মিথ্যা ধান লুঠের মামলায় জড়িয়ে হয়রানি

এফএনএস (জি এম ইব্রাহীম; হাতিয়া, নোয়াখালী) : | প্রকাশ: ৩১ জানুয়ারী, ২০২৫, ০৭:২৭ পিএম
মিথ্যা ধান লুঠের মামলায় জড়িয়ে হয়রানি

ক্ষেতের ধান ক্ষেতেই পড়ে আছে। এখনো কাটা হয়নি। কিন্তু সেই ধান লুট করে নেওয়া হয়েছে বলে দেওয়া হয় লুটের মামলা। এই ঘটনায় মালিকের মোটর সাইকেল ভাংচুরসহ আরো কিছু অভিযোগ তুলে ধরা হয় মামলায়। মিথ্যা তথ্য দিয়ে করা এই মামলা তদন্ত করতে সরজেমিনে গিয়ে এই ঘটনার কোন অস্তিত্বও পায়নি পুলিশ কর্মকর্তা। এরপরও ঘটনা সত্য বলে দেওয়া হয় প্রতিবেদন। আদালত প্রতিবেদনটি গ্রহন করেন। এতে মিথ্যা এই মামলায় জড়িয়ে হয়রানি হচ্ছে নোয়াখালী হাতিয়ার বুড়িরচর ইউনিয়নের পশ্চিম বড়দেইল গ্রামের একটি পরিবার। শুক্রবার সকালে উপজেলা সদরে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা। এতে লেখিত বক্তব্যে মামলার দ্বিতীয় নং আসামী আজহার উদ্দিন বলেন, তাদের প্রতিবেশি বেলাল উদ্দিন নামে একজন গত ১৪ডিসেম্বর হাতিয়া জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা করেন। মামলায় তাকেসহ পরিবারের ৮ সদস্যকে আসামী করা হয়। মামলায় ঘটনা হিসাবে তাদের জমির পাশে বাদির জমি থেকে ধান কেটে নেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়। এতে বাধা দিলে বাদিকে সহ তার স্বজনদের  পিটিয়ে আহত করার কথা বলা হয়। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। তিনি আরো বলেণ, গত ২৪ ডিসেম্বর মামলাটি তদন্ত করতে ঘটনাস্থলে আসেন দায়িত্ব প্রাপ্ত সাগরিয়া পুলিশ ফাঁড়ির এস আই প্রভাত কর্মকার। তিনি ঘটনাস্থলে এসে এই ঘটনার কোন অস্তিত্ব খোঁজে পান নি। তিনি ধান ক্ষেতে গিয়ে লুট করা হয়েছে বলে অভিযোগ করা ধান গুলো ক্ষেতে দেখতে পান। এছাড়া তিনি প্রতিবেশিদের সাথে আলাপ করে ঘটনার সত্যতা পান নি। পরে তিনি ঘটনাটি মিথ্যা বলে প্রতিবেদন দিবেন বলে আসামীদের আশস্ত করেন। কিন্তু ২৯ ডিসেম্বর  এস আই প্রভাত কর্মকার আসামী ৮জনের মধ্যে ৬জনের নাম উল্লেখ করে ঘটনা সত্য বলে আদালতে প্রতিবেদন দেন। মিথ্যা প্রতিবেদন দেওয়ায় এস আই প্রভাত কর্মকারের বিরুদ্দে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানান তিনি। এই বিষয়ে সরেজমিনে ঘটনার সত্যতা খুঁজতে গিয়ে কথা হয় মামলার ৩নং সাক্ষী মো: সফিক ও ৪ নং সাক্ষী আব্দুল হকের সাথে।  বয়সের ভারে অনেকটা নুয়ে পড়েছেন আব্দুল হক। পশ্চিম বড়দেইল গ্রামের মামুন মার্কেটের একটি দোকানে দেখা হয় তার সাথে। কথা বলার এক পর্যায়ে তদন্ত প্রতিবেদনের সাথে  আদালতে দেওয়া তার জবানবন্দি পড়ে শুনালে এই বক্তব্য তার নয় বলে জানান তিনি। ধান লুটসহ এই ধরনের কোন ঘটনা তিনি দেখেননি বলে জানান। একই ভাবে গ্রামের একটি চায়ের দোকানে দেখা হয় মামলার  সাক্ষী মো: সফিকের সাথে। তাকেও জবানবন্দি পড়ে শুনালে তিনি এস আই প্রভাত কর্মকার তার সাথে কোন কথা বলেন নি বলে জানান। এই জবানবন্দি  এস আই নিজে মন গড়া লিখে দিয়েছেন  বলে জানান সফিক। ঘটনাস্থলের পাশে ছানা উল্যা মার্কেট। মার্কেটের চা দোকানের মালিক বেলাল জানান, যে মামলাটি করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। এই ধরেনর কোন ঘটনা ঘটেনি। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসেছিলেন। তিনি অনেকের সাথে কথা বলেছেন। কিন্তু কিভাবে মিথ্যা এই ঘটনা সত্য বলে প্রতিবেদন দিল বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে। এই বিষয়ে কথা হয় মামলার বাদি বেলাল উদ্দিনের সাথে। তিনি জানান, আসামীদের সাথে তার জমি নিয়ে বিরোধ অনেক দিন থেকে। একাধিকবার সংঘর্ষ হয়। কিন্তু যে ঘটনায় মামলা করা হয়েছে তা ঘটেছে কিনা প্রশ্ন করলে তিনি এড়িয়ে যান। এই ব্যাপারে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাগরিয়া পুলিশ ফাঁড়ির সাবেক উপ-পরিদর্শক  ও বর্তমান এপিবিএন উত্তরায় কর্মরত প্রভাত কর্মকার এর সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হয়। এতে মামলার প্রতিবেদনের বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি ফোন কেটে দেন।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে