মাদকের থাবা থেকে বাচঁতে সেনা অভিযান আরও জোরদার করতে হবে

এফএনএস | প্রকাশ: ৩০ জুলাই, ২০২৫, ০৭:৪২ পিএম
মাদকের থাবা থেকে বাচঁতে সেনা অভিযান আরও জোরদার করতে হবে

দেশে মাদকবিরোধী জোরদার অভিযান চলছে। এটি স্বস্তিদায়ক। কিন্তু আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতার পাশাপাশি সামগ্রিকভাবে মাদকের বিরুদ্ধে একটি জাগরণ সৃষ্টি করতে না পারলে এই গুরুতর সমস্যা থেকে উত্তরণের কোনো পথ পাওয়া যাবে না। দেশজুড়ে মাদক যেভাবে ছড়িয়ে পড়েছে, তা কেবল সামাজিক অবক্ষয় নয়, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার জন্যও এক বড় হুমকি। নিষিদ্ধ জগতে অস্ত্রের পর মাদকই সবচেয়ে লাভবান ব্যবসা। বিশেষ করে ফেনসিডিল ও ইয়াবা সহজলভ্য ও বহনযোগ্য বলে এর বিস্তার দেশজুড়ে। সত্যি বলতে কি দেশের এমন কোনো এলাকা খুঁজে পাওয়া যাবে না যেখানে মাদকের থাবা নেই। সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষজন মাদককারবারের সাথে জড়িত। তারা বিভিন্ন কলাকৌশলের আশ্রয়ে ব্যবসা পরিচালনা করে। সত্যি বলতে কি দেশজুড়ে এক বিশাল জাল বিস্তার করে আছে এই মরণ নেশার ভয়াবহ সিন্ডিকেট। মাদক সেবন ও বাণিজ্যকে কেন্দ্র করে অহরহ ঘটছে খুনাখুনি। কক্সবাজারের টেকনাফ, উখিয়াসহ ১৮ পয়েন্ট এবং বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িসহ ১০টি পয়েন্ট দিয়ে প্রতিদিন বিপুল ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য দেশে ঢ়ুকছে। দেশের অন্যান্য সীমান্ত দিয়েও ঢ়ুকছে মাদক। উৎপাদনকারী দেশ না হয়েও ভৌগোলিক বাস্তবতায় মাদকের সর্বগ্রাসী আগ্রাসনে পুরো বাংলাদেশ। সামপ্রতিক রাজনৈতিক কেওয়াস, ব্যবসা-বিনিয়োগে খরাসহ অর্থনৈতিক দুর্দশা, কূটনৈতিক টানাপড়েনের আলোচনা-সমালোচনার ব্যতিব্যস্ততার ফাঁকে অনেকের অলক্ষে সেবনসহ মাদকের বিস্তার ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। দেশের কোনো কোনো লোকালয়ে ঘরে ঘরে মাদকের কারবার। নেশাগ্রস্ত সন্তানের হাতে মা-বাবা, স্বামীর হাতে স্ত্রী হত্যার মতো ঘটনা মাঝেমধ্যে প্রকাশ্যে এসে দিন কয়েক মাতামাতি পর্যন্তই সার। নেই কোনো কার্যকর পদক্ষেপ।  যার জেরে মাদকাসক্তির গ্রাস এখন সর্বত্র। এতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত তরুণসমাজ। মাদকাসক্তিতে তরুণসমাজের একটি বড় অংশ এখন দিকভ্রান্ত ও ধ্বংসপ্রায়। মাদকের ভয়াল এই থাবা প্রজন্মের শিশু-কিশোরদের ভবিষ্যৎ যেমন করছে অনিশ্চিত, ঠিক তেমনি ধুঁকে ধুঁকে ছিন্ন করছে তাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য। প্রত্যন্ত  গ্রাম থেকে মফস্বল শহর, দেশের প্রায় প্রতিটি প্রান্তরে এখন হেরোইন, মদ, ফেনসিডিলের মতো ছোট-বড়-মাঝারি সব ধরনের মাদক সহজে মিলছে। দামও হাতের নাগালে। মাদকের বিষয় সংক্রান্ত বেশ কটি কর্তৃপক্ষ দেশে রয়েছে। মাদক নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকারের একটি অধিদপ্তরও আছে। কিন্তু অপ্রিয় সত্য হচ্ছে, তারা দমন নয়, প্রকারান্তরে নিজেদের মতো মাদক নিয়ন্ত্রণই করে। সেখানে বিশাল লগ্নি, নিয়োগ-বিনিয়োগ, লোভনীয় পদ-পদায়নের বিষয়-আশয় রয়েছে। আড়ালে যা মাদকের আরেক কারবার। মাদক নিরাময়ে দেশে সরকারি-বেসরকারি কিছু প্রতিষ্ঠান আছে। চিকিৎসাসহ পুনর্বাসন কেন্দ্রও আছে। এগুলোর কোনো কোনোটির ভেতরের খবর ভয়াবহ। মোট কথা, মাদকের আরেক কারবার। সেনাবাহিনীর সহায়তায় দেশকে মাদকমুক্ত করার জরুরি বাস্তবতা তৈরি হয়েছে। কারণ গণ-অভ্যুত্থানের পর সেনাবাহিনী ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা নিয়ে মাঠে রয়েছে এবং তাদের কয়েকটি অভিযান ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে। আমরা আশা করি, সেনা অভিযান অব্যাহত থাকবে মাদকের বিরুদ্ধে।