বাংলাদেশের লাইফ লাইন খ্যাত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ার অংশের দুটি ইউটার্ন যেন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। ইউটার্নে নিরাপত্তার অভাবে গাড়ির চালক, যাত্রী ও পথচারীরা দুর্ঘটনার শিকার হয়ে মৃত্যুবরণ করছে। অনেকে আহত হয়ে পঙ্গুত্ববরণ করছে।
জানা যায়, মহাসড়কের আনারপুরা ও বাউশিয়া এলাকার ইউটার্ন গুলোতে সড়ক বিভাগের কর্মকর্তাদের সঠিক তদারকী না থাকা এবং সড়কের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা হাইওয়ে পুলিশ সঠিক ভাবে দেখ ভাল না করার কারণে মহাসড়কে প্রায়ই সময় মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটছে বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।
সরেজমিন দেখা যায়, ভবেরচর হাইওয়ে পুলিশের আওতাধীন মহাসড়কের গজারিয়ার অংশে ১৩ কিলোমিটার সড়কের তেতৈতলা, আনারপুরা, বাউশিয়া ও পাখির মোড় চারটি ইউটার্ন রয়েছে। এ গুলোর মধ্যে আনারপুরা ও বাউশিয়া এলাকার ইউটার্ন খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।
স্থানীয়রা জানান, প্রায়ই সময় এই ইউটার্ন দিয়ে অবাধে ছোট যান সিএনজি চালিত অটোরিকশা, মোটরবাইক, প্রাইভেট কারসহ সাধারণ মানুষ ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হয়। এ দুটি ইউটার্ন পয়েন্ট খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। সর্বশেষ সোমবার আনারপুরা এলাকায় একটি ব্যাটারি চালিত অটো রিস্কা ইউটার্ন করার সময় দূরপাল্লা বাসের ধাক্কায় অটো রিস্কার দুজন যাত্রী মারা যায়, অপর তিনজন যাত্রী গুরুতর আহত হয়। তাদের দাবি এ ইউটার্ন পয়েন্টে নিরাপত্তাকর্মী ট্রাফিক পুলিশ নিয়োগ দেয়া হোক। না হয় বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে ওভারপাস অথবা আন্ডারপাস নির্মাণের দাবি জানান তারা।
এ বিষয়ে সচেতন মহল মনে করছেন, মানুষজন মহাসড়ক ব্যবহার করে যানবাহন করে তাদের গন্তব্যে পৌঁছায়। কিন্তু সড়ক যখন অনিরাপদ তখন মানুষের জন্য তা কাল হয়ে দাঁড়ায় এবং দুর্ভোগের কারণ হয়। মহাসড়কের নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত থাকে পুলিশ। কিন্তু পুলিশ তাদের দায়িত্ব সঠিক ভাবে পালন না করে সড়কে চাঁদাবাজিতে মগ্ন থাকে। এসব অনিয়ম বন্ধে সরকারকে কঠোর হওয়া উচিত। মহাসড়কে দুর্ঘটনা এড়াতে এসব ইউটার্ন পয়েন্টে নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগ দেওয়ার জোর দাবি জানান।
এ প্রসঙ্গে নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী জাকির হোসেন বলেন,সড়ক বিভাগের কাজ হচ্ছে সড়কের রক্ষণাবেক্ষণ, রাস্তা তৈরির কাজ করা। সড়কের নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত রয়েছে হাইওয়ে পুলিশ। মহাসড়কের ইউটার্ন পয়েন্ট গুলোতে নিরাপত্তাকর্মী দেয়ার কোন বিধান এখনো চালু হয়নি। তবে রাস্তা তৈরির সময় প্রত্যেকটি ইউটার্ন পয়েন্টের ডানে-বামে বাড়তি জায়গা রাখা হয়েছে যাতে গাড়িগুলো নিরাপদে চলাচল করতে পারে এবং কিছু জনসচেতনতামূলক স্টিকার লাগিয়ে দেয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে সবাইকে সচেতন হওয়া উচিত।
এবিষয়ে ভবেরচর হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ শওকত হোসেন বলেন, মহাসড়কের নিরাপত্তায় আমরা দিনরাত কাজ করে যাচ্ছি। বিশেষ করে মহাসড়কে সিএনজি চালিত অটোরিকসা, থ্রি-হুইলার গাড়ি চলাচল না করার জন্য আমরা চালকদেরকে প্রচার প্রচারণার মাধ্যমে উৎসাহিত করছি। এ ক্ষেত্রে যেসব গাড়ি চালকরা মহাসড়কের নিয়ম ভঙ্গ করে তাদেরকে নিয়মিত মামলা দিয়ে আইনের আওতায় নিয়ে আসি।