আন্তর্বর্তী সরকারের উদ্যোগে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে বিএনপি। দলটির দাবি, বহু আগেই এই বিষয়ে লিখিতভাবে সরকারকে অবহিত করেছিল বিএনপি। অবশেষে সরকার সে দাবি আংশিক বাস্তবায়ন করায় বিএনপি সন্তোষ প্রকাশ করেছে।
রোববার রাজধানীতে আয়োজিত এক আলোচনায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “আমরা আগেই সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে লিখিতভাবে জানিয়েছিলাম যে, আওয়ামী লীগ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত। এই দলটির বিচার হওয়া উচিত এবং তাদের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা প্রয়োজন। যদি সেই সময়ে আমাদের পরামর্শ আমলে নেওয়া হতো, তাহলে গত কয়েক দিনের বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না।”
তিনি আরও বলেন, “আন্তর্জাতিক নজির অনুযায়ী অনেক দেশে ফ্যাসিবাদী ও গণহত্যাকারী দলগুলোর বিচার হয়েছে এবং সেসব দল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আমাদের দেশের পরিস্থিতিও সে দিকেই অগ্রসর হচ্ছে। আওয়ামী লীগ এখন আর কোনো স্বীকৃত রাজনৈতিক দল নয়; তারা একটি মাফিয়াতান্ত্রিক ও ফ্যাসিবাদী শক্তিতে রূপ নিয়েছে।”
সালাহউদ্দিন আহমেদ দাবি করেন, আওয়ামী লীগের ডিএনএতেই গণতন্ত্র ও রাজনৈতিক সহনশীলতার চর্চা নেই। সে কারণে দলটি আর রাজনৈতিক পরিচয় ধরে রাখার যোগ্য নয় বলেই মত দেন তিনি।
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, “সরকার সন্ত্রাসবিরোধী আইনে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে আইনে কিছু সংশোধনী আনা প্রয়োজন হতে পারে, কারণ বর্তমানে শুধু রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের কথা বলা আছে, কার্যক্রম নিষিদ্ধের সুস্পষ্ট নির্দেশনা নেই।”
আসন্ন সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে বিএনপি নেতা বলেন, “সারা দেশের মানুষ নির্বাচনের জন্য উদগ্রীব। আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছি— যেন শিগগিরই একটি সুস্পষ্ট ও গ্রহণযোগ্য রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয়। তা না হলে ভবিষ্যতে এমন বিব্রতকর পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে।”
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বিএনপি কেন শাহবাগে অংশ নেয়নি— এমন প্রশ্নের জবাবে সালাহউদ্দিন বলেন, “আমরা বহু আগেই লিখিতভাবে আমাদের দাবির কথা জানিয়েছি। তাই এখন রাজপথে নামার প্রয়োজন মনে করিনি।”
তিনি সংবিধান সংস্কার প্রসঙ্গেও কথা বলেন। সালাহউদ্দিনের মতে, “আমাদের সংবিধান এখন দলীয়করণে আক্রান্ত। বড় আকৃতির সংবিধান থাকলেই দেশ উন্নত হয় না। বরং জনগণের স্বার্থে এটিকে সময়োপযোগী ও ভারসাম্যপূর্ণ করতে হবে।”
বিএনপির পক্ষ থেকে ভবিষ্যতে দেশের স্বার্থে সরকারকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া অব্যাহত থাকবে বলেও জানান সালাহউদ্দিন আহমেদ।