ষ টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে। জানা যায়,গত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে সারাদেশের নদী- নালা,খাল-বিল খনন করা হয়। খননকৃত নদীর বালু নদীর দুই তীরে স্তূপ করে রাখা হয়। গত ২০২৩ সালে চাঁড়ালকাঁটা নদীর এসব বালু নিলামে বিক্রির জন্য টেন্ডার আহ্বান করা হয়। তৎকালীন আওয়ামী সরকারের জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতারা লোক দেখানো টেন্ডারের মাধ্যমে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্তাদের ম্যানেজ করে বালুখেকো সিন্ডিকেটটি নিগোশিয়েট করে নামমাত্র অর্থের বিনিময়ে এসব বালুর লট নিজেদের নামে নিয়ে কোটি কোটি টাকার বালু বিক্রি করে রাতারাতি ধনকুবের হয়ে যায়। গত সোম ও মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা যায়,উপজেলার চাঁদখানা ইউনিয়নের চাঁদখানা সারোভাষা ব্রিজের নিচ থেকে,বাহাগিলি ইউনিয়নের ষ্টীল ব্রিজের উত্তর ও দক্ষিণ দিকে,বাহাগিলি ডাংপাড়া,বাহাগিলি ময়নাকুড়ি সিনহা কোম্পানির সামনে,বাহাগিলি ঘোপাপাড়া,কালুরঘাট ব্রিজের পূর্ব দিক, পাগলাটারী,নিতাই ইউনিয়নের মৌলভীর হাট, নিতাই পানিয়াল পুকুর, নিতাই মুশরুত বেলতলি, পুটিমারী ইউনিয়নের চৌধুরীর বাজার,কালিকাপুর ময়দানপাড়া,শালটিবাড়ি, খোকারবাজারসহ ২০টি পয়েন্টে নদী খননের রক্ষিত বালু দিনে-রাতে লুট করেছে বালুখেকো সিন্ডিকেট। ২০টি পয়েন্টে নদী খননের রক্ষিত বালু সিন্ডিকেটটি মাহিন্দ্র-ট্রাক্টর ও ড্রাম ট্রাকে করে নিয়ে যাচ্ছে। পুটিমারী ইউনিয়নের কালিকাপুর গ্রামের বাসিন্দা হযরত আলী বলেন, গত বছর আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নামমাত্র মূল্যে নীলফামারী সদরের রোকনুজ্জামান নামে একজন ৮ নম্বর লটটির বালু পরিবহনের অনুমতি পায়। সরকারিভাবে অনুমতি পাওয়ার কারণে ওই নেতা কৃষিজমি ও গ্রামের রাস্তাঘাত ভেঙ্গে চুরমার করে বালুগুলো পরিবহন করে। তার বালু পরিবহনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় গ্রামবাসী ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেয়েছিল। বর্তমানে আর একটি সিন্ডিকেট ক্ষমতার দাপটে ওই বালু পরিবহন করছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেক কৃষক জানান, বাহাগিলি ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ নেতা জুগল চন্দ্র গোপনে নদীর চরসহ ওই স্তূপকৃত বালু লুট করে নিয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানালে তারা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। কিশোরগঞ্জ উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত সৈয়দপুর পাউবোর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সাব-ডিভিশন-২-এর মোঃ মাহমুদুল হাসান বলেন, বর্তমানে তিনটি লটের সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে। অবশিষ্ট লটের মেয়ায় শেষ হয়েছে। মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়া লটগুলোর বালু লুট করে নিয়ে যাচ্ছে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন,লুট হয়ে গেলে আমাদের করার কিছুই নেই। যা করার উপজেলা প্রশাসন করবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌসুমী হকের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, তিনটি লটের সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে। বাকি লটগুলোর বালু লুট করা রোধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হবে।