চট্টগ্রাম বন্দরকেন্দ্রিক আন্দোলন বন্ধের জন্য পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা নেওয়ার অভিযোগে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) চট্টগ্রাম মহানগরের যুগ্ম সমন্বয়কারী নিজাম উদ্দিনকে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে দলটি। রোববার (১০ আগস্ট) সন্ধ্যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেড় মিনিটের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর বিষয়টি আলোচনায় আসে। ভিডিওতে মেসেঞ্জার কলে আন্দোলন বন্ধের বিনিময়ে অর্থ লেনদেনের প্রসঙ্গ উঠে আসে।
দলের চট্টগ্রাম মহানগরের যুগ্ম সমন্বয়কারী (দপ্তর) আরিফ মঈনুদ্দিন স্বাক্ষরিত পত্রে নিজাম উদ্দিনকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে লিখিত ব্যাখ্যা প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হয়। নোটিশে উল্লেখ করা হয়, ওই ভিডিও প্রকাশের মাধ্যমে দলীয় ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে এবং শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ উঠেছে।
ভিডিওতে আফতাব হোসেন রিফাত নামের এক ব্যক্তিকে নিজাম উদ্দিনের সঙ্গে ফোনালাপে পাঁচ লাখ টাকা দেওয়ার কথা বলতে শোনা যায়। আরও অর্থ নেওয়ার সম্ভাবনা নিয়েও কথোপকথন হয়, যেখানে নিজাম উদ্দিন ‘দশ লাখ’ পর্যন্ত দাবি তোলার পরামর্শ দেন। কথোপকথনের এক পর্যায়ে তিনি বলেন, “ওনাদের কাছে এত ছোট ডিমান্ড করছ কেন?”
দলীয় সূত্রে জানা যায়, আফতাব হোসেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চট্টগ্রাম বন্দরকেন্দ্রিক সমন্বয়ক। তিনি ভিডিওর কথোপকথনের সত্যতা স্বীকার করলেও দাবি করেন, এটি পুরোনো ঘটনা এবং জোরপূর্বক ধারণ করা। তাঁর ভাষ্যে, বন্দর ইস্যু নিয়ে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে প্রোপাগান্ডা চালানো হচ্ছে। তিনি আরও জানান, মে মাসের ৩০ তারিখে তাঁকে ডেকে নিয়ে মারধর করা হয় এবং পরে জোরপূর্বক ভিডিওটি ধারণ করা হয়।
নিজাম উদ্দিনও ভিডিওটিকে সাত-আট মাস আগের বলে দাবি করেছেন এবং বিষয়টি রাজনৈতিকভাবে তাকে কোণঠাসা করার পরিকল্পনা বলে অভিহিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, যিনি ভিডিও করেছেন, তাঁর বক্তব্য প্রকাশ হলে আসল ঘটনা পরিষ্কার হবে।
এর আগে গত ৫ জুলাইও নিজাম উদ্দিনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ ওঠে। এক নারী অভিযোগ করেন, দুই কোটি টাকা না দেওয়ায় তাঁর স্বামীকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়। সে সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নগর শাখার সদস্যসচিব হিসেবে থাকা নিজামের পদ স্থগিত করা হলেও পরে তা ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
ভিডিওতে আলোচিত কথোপকথনটি চট্টগ্রাম বন্দরকেন্দ্রিক কোন নির্দিষ্ট আন্দোলনের বিষয়ে ছিল, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।