দীর্ঘদিন ধরে যপবিস-২ (পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২) এর সদর দপ্তরের এক শ্রেনির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে গ্রাহক হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। দুপুর সাড়ে ১২টার পর থেকে সিংহভাগ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মস্থলে দেখা মেলেনি। সদর দপ্তরটির গুরুত্বপূর্ণ অভিযোগ কেন্দ্রে তিনজনের একজনেরও যেমন ছায়া মেলেনি তেমনি দেখা মেলেনি জিএম (জেনারেল ম্যানেজার)সহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ন পদধারি কর্মকর্তাদের। দুপুরের পর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মস্থলে ফিরে না আসা নিত্যদিনের ঘটনা বলে অনেকেরই অভিযোগ। সোমবার সরেজমিন যপবিস-২ এর সদর দপ্তরে গেলে এ চিত্র চোখে পড়ে। ঘড়ির কাটা তখন বেলা ৩টা ছুঁই ছুঁই তখনো যপবিস-২ (যশোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২)-এর সদর দপ্তরে সিংহভাগ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিজ চেয়ারে দেখা যায়নি।
সংশ্লিষ্ট অফিস সূত্রে জানাযায়, যশোরের মণিরামপুরে যপবিস-২ এর সদর অবিস্থিত। এই সদর দপ্তর ১৯৮১ সালের ২ ফেব্রুয়ারি হতে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করে। যশোরের মণিরামপুর, কেশবপুর, অভয়নগর, নড়াইল জেলার নড়াইল সদর, কালিয়া, লোহাগড় এবং খুলনা জেলার ফুলতলা উপজেলায় ৫ লাখ ৩৩ হাজার ৬৬২ গ্রাহকদের মাঝে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে আসছে। এই সদর দপ্তরের আওতায় ৫টি জোনাল অফিস, ৩টি সাব জোনাল অফিস রয়েছে। যার কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা সাড়ে ৭শ’।
সোমবার সরেজমিন সদর দপ্তরের অভিযোগ কেন্দ্রে গেলে কাউকেও পাওয়া যায়নি। এই কেন্দ্রের পাশে রয়েছে ওয়ার্কশপ। সেখানে কর্মরত শ্রমিকরা জানান, অভিযোগ কেন্দ্রে তিনজন দায়িত্বে রয়েছেন। কিন্তু বেলা তিনটা পর্যন্ত কারো দেখা মেলেনি। এমনকি তাদের হটলাইন মোবাইল ফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। তিনটার পর তরিকুল ইসলাম নামের একজন আসেন। তাকে প্রশ্ন করতেই তেলে বেগুনে জ্বলে উঠেন। এ সময় ফোন বন্ধের কথা বলতেই তিনি দাবি করেন, চার্জ নেই। এর আগে নির্মান বিভাগে গেলে দায়িত্বরত ইএন্ডসি (সহকারি প্রকৌশলী) আবু সাইদ, মোঃ ওসমান ফারুক, এজিএম (মানবসম্পদ) ফজলুর রহমান, এজিএম এস এম মুবতাসীম মাহবুব (প্রশাসন), এজিএম একেএম ওয়াহিদ জুবেরী (আইটি) কারো দেখা মেলেনি। এমনকি জিএম (জেনারেল ম্যানেজার) হাদি উজ্জামানের দেখা মেলেনি। পরে খোঁজ নিয়ে জানাযায়, তিনি অসুস্থ্য থাকায় ডিজিএম কেশবপুর জোনাল অফিস ভারপ্রাপ্ত জিএম-এর দায়িত্বে আছেন। এ সময় বিকেলে সাড়ে তিনটার দিকে ভারপ্রাপ্ত জিএম আব্দুর রব-এর ব্যবহৃত মুঠোফোনে ফোন দিলে তিনি জানান, তিনি অফিসেই আছেন। তার অফিসে নাই বললে তিনি বলেন, সদর দপ্তরের রেস্ট হাউজে আছেন তিনি।
এসময় অফিসের বাইরে বেঞ্চে ৭/৮জন গ্রাহককে অপেক্ষায় থাকতে দেখা যায়। বেঞ্চে ঘুমিয়ে থাকা একজনকে ডেকে উঠানো হয়। তার নাম মনিরুজ্জামান। বাড়ি উপজেলার পাড়ালা গ্রামে। তার বিচ্ছিন্ন সংযোগ পুনরায় সংযোগের জন্য এসেছেন। তিনি জানান, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এসেছেন। দায়িত্বরত কর্মকর্তার কাছে গেলে তাকে জানানো হয়, দুপুরের (লান্স) পর আসেন। সেই অবধি আড়াই ঘন্টা তিনি অপেক্ষায় থাকলেও সেই কর্মকর্তার দেখা পাননি।
এ ব্যাপারে আরইবি (পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড)-এর নির্বাহী প্রকৌশলী মিঠু সরকার জানান, অনেকেই ছুটি নিয়েছেন। বাকিরা কেনো আসেননি খতিয়ে দেখা হবে।