গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে তিস্তা নদীর ওপর নির্মিত ১৪৯০ মিটার দীর্ঘ ‘মওলানা ভাসানী সেতু’ উদ্বোধন হচ্ছে আজ বুধবার (২০ আগস্ট)। এর মাধ্যমে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার পাঁচপীর বাজারের সঙ্গে কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলা সদরের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হবে। উদ্বোধন করবেন অন্তর্বর্তী সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
সেতুর নামকরণ নিয়ে ইতোমধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। গত ১০ আগস্ট স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে প্রকাশিত প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, সেতুটির নাম হবে ‘মওলানা ভাসানী সেতু, গাইবান্ধা’।
স্থানীয়রা জানান, সেতু চালু হলে দীর্ঘদিনের ভোগান্তির অবসান হবে। এখন স্বল্প সময় ও কম খরচে শিল্প ও কৃষিজাত পণ্য পরিবহণ সম্ভব হবে। ছোট ও মাঝারি শিল্পকারখানা গড়ে উঠবে, শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটবে এবং দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। পর্যটন বিকাশের পাশাপাশি স্থানীয় অর্থনীতি চাঙা হবে।
সেতুটি গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রামের মধ্যে দূরত্ব কমিয়ে আনবে ৪০ থেকে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত। ঢাকার সঙ্গে চিলমারীর দূরত্ব কমবে প্রায় ১৩৫ কিলোমিটার। স্থানীয়দের মতে, এটি জাতীয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
বাংলাদেশ সরকার (জিওবি), সৌদি ফান্ড ফর ডেভেলপমেন্ট (এসএফডি) এবং ওপেক ফান্ড ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টের (ওফিড) অর্থায়নে নির্মিত সেতুটির ব্যয় হয়েছে প্রায় ৯২৫ কোটি টাকা। সেতুর দৈর্ঘ্য ১৪৯০ মিটার, প্রস্থ ৯ দশমিক ৬০ মিটার এবং এতে রয়েছে ২ লেন ও ৩১টি স্প্যান। এটি প্রি-স্ট্রেসড কংক্রিট গার্ডার প্রযুক্তিতে নির্মিত।
এতদিন সুন্দরগঞ্জ ও চিলমারীর মানুষ ঝুঁকিপূর্ণ খেয়া পারাপরের ওপর নির্ভরশীল ছিলেন। বর্ষা মৌসুমে দেড় কিলোমিটার বিস্তৃত নদী পার হওয়া ছিল অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। সেই সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে তিস্তার দুই তীরের মানুষের জীবন-যাত্রায় নতুন অধ্যায় সূচিত হতে যাচ্ছে।