২০০৪ সালের ভয়াবহ ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ সব আসামিকে খালাস দেওয়ার হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আপিলের শুনানি চলছে।
বুধবার (২০ আগস্ট) আসামিপক্ষের আইনজীবীরা সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে শুনানি উপস্থাপন করেন। এর আগে মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চে রাষ্ট্রপক্ষের শুনানি শেষে কার্যক্রম মুলতবি করে দেওয়া হয়। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল্লাহ আল মাহমুদ মাসুদ।
আসামিপক্ষের হয়ে সিনিয়র আইনজীবী এস এম শাহজাহান ও মোহাম্মদ শিশির মনির যুক্তি তুলে ধরেন। তাঁরা আশা প্রকাশ করেন, নিম্ন আদালতের রায় বাতিল করে হাইকোর্টের দেওয়া খালাসের রায়ই বহাল থাকবে।
শুনানিতে বিএনপির জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলসহ আরও কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ তারেক রহমান ও লুৎফুজ্জামান বাবরসহ যাবজ্জীবন ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সব আসামিকে খালাস দেন। এর মাধ্যমে তারা নিম্ন আদালতের রায় বাতিল করেন।
পরে রাষ্ট্রপক্ষ এই খালাস রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে। গত ১ জুন আপিল বিভাগ রাষ্ট্রপক্ষকে আপিলের অনুমতি দেয়।
২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর বিচারিক আদালত এই মামলায় ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু, মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী ও হানিফ পরিবহনের মালিক মো. হানিফ।
অন্যদিকে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তদের তালিকায় ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী ও বিএনপি নেতা কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদসহ অনেকে।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বিকেলে ঢাকার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। এতে তৎকালীন মহিলা বিষয়ক সম্পাদক আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। আহত হন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ দলের কয়েকশ নেতা-কর্মী। অনেকে পঙ্গুত্ববরণ করেন।
মামলাটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে সবচেয়ে আলোচিত ঘটনাগুলোর একটি হিসেবে বিবেচিত হয়। আপিল বিভাগের রায় কী হয়, সেটিই এখন রাজনৈতিক অঙ্গন ও সাধারণ মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রে।