অবশেষে লেবাননে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা দিলেন নেতানিয়াহু

এফএনএস ডেস্ক : | প্রকাশ: ২৭ নভেম্বর, ২০২৪, ০৯:০৭ এএম : | আপডেট: ৪ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০২:৩৬ পিএম
অবশেষে লেবাননে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা দিলেন নেতানিয়াহু

দীর্ঘ এক বছরেরও বেশি সময় যুদ্ধের পর যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে রাজি হয়েছে লেবাননের শক্তিশালী সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ ও দখলদার ইসরায়েল। বুধবার (২৭ নভেম্বর) মধ্যরাতে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এই চুক্তির ঘোষণা দেন। চুক্তির প্রাথমিক মেয়াদ হবে ৬০ দিন, পরে তা আরও বাড়ানো হবে।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) জাতির উদ্দেশে দেয়া এক ভাষণে এই ঘোষণা দেন তিনি।

নতোনয়িাহু জানিয়েছেন, তার নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা চুক্তির বিষয়টিতে সম্মতি জানিয়েছে। তবে নেতানিয়াহু হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, হিজবুল্লাহ যদি চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করে তাহলে তারা তাৎক্ষণিকভাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন।

চুক্তি অনুযায়ী ইসরায়েল লেবানন থেকে তাদের সব সেনা প্রত্যাহার করে নিয়ে যাবে। অপরদিকে হিজবুল্লাহ সীমান্ত এলাকা থেকে সরে গিয়ে লিটানি নদীর অপরপ্রান্তে চলে যাবে। এছাড়া হিজবুল্লাহ সীমান্তে কোনো অবকাঠামো নির্মাণ ও নিজেদের পুনরায় অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত করতে পারবে না।

ভাষণে নেতানিয়াহু দাবি করেন, হিজবুল্লাহ বর্তমানে আগের মতো শক্তিশালী নেই। ইসরায়েলি বাহিনী তাদেরকে কয়েক দশক পিছিয়ে দিয়েছে। তেলআবিব যুদ্ধে লক্ষ্য পূরণ করেছে। এ সময় চুক্তি অমান্য করলে কঠোর জবাব দেয়ার হুঁশিয়ারিও দেন তিনি।

গত বছরের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন শুরু হয়। তখন থেকেই হামাস ও ফিলিস্তিনের সমর্থনে ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘাতে জড়ায় হিজবুল্লাহ। এক বছরের বেশি সময় ধরে চলা এ সংঘাত সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে তীব্র হয়ে ওঠে। ইসরায়েল লেবাননে স্থল অভিযান শুরু করে এবং হিজবুল্লাহর কয়েকজন শীর্ষ নেতাকে হত্যা করে। নিহত হন হিজবুল্লাহর প্রতিষ্ঠাতাদের একজন এবং সংগঠনটির প্রধান হাসান নাসরুল্লাহ।

লেবাননের হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্তগুলোর বিষয়ে বিস্তারিত তাৎক্ষণিক কিছু জানা যায়নি। তবে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলোর বরাত দিয়ে এ বিষয়ে ধারণা দেয়ার চেষ্টা করেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। খসড়া চুক্তি অনুযায়ী যুদ্ধবিরতির মেয়াদ হতে যাচ্ছে ৬০ দিন। লেবাননের পার্লামেন্টের ডেপুটি স্পিকার ইলিয়াস বাউ সা’ব বলেন, চুক্তিতে দক্ষিণ লেবানন থেকে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী প্রত্যাহার এবং ৬০ দিনের মধ্যে লেবানন সীমান্তে দেশটির সেনা মোতায়েনের কথা বলা হয়েছে।

চুক্তিতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ‘১৭০১ রেজল্যুশন’ বাস্তবায়নের কথা বলা হয়েছে। এই রেজল্যুশনের মাধ্যমে ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর ২০০৬ সালের যুদ্ধ বন্ধ হয়েছিল। এই রেজল্যুশন অনুযায়ী সীমান্ত থেকে ৩০ কিলোমিটার ভেতরে লিতানি নদীর পেছনে সরে আসতে হবে হিজবুল্লাহকে। এছাড়া যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়ন তদারকি করবে ফ্রান্সসহ পাঁচটি দেশ। এর নেতৃত্বে থাকবে যুক্তরাষ্ট্র।

অবশ্য জাতিসংঘে নিযুক্ত ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত ড্যানি ড্যানন বলেন, যেকোনো চুক্তির অধীন ইসরায়েল দক্ষিণ লেবাননে হামলা চালু রাখার সক্ষমতা বজায় রাখবে। এর আগে লেবাননের পক্ষ থেকে খসড়া চুক্তির এমন শব্দবন্ধ নিয়ে আপত্তি জানানো হয়েছিল, যেটা ইসরায়েলকে এমন অধিকার দেবে।

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW