মানুষ মাত্রই ভুল। অর্থাৎ মানুষই গুনাহ করবে এটা স্বাভাবিক। তবে কেউ হয়তো বেশি, আবার কেউ কম গুনাহগার হয়। শয়তানের ধোঁকায় পড়ে মানুষ অনেক সময় আল্লাহকর্তৃক নিষিদ্ধকৃত কাজ করে ফেলে। কিন্তু একজন মুসলিম গুনাহ করে তাওবা করবে- এটিই স্বাভাবিক। আল্লামা ইবনে কাইয়্যুম রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেছেন, যে গুনাহ করে সে মানুষ। যে গুনাহ করে তার ওপর অটল অবস্থানে থাকে সে শয়তান। আর যে গুনাহ থেকে তাওবা করে, সে হলো মুমিন। যারা গুনাহের ওপর অটল থাকে এবং তওবা করে না তাদেরকে আল্লাহতায়ালা দুনিয়াতে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি দেবেন এবং পরকালে জাহান্নামের বাসিন্দা করবেন।
রাসূল সা. মানুষকে জাহান্নাম থেকে বেঁচে থাকার এবং নেক আমল করার কথা বলেছেন। হজরত নোমান ইবনে বশীর রা. বলেন, আমি রাসূল সা.-কে বলতে শুনেছি, আমি তোমাদেরকে জাহান্নামের আগুন থেকে ভীতি প্রদর্শন করছি আমি তোমাদেরকে জাহান্নামের আগুন থেকে ভীতি প্রদর্শন করছি। তিনি এ বাক্যগুলি বার বার এমনভাবে উচ্চ কণ্ঠে বলতে থাকলেন যে, বর্তমানে আমি যে স্থানে বসে আছি, যদি রাসূল সা. এ স্থান থেকে ওই বাক্যগুলি বলতেন, তবে ঐ উচ্চ কণ্ঠ বাজারের লোকেরাও শুনতে পেত। আর তিনি এমনভাবে হেলে দুলে বাক্যগুলি বলছিলেন যে, তার কাঁধের উপর রক্ষিত চাদরখানা পায়ের উপর গড়ে পড়েছিল (দারেমী, মিশকাত, হাদিস : ৫৪৪৩)।
যারা জাহান্নামে যাবে তারা দেখতে কেমন হবে এ বিষয়ে এক হাদিসে হজরত আবু হুরায়রা রা. বলেন, নবী করীম সা. বলেছেন, জাহান্নামের মধ্যে কাফেরের গায়ের চামড়া হবে বিয়াল্লিশ হাত মোটা, দাঁত হবে ওহুদ পাহাড়ের সমান এবং জাহান্নামীদের বসার স্থান হবে মক্কা-মদীনার মধ্যবর্তী ব্যবধান পরিমাণ (তিরমিজি, মিশকাত, হাদিস :৫৬৭৫)। আরেক হাদিসে আবু হুরায়রা রা. বলেন, রাসূল সা. বলেছেন, দু’প্রকারের লোক জাহান্নামী। অবশ্য আমি তাদেরকে দেখতে পাব না।
তাদের এক শ্রেণী এমন লোক হবে, যাদের হাতের মধ্যে থাকবে গরুর লেজের মতো চাবুক। যা দিয়ে তারা মানুষকে মারধর করতে থাকবে। আর দ্বিতীয় শ্রেণী হবে এমন সব নারী, যারা কাপড় পরেও উলঙ্গ থেকে অপরকে নিজের দিকে আকৃষ্ট করতে এবং নিজেও অপরের দিকে আকৃষ্ট হবে। তাদের মাথার চুল হবে বুখতি উটের হেলে পড়া কুঁজের মতো। তারা কখনও জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। এমনকি তারা জান্নাতের সুঘ্রাণও পাবে না। যদিও তার সুঘ্রাণ অনেক অনেক দূর থেকে পাওয়া যাবে। (মুসলিম, মিশকাত, হাদিস : ৩৩৬৯)।