গুণীজনকে সস্মান করলে সমাজে নিজেরাই সস্মানিত হয়

এফএনএস (কেশব কুমার বড়ুয়া; হাটহাজারী, চট্টগ্রাম) : | প্রকাশ: ২২ জুলাই, ২০২৫, ০৫:৪৩ পিএম
গুণীজনকে সস্মান করলে সমাজে নিজেরাই সস্মানিত হয়

চট্টগ্রামের হাটহাজারীর আঞ্চলিক সংঘনায়ক  জিনশাসন দরদী উপাধিতে ভূষিত ভদন্ত আর্যশ্রী মহাথেরো এর ৬ষ্ঠ প্রয়ান বার্ষিকী উপলক্ষে স্মরনানুষ্ঠান মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হয়। প্রয়াত সংঘনায়কের শিষ্য ও গ্রামবাসী এ উপলক্ষে সংঘদান,অষ্ট- উপকরন দান ও স্মরন সভায় আয়োজন করেন। মির্জাপুর শান্তিধাম বিহার চত্বরে আয়োজিত স্মরন সভার শুরুতে ঢাকায় প্রশিক্ষন বিমান দূর্ঘটনায় নিহতদের প্রতি গভীর শোক প্রকাশ করে শোকার্ত পরিবার বর্গের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন পূর্বক নিহতদের আত্মার শান্তি  কামনা করা হয়। তাছাড়া আহতদের ও বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ধর্মীয় গুরু ত্রয়োদশ সংঘরাজ ভদন্ত জ্ঞানশ্রী মহাথেরো এর  দ্রুত সুস্থতা কামনা করে পূর্ণ্যদান করা হয়।অনুষ্ঠানে  জীবজগতের শান্তি, প্রার্থীব জগতের মঙ্গল ও দেশের সমৃদ্ধি কামনা করা হয়। 

এ উপলক্ষে আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশের বৌদ্ধদের সর্বোচ্চ দ্বিতীয় ধর্ম গুরু বিচিত্র ধর্ম কথিক উপাধিতে ভূষিত মির্জাপুর গ্রামের ভূমি পুত্র , ষাটের দশকে প্রয়াত ৬ষ্ঠ সংঘরাজ ধর্মানন্দ মহাথেরো এর রক্তের উত্তরাধিকার  উপ- সংঘরাজ ভদন্ত ধর্মপ্রিয়  মহাথেরো। অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন হাটহাজারী অঞ্চলের আঞ্চলিক সংঘরাজ ধর্ম সারথি উপাধিতে ভূষিত ভদন্ত শাসনানন্দ মহাথেরো বি এ( সন্মান)এম এ (ফাস্ট ক্লাশ)। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ড, দেবপ্রিয় মহাথেরো। মির্জাপুর শান্তিধাম বিহারের উপাধ্যক্ষ সংঘজ্যোতি মহাথেরো এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভার শুরুতে পবিত্র ত্রিপিটক থেকে পাঠ করেন স্থানীয় বিহারের আবাসিক ভদন্ত প্রজ্ঞারত্ন মহাথেরো। অনুষ্ঠানে স্মৃতি চারন করে বক্তব্য রাখেন মির্জাপুর শান্তিধাম বিহার পরিচালনা কমিটির সদস্য প্রফেসর বিধান চন্দ্র বড়ুয়া এম এ (ডবল) উপাহধ্যক্ষ( অবঃ) রাঙ্গামাটি সরকারি কলেজ। মির্জাপুর গৌতমাশ্রম বিহার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ লায়ন অনুপম বড়য়া, ধন্যবাদ জ্ঞাপন ও পঞ্চশীল প্রার্থনা  করেন মির্জাপুর শান্তিধাম বিহার পরিচালনা কমিটির সদস্য  যথাক্রমে যীশু বিকাশ চৌধুরী বি এ (সস্মান) এম এ, শিক্ষাবিদ ধর্মপ্রিয় বড়ুয়া বিএ (সস্মান) এম এ । 

উদ্বোধনী বক্তব্যে ভদন্ত শাসনানন্দ মহাথেরো  প্রয়াত ভদন্ত আর্যশ্রী মহাথরো কে মৃত্যুর পর যথাযথ সস্মান দেওয়া হয়নি বলে উল্লেখ করে তাঁকে মরনোত্তর হলে ও মির্জাপর শান্তিধাম  বিহারের  অধ্যক্ষ হিসাবে সস্মান প্রদানের প্রস্তাব করেন। 

সভাপতির বক্তব্যে ভদন্ত ধর্মপ্রিয় মহাথেরো  যে কোন কাউকে তাঁর প্রাপ্য সস্মান দিতে কার্পন্য করা বিনয় সস্মত নয় বলে উল্লেখ করে বলেন  আর্যশ্রী মহাথেরো এর  বিষয়ে কোন লেখা লিখতে গেলে তাঁকে কোন বিহারের অধ্যক্ষ লিখবে। তাঁকে তাঁর প্রাপ্য সস্মান না দেওয়ায় এইটি এখন প্রশ্ন হয়ে দেখা দেবে। তিনি বলেন গুণীজনকে সস্মান প্রদান করলে কারো সস্মান কমেনা না, বরং যারা সস্মান দেন তাঁরাই সমাজে সস্মানিত হয়। মির্জাপুর গ্রামে জন্মজাত এই গুনী ভিক্ষুর জীবন থেকে শিক্ষা গ্রহন করে প্রত্যেকে স্বীয় জীবনে  তাঁর আদর্শের প্রতিফলন ঘটাতে পারলেই তাঁর প্রতি যথার্থ সস্মন ও শ্রদ্ধা জানানো হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন। 

অনুষ্ঠানে আর্যশ্রী মহাথেরোর শিষ্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ভদন্ত বুদ্ধপ্রিয় মহাথেরো, ভদন্ত বোধিশ্রী মহাথেরো ও লোকশ্রী মহাথেরো। অনুষ্ঠানে আর্যশ্রী মহাথেরো এর স্মৃতি রক্ষার্থে  সংঘরাজ ভিক্ষু মহামন্ডল চিকিৎসা তহবিলে নগদ ৫০ হাজার টাকা দান দেওয়া হয়। এই দানের অর্থ উপস্থিত শিষ্যগন সভার সভাপতি হাতে তুলে দেন।    

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে