ব্যবসায়ীরা অজুহাত পেলেই নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে দেন। চাল ও তেলের বাজারে অস্থিরতা অব্যাহত। সবজির দাম কমলেও চালের দাম বেড়েই চলেছে। কোনো পদক্ষেপই নিয়ন্ত্রণে আসছে না বাজার। বাড়ছে নিম্ন আয়ের মানুষের হাহাকার। দৈনিক মজুরি বা নির্দিষ্ট আয় দিয়ে সংসার চালানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। অনেকেই অনাহারে বা অর্ধাহারে দিন কাটাতে বাধ্য হচ্ছেন। চালের দাম এরই মধ্যে কেজিপ্রতি ৮ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে গেছে। শুল্ক কমানোর পরও সয়াবিন তেলের দাম লিটারপ্রতি ৮ টাকা বাড়ানো হয়েছে। তার পরও বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সংকট রয়েছে। বাড়ছে ডাল, ছোলাসহ অন্যান্য পণ্যের দামও। চিকন থেকে মোটা সব ধরনের চালের দাম বেড়েছে। এক মাস ধরেই সব জাতের চাল কেজিতে বেড়েছে ৮ থেকে ১২ টাকা। জানা গেছে বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি মিনিকেট চাল ৮০ টাকা, আটাইশ ৫৮-৬০ টাকা, মোটা স্বর্ণা ৫২-৫৬ টাকা, নাজিরশাইল ৭৬-৮২ টাকা এবং পোলাও চাল ১১৬-১১৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তেলের বাজারেও কৃত্রিম সংকট দেখা যাচ্ছে। বোতলজাত পাঁচ লিটারের তেল কিছুটা মিললেও এক ও দুই লিটারের বোতল পাওয়া যাচ্ছে না। খোলা সয়াবিন তেল কেজিতে ১৭৫-১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা বোতলজাত তেলের চেয়েও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। মাসখানেক আগের থেকে বাজারে চালের দাম বাড়তে শুরু করার পর, চালের শুল্ক কমানো ও আমদানি করার অনুমতি দেয়া হলেও সরকারের এসব উদ্যোগের কোন প্রভাব পরেনি বাজারে। অন্তর্বর্তী সরকারের নানামুখী উদ্যোগেও কমেনি চাঁদাবাজি। হাতবদলের পরে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছে চাঁদাবাজরা। যার প্রভাব পড়ছে বাজারগুলোতে। ফলে বাড়ছে চালের দাম। চালের দাম কমার বদলে উলটো বেড়ে যাচ্ছে। মিল পর্যায়ে তদারকি না বাড়ালে সামনে দাম আরও বাড়বে। ক্রমেই ভোজ্যতেলের দাম বৃদ্ধির ফলে চরম বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া জনগোষ্ঠী। ডলারের বিপরীতে টাকার দাম কমে যাওয়া কিংবা ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে আমদানিনির্ভর পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার কথা বলছেন ব্যবসায়ীরা। তাঁদের মতে, কিছুদিন আগেও ১১৭-১১৮ টাকায় যে ডলার কেনা যেত, এখন খোলাবাজারে সেই ডলার কিনতে ব্যয় হয় ১৩০ টাকা পর্যন্ত। আছে ব্যাংকঋণের বাড়তি সুদ। বেড়ে গেছে পরিবহণ খরচ। সব মিলিয়ে আমদানি পর্যায়েই খরচ অনেক বেশি হয়ে যায়। ব্যবসায়ীদের এই যুক্তি স্বীকার করেও বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এসব কারণে বাজারে যে পরিমাণ দাম বাড়ার কথা, বেড়েছে তার চেয়ে অনেক বেশি। সরকার খাদ্যপণ্যের সরবরাহ শৃঙ্খলে সুশাসন ফিরিয়ে আনতে সাহসী ও জরুরি পদক্ষেপ না নিলে মূল্যস্ফীতির হার কমানো কঠিন হবে।