ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কান্ডে

তালন্দ কলেজে অভিভাবক সদস্য নির্বাচন নিয়ে উত্তেজনা, পুলিশ মোতায়েন

মো: ইমরান হোসাইন; তানোর, রাজশাহী : | প্রকাশ: ২৮ জানুয়ারী, ২০২৫, ১২:৫৭ পিএম
তালন্দ কলেজে অভিভাবক সদস্য নির্বাচন নিয়ে উত্তেজনা, পুলিশ মোতায়েন

রাজশাহীর তানোর উপজেলার তালন্দ ললিত মোহন ডিগ্রি কলেজের অভিভাবক সদস্য নির্বাচন নিয়ে দুটি পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। যেকোন মূহুর্তে সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসি। এহেন পরিস্থিতিতে আজ ২৮ জানুয়ারী মঙ্গলবার সকালে থানাপুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। এমন প্রহসনের নির্বাচন বন্ধে ২৭ জানুয়ারী কলেজের অভিভাবক সদস্য আব্দুস সালাম, আকরাম, জালাল ও সেলিম স্বাক্ষরিত লিখিত অভিযোগ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর দাখিল করা হয়। যার প্রেক্ষিতে ইউএনও অফিস থেকে ফোন করে কলেজের নির্বাচন বন্ধে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে বলা হয়। এরপরও পুলিশি পাহারায় মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে নির্বাচন শুরু করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, তানোর পৌর এলাকার তালন্দ ললিত মোহন ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ বিষ্ণুপদ সরকার ২০২২ সালের ২৯ ডিসেম্বর চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করেন। পরে ওই বছরের ৩০ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের দোসর বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ড. মো. জসিম উদ্দীন মৃধা চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগ পান। পরে তিনি কৌশলে ছয় মাস থেকে এক বছরের জন্য নিয়োগপত্র তৈরিও করে নেন। তার মেয়াদ এক বছর পূর্ণ হয়ে দুই বছর এক মাস অতিবাহিত হলেও অবৈধভাবে বহাল তবিয়তে তিনি। কলেজের অভিভাবক সদস্য আব্দুস সালাম জানান, অত্র কলেজের নতুন পরিচালনা পর্ষদ গঠনের নিমিত্তে অভিভাবক শ্রেণির সদস্য নির্বাচনের জন্য চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারী তফসিল মোতাবেক ভোটগ্রহণের দিন ধার্য ছিল। কিন্তু ওইদিন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। তবে, গোপনে বিধিবহির্ভূতভাবে নিজের পছন্দ মতো সদস্য নিয়ে অভিভাবক কমিটি গঠনে নির্বাচন প্রক্রিয়া শুধু করেছেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ। এমন প্রহসনের নির্বাচন বন্ধে ২৭ জানুয়ারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করা হয়। যার প্রেক্ষিতে ইউএনও অফিস থেকে ফোন করে নির্বাচন বন্ধের জন্য বলা হয়। কিন্তু মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে নির্বাচন শুরু করা হয়। ফলে অভিভাবক সদস্যদের দুটি পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে পরিস্থিতি বেগতিক লক্ষ্য করে থানাপুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। স্থানীয় অভিভাবক সদস্য আব্দুস সালাম, আকরাম, জালাল, সেলিম ও শিক্ষানুরাগী জিল্লুর রহমানসহ উপজেলা শ্রমিক দলের সদস্য সচিব শফিকুল ইসলাম বলেন, অত্র কলেজে অধ্যক্ষ ও দুই কর্মচারী নিয়োগে গত ২০২৩ সালের ১৩ ডিসেম্বর পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। ওই বিজ্ঞপ্তিতে সভাপতি বরাবর প্রার্থীদের আবেদন করতে বলা হয়। যার প্রেক্ষিতে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদ থেকে পদত্যাগ না করে কৌশলগত ভাবে স্বপদে থেকে অধ্যক্ষ পদে আবেদন করেন আওয়ামী লীগের দোসর নামে পরিচিতি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ। যা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম বিধিবহির্ভূত। অভিভাবক সদস্যদের অভিযোগ, আওয়ামী লীগের দোসর ও সুবিধাভোগী কিছু ব্যক্তিকে ম্যানেজ করে কলেজ ফান্ডের অর্ধকোটি টাকা তসরুফ করছেন বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ। এছাড়া জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন সম্পূর্ণ অবৈধ ও বিধিবহির্ভূত। ফলে ওই কলেজের শিক্ষার মান নিয়ে উদ্বিগ্ন অভিভাবক মহল। অবিলম্বে তাকে পদ থেকে অপসারণের জন্য দাবি জানান তারা। এবিষয়ে অত্র কলেজের এডহক কমিটির বর্তমান সভাপতি ও সাবেক অধ্যক্ষ সেলিম উদ্দিন কবিরাজ বলেন, গভার্নিং বডির অভিভাবক সদস্য নির্বাচন স্থগিত করা হয়। কিন্তু আজ কিভাবে নির্বাচন হচ্ছে এ ব্যাপারে তিনি অবগত নন বলে এড়িয়ে গেছেন। এব্যাপারে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ড. মো. জসিম উদ্দীন মৃধা বলেন, নিয়ম মতে গভার্নিং বডির অভিভাবক সদস্য নির্বাচন হচ্ছে। এর আগে শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচন হয়ে গেছে। কিন্তু স্থগিত হওয়া নির্বাচন কিভাবে হতে পারে এমন প্রশ্নে সভাপতি সাহেব ভাল বলতে পারবেন বলে এড়িয়ে গেছেন তিনি। ই/তা

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW
আপনার জেলার সংবাদ পড়তে