ঢাকা রেঞ্জের নবনিযুক্ত ডিআইজি রেজাউল করিম মল্লিক দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হয়ে বলেছেন, "ঢাকার প্রতিটি থানা জনগণের আস্থা ও সেবার রোল মডেল হবে।" রোববার (১১ মে) সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। এ সময় রেঞ্জের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
ডিআইজি রেজাউল করিম মল্লিক বলেন, “জনগণই পুলিশের প্রকৃত শক্তি। তাদের আস্থা ফিরিয়ে আনার জন্যই আমাদের কার্যক্রম পরিচালিত হবে।” তিনি জানান, ঢাকার আওতাধীন ১৩ জেলার ৯৮টি থানায় সিসিটিভিসহ আধুনিক মনিটরিং সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে, যেখান থেকে তিনি নিজে জিডি, অভিযোগ ও মামলার অগ্রগতি সরাসরি তদারকি করবেন।
প্রতিটি থানায় অভিযোগ বক্স স্থাপন করা হবে, যেখানে কেউ সেবা না পেলে তাদের অভিযোগ রেখে যেতে পারবেন। সেই সঙ্গে চালু করা হচ্ছে ‘টক টু ডিআইজি’ নামের একটি মোবাইল অ্যাপ, যা দিয়ে ঘরে বসেই ডিআইজি বরাবর অভিযোগ জানানো যাবে। অভিযোগকারীর পরিচয় গোপন রাখা হবে বলে তিনি আশ্বস্ত করেন।
ডিআইজি বলেন, “আমি নিজে সাধারণ মানুষের কথা শুনতে চাই। কেউ যদি থানায় কাঙ্ক্ষিত সেবা না পান, তারা সরাসরি আমার কাছে আসতে পারবেন। থানাকে জনগণের আস্থার কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলব।” তিনি আরও জানান, থানাগুলো হবে ফার্স্ট রেসপন্ডার হিসেবে কাজ করার উপযোগী, যাতে বিপদে পড়া কেউ সর্বপ্রথম থানার কাছেই সাহায্য চাইতে পারেন।
পুলিশ বাহিনীর অভ্যন্তরীণ দুর্নীতি ও ঘুষচক্রের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে ডিআইজি মল্লিক বলেন, “ঘুষবাণিজ্য, বদলিবাণিজ্য, চাঁদাবাজি—এমন কোনো অনৈতিক কর্মকাণ্ড ঢাকা রেঞ্জে বরদাশত করা হবে না। এসপি বা ওসি যেই হোন, অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে কঠোর বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ডিআইজি রেজাউল করিম মল্লিক স্পষ্ট করে বলেন, “নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন কিংবা যেকোনো রাজনৈতিক দলের সহিংস কর্মকাণ্ড কঠোরভাবে দমন করা হবে। জনগণের নিরাপত্তায় বিন্দুমাত্র বিঘ্ন ঘটলে আমরা শক্ত হাতে তা মোকাবিলা করব।” তিনি রেঞ্জের অধীনস্থ সকল এসপি ও ওসিদের এ বিষয়ে কঠোর নির্দেশনাও দিয়েছেন।
তিনি আরও জানান, গণঅভ্যুত্থান সংক্রান্ত দায়ের করা মামলাগুলোর সঠিক ও নিরপেক্ষ তদন্ত নিশ্চিত করতে ডিআইজি অফিসে একটি বিশেষ মনিটরিং সেল খোলা হবে। বাদী, ভুক্তভোগী ও শহীদ পরিবারের সঙ্গে তিনি নিজে কথা বলবেন এবং প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেবেন।
ডিআইজি বলেন, “আমরা জনগণের সেবক, তাদের কাছে দায়বদ্ধ। আমি নিজেও আইনের ঊর্ধ্বে নই।” তিনি সব জেলা ও থানার বাসিন্দাদের উদ্দেশে বলেন, “আপনারা আইন মেনে চলুন, কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হবেন না। আমরা সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব দিয়ে আপনাদের পাশে থাকব।”