‘জয় বাংলা ক্লাব’ সভাপতিÑএবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক

এফএনএস (কাজল বরণ দাস; পটুয়াখালী) : : | প্রকাশ: ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫, ০৬:৩৮ পিএম
‘জয় বাংলা ক্লাব’ সভাপতিÑএবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক

পটুয়াখালী-৪ (কলাপাড়া-রাঙ্গাবালী ) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য  ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের  প্রতিমন্ত্রী অধ্যক্ষ মহিবুর রহমানের সহধর্মিণী ও কলাপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ফাতেমা আক্তার রেখার ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত রাকিব মুসুল্লির বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে নানা অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তিনি মহিপুর থানা শাখার ‘জয় বাংলা ক্লাব’-এর সভাপতি হিসেবে দখলদারিত্ব, চাঁদাবাজি ও কাউন্টার দখলসহ বিভিন্ন অপকর্ম চালিয়ে আসছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। রাকিব মুসুল্লি ছাত্রলীগের ছত্রছায়ায় ‘ফেয়ার মাইন্ড সমাজসেবা সংগঠন’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন গড়ে তুলেছিলেন, যা মূলত চাঁদাবাজির কাজে ব্যবহৃত হতো। অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষকে জোরপূর্বক এই সংগঠনের নামে অর্থ দিতে বাধ্য করা হতো। টাকা দিতে অস্বীকার করলেই বিভিন্নভাবে তাদের হয়রানির শিকার হতে হতো।

দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের অনেক নেতাকর্মীর মতো তিনিও এলাকা ছাড়তে বাধ্য হন। ৫ তারিখের পর তিনি আত্মগোপনে চলে যান এবং পরে ঢাকার সাভারে আশ্রয় নেন। সাভারে গিয়ে রাকিব মুসুল্লি ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন এবং আশ্চর্যজনকভাবে সংগঠনটির সাভার উপজেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক পদে জায়গা করে নেন। এই ঘটনায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তারা প্রশ্ন তুলছেনÑদখলদারিত্ব, চাঁদাবাজি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে অভিযুক্ত একজন ব্যক্তি কীভাবে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতৃত্বস্থানীয় পদ পেতে পারেন? এই ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেকেই এটিকে সংগঠনের বড় ধরনের ব্যর্থতা এবং আদর্শবিরোধী বলে উল্লেখ করছেন। এ বিষয়ে রবীন্দ্র সৃজনকলা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান সমন্বয়ক ও সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বৃহত্তর উত্তরের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা আবু সালেহ অমি বলেন, "জুলাই আন্দোলনে আমরা ছাত্র জনতা জীবন দিয়ে এ দেশটাকে ফ্যাসিস্ট মুক্ত করেছি। সেখানে একজন দোসর কীভাবে একটা উপজেলার দায়িত্ব পায়? আমরা কেন্দ্রীয় সমন্বয়কদের ৩৬ ঘণ্টার সময় দিয়েছিÑএর মধ্যে তাকে কমিটি থেকে অপসারণ করে শাস্তির আওতায় আনার জোর দাবি জানাই।"

এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন, "আমরা খোঁজ নিচ্ছি। যদি প্রমাণিত হয় যে তিনি ফ্যাসিস্টের দোসর, তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।" এদিকে সাভার উপজেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দায়িত্বশীলরা এখনো এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। তবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভ বিরাজ করছে এবং তারা দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছেন।

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW