নীলফামারী জেলার গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা শহর সৈয়দপুর। এখানে রয়েছে দেশের সর্ববৃহৎ রেলওয়ে কারখানা। রেলওয়ে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়। রেলওয়ে জেলা বেতার কেন্দ্র। বিমানবন্দর, সেনানিবাস,গ্যাস স্টেশন,বিদ্যুৎ কেন্দ্র, বিসিক শিল্প নগরী,উর্দুভাষি ২২টি ক্যাম্প,বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনা। প্রথম শ্রেণির পৌরসভা। তবে শহরের মধ্যে নেই কোন জলাশয়। রেলওয়ের যে জলাশয় ছিল তাও ভরাট করা হয়েছে। বেশ কয়েকটি মহল্লায় রেলওয়ের পানির হাউজ ছিল। বর্তমানে সে হাউজগুলো দখলদার বাহিনী ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণ করেছে। পৌরসভার যে পানির ট্যাংকি ছিল সেগুলোর অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়। সৈয়দপুর শহরের বিজ্ঞজনের অভিমত, হঠাৎ যদি এ শহরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। তাহলে তা নিয়ন্ত্রণ করতে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সকে হিমশিম খেতে হবে। কারণ ঘিঞ্জি শহর সৈয়দপুর। এ শহরের মধ্যে নেই কোন জলাশয়। আয়তনে ছোট শহর হলেও জনসংখ্যা প্রায় ৪ লাখ। এসব এলাকায় আগুন লাগলে তা দ্রুত পাশের প্রতিষ্ঠান বা বাসা বাড়িতে ছড়িয়ে পরবে। ফায়ার সার্ভিসের পানিবাহী দুইটি গাড়ি দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না। সৈয়দপুর ফায়ার সর্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার হামিদুর রহমান বলেন, আমাদের এখানে দুইটি গাড়ী রয়েছে। বড় গাড়িটির পানি ধারণ ক্ষমতা ৪ হাজার ৭ লিটার। আর ছোটটির ১ হাজার ৮শ লিটার। এ দুইটি গাড়ী দিয়েই অগ্নিকান্ডের ঘটনা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হয়। পানি শেষ হলেই আবার অফিসে গিয়ে গাড়ি ভর্তি করে পানি নিয়ে আসতে হয় ঘটনা স্থানে। এ সময়ের ব্যবধানে আগুনের ভয়াবহতা বেড়ে যাবে। ফলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও বেশি হবে। পানিবাহী আরো গাড়ী বৃদ্ধির প্রয়োজন রয়েছে বলে তিনি মনে করেন। তার সাথে শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে পানির সোর্স তৈরি করা বা 'ফায়ার হাইড্রেন্ট' বসানো জরুরী। এ বিষয়ে ব্যবসায়ি মোঃ সেকেন্দার আলি বলেন, একটি পরিকল্পিত শহরে আগুন নেভানোর জন্য বিভিন্ন রাস্তার ধারে ফায়ার হাইড্রেন্ট' বসানো থাকে। যা সরাসরি পানির পাম্পের সঙ্গে সংযোগ দেওয়া থাকে। এতে পানির অতিরিক্ত প্রেসার ভিলো থামারা সেখানে দেয়া হলে হাইড্রেন্টের বাল্ব খুলে পানি ছিটানোর জন্য পাইপ লাগাবে। আর সঙ্গে সঙ্গে স্বাভাবিকের থেকে বেশি গতিতে পানি বেরিয়ে আসবে। চাইলে পুরো সৈয়দপুর শহরজুড়ে ফায়ার হাইড্রেন্ট' বসানো সম্ভব। এর জন্য প্রয়োজন দায়িত্বশীলদের সদিচ্ছা। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের নীলফামারী জেলার দায়িত্বে থাকা ওয়্যার হাউজ ইন্সপেক্টর মো.নাজমুল হাসান বলেন,সৈয়দপুর শহরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার ক্ষেত্রে বড় গাড়ির পানি শেষ হলে সেটি পূরণ করে পুনরায় আনার সময়ে বড় ক্ষয়-ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। এক্ষেত্রে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে পৌরসভা কর্তৃপক্ষকে তাদের পানির লাইনের মাঝে শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে 'ফায়ার হাইড্রেন্ট' স্থাপনের জন্য প্রস্তাবনা প্রদান করার পরিকল্পনা দেয়া হয়েছে। আমরা দ্রুত সময়ে পৌর কর্তৃপক্ষের সাথে এ নিয়ে কথা বলবো। এটি একটি সুন্দর কাজ। নিশ্চয়ই পৌরকর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে একমত হবেন। এ বিষয়ে সৈয়দপুর পৌরসভার উপসহকারী প্রকৌশলী মোঃ আব্দুল খালেক বলেন,সমস্যাটি নিয়ে ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের সাথে পরামর্শ করা যেতে পারে। এ বিষয়ে শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে পানির সোর্স বা 'ফায়ার হাইড্রেন্ট' স্থাপনের একটি প্রকল্প প্রস্তাবনা হাতে নেয়া যেতে পারে। পৌরসভা এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহনের বিষয়ে কাজ করবে বলে জানান তিনি।