বৈষম্যবিরোধী ছাত্রজনতা আনন্দোলনের মিছিল থেকে ধরে নিয়ে আ,লীগের সন্ত্রাসীরা পিটিয়ে ও পাঁয়ের রগ কেটে হত্যা করেছে রাজমিস্ত্রী তোফাজ্জল হোসেনকে। ফ্যাসিষ্ট হাসিনার পতনের পর পুলিশ ও আ,য়ামী সন্ত্রাসীরা হত্যাকান্ডটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছে। নিহতের পরিবারকে মামলা না করার জন্য ভয় দেখিয়ে এলাকা ছাড়া করেছেন তারা। হত্যাকান্ডের ৫ মাস পার হলেও এখনো মামলা করেনি কেউ। আস্ট বিল্পবে শহীদ তোফাজ্জল হোসেনের বাড়ী নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার পিজাহাতি গ্রামে। সে মৃত আব্দুর রশিদের ছেলে। তার মা হারেজা খাতুন ও ছোট ভাই মোফাজ্জল হোসেন (২১) কে নিয়ে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার নগর হাওলা গ্রামের কাশেমের বাড়ীতে ভাড়ায় থেকে রাজমিস্ত্রীর কাজ করতেন তোফাজ্জল হোসেন। নিহত হওয়ার পাচঁ মাস পার হলেও পরিবারের পক্ষ থেকে কোন মামলা করা হয়নি। ৪ আস্ট বিকাল ৫টার দিকে গাজীপুরের শ্রীপুর থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রজনতা আনন্দোলনের একটি মিছিল ভালুকার মাস্টারবাড়ী আসে। ওই মিছিলের সামনের অংশে ছিল রাজ মিস্ত্রী তোফাজ্জল হোসেন। আওয়ামী সন্ত্রাসীরা পিস্তল,বন্ধুক ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ওই মিছিলের উপর হামলা চালায়। এতে মিছিটি ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে। এসময় আ,লীগের সন্ত্রাসীরা রাজমিস্ত্রি তোফাজ্জল হোসেনকে ধরে নিয়ে পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করে। এতে ডান পায়েঁর রগ কেটে যায়। আনন্দোলনকারীরা তোফাজ্জল হোসেনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে মাস্টারবাড়ি পপুলার ক্লিনিকে নিয়ে গেলে ডাক্তার চিকিৎসা দেয়নি। রাত ৮টার দিকে তোফাজ্জল হোসেন কে একটি ভ্যানে করে শ্রীপুর উপজেলা সরকারী হাসপাতালে নেয়া হয়। হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন। ভালুকা ও শ্রীপুর থানার আ,লীগের সন্ত্রাসীরা বিনা ময়না তদন্তে লাশ নেয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু শ্রীপুর থানা পুলিশ লাশের সুরত হাল রির্পোট করে লাশ ময়না তদন্তের জন্য পাঠিয়ে দেন গাজীপুর শহীদ তাজুদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। ৫আগষ্ট ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে লাশ হস্থান্তর করেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ৬ আগষ্ট সকাল সাড়ে নয়টায় তোফাজ্জল হোসেনের গ্রামের বাড়ি কেন্দুয়া পারিবারিক কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয়। এদিকে হত্যাকান্ডটি ভিন্ন খাতের নেয়ার জন্য ফ্যাসিবাদরা নতুন চক্রান্ত শুরু করেন। আ,লীগের ওয়ার্ড নেতা রকিবুল হাসান নামে এক ব্যক্তি বাদি হয়ে সদ্য সাবেক এমপি এমএ ওয়াহেদকে প্রধান আসামী করে ১৩৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ২০০ জনের নামে আদালতে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগে বিএনপির কয়েকজন কর্মীকে আসামী করা হয়। পরে তোপের মুখে আদালত মামলা আমলে নেয়ার আগেই বাদী অভিযোগ প্রত্যার করে নেয়। তার কিছু দিন পর আ,লীগের আরেক নেতা আব্দুল মান্নান ও হৃদয় মাহমুদ জান্নাত বাদী হয়ে আরো একটি অভিযোগ আদালতে দায়ের করেন। পরে বাদী প্রত্যাহার করে নেন। ভুয়া অভিযোগ দেয়া ও প্রত্যাহার করে নেয়ার পর হত্যাকান্ডের ঘটনায় আর কোন হত্যা মামলার অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। নিহতের প্রায় ৬ মাস পেরিয়ে গেলেও মামলা করেনি কেউ। নিহতের মা হারেজা খাতুন জানান,হত্যার পর থেকে আ,লীগে লোকজন মামলা না করার জন্য আমাকে ভয় দেখান এবং আমার ছোট ছেলে মোফাজ্জল হোসেনকে হত্যার হুমকি দেন। তাই ভাড়া বাসা ছেড়ে দিয়ে গ্রামের বাড়ী কেন্দুয়া উপজেলার পিজাহাতী গ্রামে চলে আসি। প্রত্যক্ষদর্শী মাস্টারবাড়ীর জালাল উদ্দিন সরকার জানান, মাস্টারবাড়ি বাসস্ট্যান্ডে মিছিল থেকে ধরে নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় তোফাজ্জল হোসেনকে এ ভাবে হত্যার পর এখনো মামলা হয়নি। সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। শ্রীপুর থানার এসআই ওয়াহিদুজ্জামান জানান,৪ আগষ্ট রাত সাড়ে ৮টা দিকে শ্রীপুর সরকারী হাসপাতাল থেকে লাশ গ্রহন করে লাশের সুরত হাল রির্পোট করেন। লাশের গায়ে প্রচুর আঘাত ও ডান পায়ের রগ কাটা ছিল। বিনা ময়না তদন্তে লাশ নেয়ার জন্য মাস্টারবাড়ী থেকে অনেক তদবির আসে। এর মধ্যে চিনা জানা কয়েকজন প্রভাবশালী লোক রয়েছে। সে সুরতহাল রির্পোট করে লাশ ময়না তদন্তের জন্য শহীদ তাজুদ্দীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। তিনি নিহতের মা হারেজা খাতুনকে মামলা করার জন্য বলেছিলেন কিন্তু সে অস্বীকৃতি জানায়। ভালুকা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সামছুল হুদা খান জানান, এখনো থানায় কোন অভিযোগ করেনি কেউ। শুনেছি আদালতে দুইটি অভিযোগ দেয়া হয়েছিল এবং পরে প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে। নিহতের পরিবারে সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে। পুলিশ তদন্ত করছে। তদন্ত শেষ হলেই যে কোন মুহর্তে মামলা রুজু হতে পারে।