দুস্থদের চাউলের কার্ড পেয়েছে সুস্থরা

কালিয়ায় ভিডব্লিউবি’র কার্ড বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ

এফএনএস (মোঃ মাসুমার রহমান; কালিয়া, নড়াইল) : | প্রকাশ: ১৭ অক্টোবর, ২০২৫, ০৬:৪৯ পিএম
কালিয়ায় ভিডব্লিউবি’র কার্ড বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ

নড়াইলের কালিয়ায় ভিডব্লিউবি কার্ড বিতরণে ব্যপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে।  দুস্থদের কার্ড না দিয়ে ওই কার্ড অর্থের বিনিময়ে পেয়েছেন সুস্থরা। খাশিয়াল ইউনিয়নে মোট ১৭০ জন ভিডব্লিউবি কার্ড ধারীদের মধ্যে  ইউপি সদস্যের স্ত্রী, প্রবাসীর স্ত্রীসহ সরকারি চাকুরীজীবিদের নাম রয়েছে।  উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নের একই হাল। আর এগুলো হয়েছে আত্মীয়করন, স্বজনপ্রীতি ও বিনিময়ের মাধ্যমে। সাংবাদিকদের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য।  

খাশিয়াল ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড শুড়িগাতী গ্রামের মেয়ে সরকারি নার্স শ্বশুর বাড়ী বাগেরহাটে থেকেও কার্ড পেয়েছে। আর ডুপ্লেক্স বাড়ীতে বসবাসকারী তারই একমাত্র সৌদি প্রবাসী ভাই এর স্ত্রীর নামেও হয়েছে ভিডব্লিউবি’র কার্ড। ১নং ওয়ার্ড সদস্য খান ওবায়দুরের সাথে কথা হলে তিনি জানান, চেয়ারম্যান এর সুপারিশে এসব হয়েছে। এ বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না।

২নং ওয়ার্ড সদস্য মিন্টু কুমার দাশ তার স্ত্রী টুকটুকি দাশের নামে করে নিয়েছেন ভিডব্লিউবির কার্ড। এর আগেও ওই ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে টিসিবির কার্ড কেলেংকারী, রাস্তা নির্মাণে ব্যাপক দুর্নীতিসহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে মিন্টু কুমার দাশের সাথে কথা হলে ভুল স্বীকার করে নিউজ না করার অনুরোধ করেন।

ওই ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার চায়না বেগমকে ৫ হাজার টাকা না দিলে কার্ড হয়না। চোরখালী আশ্রায়ন প্রকল্পের জনৈক মহিলা ওই মহিলা মেম্বারকে ভিডব্লিউবি কার্ডের জন্য ২ হাজার দিয়ে হাতে পায়ে ধরলেও টাকাটি ছুড়ে ফেলে দিয়ে ৫ হাজারের কম হলে হবেনা বলে চলে যান। তবে চায়না বেগম টাকা নেওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন।

বাঐসোনা ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের আবু মুসা গ্রীস প্রবাসী। বাঐসোনা বড়ঘাটে তার স্ত্রী রিক্তা বেগম ৩০ লক্ষ টাকায় মার্কেট কিনেছেন। এ ছাড়া গোপালগঞ্জসহ অন্যান্য জায়গায় জমি কিনেছেন। থাকেন দালান ঘরে।  কিন্তু দুস্থদের ৩০ কেজি চাউল না হলে তার চলছে না। একই ওয়ার্ডের লতিফা খানম স্বামী সাগর শেখ, মোসাঃ রাখি খানম স্বামী সিরাজুল ইসলাম ও লাবনী আক্তার স্বামী হাসেম মোল্যা এরা সকলেই সৌদী প্রবাসী ও পাঁকা ঘরে বসবাস করে।

বঞ্চিত দুস্থ পরিবারগুলো জানায়, সকল ইউনিয়নের চিত্র এমনই। টাকা নেই তো কার্ড নেই। দুস্থদের টাকা নেই তাই কার্ড পায়না, আর টাকাওয়ালারা ওই স্থান পুরণ করে দুস্থদের করছে আরো নিঃস্ব। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট সচেতন মহলের দাবি, সঠিক তদারকির মাধ্যমে ভিডব্লিউবি কার্ডসহ অন্যান্য ভাতার কার্ড যেন দুস্থরা পায়।  

এ বিষয়ে খাশিয়াল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিএম বরকত উল্লাহ কাছে জানতে চাইলে তিনি কোন বক্তব্য দিবেন না বলে জানিয়ে অপরাধীর বক্তব্য নিতে বলেন। উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা কেয়া দাশ বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে এ বিষয়ে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে