সম্প্রতি পাঠ্যবই ছাপার কাজে কমিশন বাণিজ্যের অভিযোগে এনসিপি’র যুগ্ম সদস্যসচিব গাজী সালাউদ্দিন তানভীরকে সাময়িক অব্যাহতির পাশাপাশি কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
এরই প্রেক্ষিতে গাজী সালাউদ্দিন তানভীর গণমাধ্যমে দেওয়া এক বক্তব্যেই বললেন,
“এনসিপিতে পদ ফিরে না পাওয়া মানে হলো অভিযুক্ত হওয়া। এই মুহূর্ত পর্যন্ত আমি আমার জায়গা থেকে স্পষ্ট বলছি, আমি অভিযুক্ত না। নিজেকে এজন্যই আইনের হাতে সোপর্দ করবো যাতে এর পরিপূর্ণ তদন্ত হয়। পদ ফিরে না পেলে স্বেচ্ছায় জেলে যাবো এবং সরকারের কাছে পরিপূর্ণ তদন্ত চাইবো।”
গাজী সালাউদ্দিন তানভীর আরও যোগ করে বলেন,
“৫ আগস্টের আগে সচিবালয়ে আমার একবার যাওয়া হয়েছে। আমি একটি কোম্পানির চাকরি করতাম, কোম্পানির কাজে একবার যাওয়া হয়েছিল। আর পরে চারবার। সব মিলিয়ে আমি জীবনে পাঁচবার সচিবালয়ে গিয়েছি।”
তিনি বলেন, “তৎকালীন শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ স্যারের সঙ্গে আমি যোগাযোগ করি। স্যারকে পাঠ্যবই ছাপানোর বাস্তব অবস্থা জানাই। আমার সঙ্গে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ছিল। স্যারই আমাদের বলেন, আমরা কোনো হেল্প করতে পারি কি না! কেননা তখনও ছাপাখানার সিন্ডিকেটে আওয়ামী দোসররা ছিল। তবে, আমি যখন এনসিটিবিতে যাই আমার সঙ্গে প্রথম সারিতে দেখা যায় এরকম কোনো সমন্বয়ক ছিল না। তবে সেখানে আমাদের শিক্ষা কারিকুলাম নিয়ে কোনো কাজ করা হয় নাই। বই ছাপানোর কাজে অগ্রগতির জন্য গিয়েছিলাম। আমরা বই ছাপানো বা এর অগ্রগতি সরকারকে জানাতাম। এর বেশি কিছু না।”
ব্যক্তিগত গাড়ি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি একটি পাজেরো গাড়িতে চলাচল করি। এটি পরিচিত একজনের গাড়ি। আমি মাঝেমধ্যে প্রয়োজনে ব্যবহার করি।
সালাউদ্দিন তানভীর বলেন, “আমি মনে করি বাংলাদেশের একজন সাধারণ মানুষেরও সচিবালয়ে এন্ট্রি থাকা উচিত। উপদেষ্টা থেকে শুরু করে সচিবালয়ের সব কর্মকর্তার নম্বর ওয়েবসাইটে দেওয়া থাকে। সেখানে যাওয়া যদি অপরাধ হতো তাহলে নম্বরগুলো ওয়েবসাইটে দেওয়া থাকত না। আমি সোখানে চারবার গিয়েছি এবং দায়িত্বের জায়গা থেকেই গিয়েছি। তার মানে এই না যে আমাকে কেউ পাঠিয়েছে। আমার বিরুদ্ধে যে এত অভিযোগ, তার প্রমাণ কই? কেউ প্রমাণ করুক। একটা নাস্তা করার ছবি দিয়ে তো প্রমাণ করা যায় না।”
‘ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে জুলাইয়ে যে লড়াইটা হয়েছিল সেই নেতৃত্বের উপরেই এনসিপি প্রতিষ্ঠিত। ৫ আগস্টের আগের কালচারে চলবে তা নয়। যেমন আগে জঙ্গি নাটক সাজানো হতো, অযথা মানুষকে মামলা দিয়ে হয়রানি করা হতো। এখন মানুষকে অযথা হয়রানি করা হবে, মিথ্যা অভিযোগ দেওয়া হবে, ফ্যামিলি ব্যাকগ্রাউন্ড না জেনেই তার সম্পর্কে মন্তব্য করবে, তার লেবাস নিয়ে সমালোচনা করবে, এনসিপি সেগুলো কখনোই মেনে নেবে না। আমি আশা করি আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তা তদন্তে মিথ্যা প্রমাণিত হয়ে আসবে’-যোগ করেন তিনি।