কালীগঞ্জে ৩ দিবস কে সামনে রেখে ক্ষেত পরিচর্যা করছেন ফুল চাষিরা

এফএনএস (টিপু সুলতান,কালীগঞ্জ,ঝিনাইদহ) : | প্রকাশ: ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫, ০২:৫৯ পিএম
কালীগঞ্জে ৩ দিবস কে সামনে রেখে ক্ষেত পরিচর্যা করছেন ফুল চাষিরা

ঝিনাইদহ কালীগঞ্জে বাণিজ্যিক ভাবে শুরু হয়েছে পৃথিবীর সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং উচ্চমূল্যের ফুল (কাট ফ্লাওয়ার) জারবেরা। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। যেকোনো ফুলের দোকানে গেলে আগে সবার নজর কাড়ে বাহারি রঙের জারবেরা। বাণিজ্যিক ভাবেই এই ফুলের চাষ শুরু করেছেন কালীগঞ্জ উপজেলার ত্রিলোচানপুর গ্রামের টিপু সুলতান। তিনি টিস্যু কালচারের মাধ্যমে তৈরি করা ১৭ বিঘা জমিতে জারবেরা ফুলের চাষ করেছেন।বিশেষ বিশেষ দিবসে এই ফুলের মূল্য অনেক বেড়ে যায়। সামনে পয়েলা বসন্ত, ভালোবাসা দিবস ও ২১ ফেব্ুয়ারি এরপরই আসছে স্বাধীনতা দিবস ও বাংলা নববর্ষ। এ সময় ফুলের দাম দ্বিগুণ হবে। এখন দুই দিন পর পর ফুল তুলে ঢাকার শাহাবাগে বিক্রি করছেন তিনি। বাজারে ফুলের ব্যাপক চাহিদা। সঠিক ভাবে পরিচর্যা করলে একটি গাছ থেকে বছরে ৮০ থেকে ৯০টি ফুল পাওয়া যায়।জারবেরা ফুলের নান্দনিক সৌন্দর্য ফুলের জগতে এক আলাদা মাত্রা যোগ করেছে। জারবেরা ফুল গাছ থেকে তোলার পর ১০ থেকে ১৫ দিন এবং গাছে ফোটা অবস্থায় ৩০ থেকে ৪৫ দিন পর্যন্ত সতেজ থাকে। সারা বছর ধরেই জারবেরা ফুল ফোটে। শুধু জারবেরাই নয় পাশাপাশি গ্লালোডিয়াস,চন্দ্রমল্লিকা, গোলাপ, লিলিয়াম চাষে নজর কেড়েছে টিপু সুলতানের বাগান। তিনি ১৭ বিঘা জমিতে গড়ে তুলেছেন এই ফুলের বাগান। এই অঞ্চলের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানেও পাঠানো হচ্ছে এই ফুল। ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালোবাসা দিবস, ২১ ফেবব্রুয়ারি ও পহেলা ফাল্গুনএই তিন দিবসকে সামনে রেখে প্রায় অর্ধকোটি টাকার ফুল বিক্রি করবেন বলে এমনটাই আশা করছেন। টিপু সুলতান ২০১৬ সালে তিন বিঘা জমিতে প্রথম জারবেরা ফুলের বীজ রোপণ করেন । বীজ আনা হয় পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে। ফুল খেতের ওপর ছাউনি দিতে একই দেশ থেকে আমদানি করা হয় বিশেষ ধরনের পলিথিন। যা তৈরি হয় ইউরোপের দেশ গুলোতে। রোপণের ৩ মাস পর গাছে ফুল আসতে শুরু করে। একটি গাছ একাধারে দুই থেকে তিন বছর ফুল দেয়।  চলতি বছর কালীগঞ্জ উপজেলার ৩৫০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের ফুলের চাষ করা হয়েছে ফুল চাষিরা। বিদেশি জাতের এই ফুলটি খেত থেকে তোলার পরও ১০ থেকে ১৫ দিন তাজা থাকে। বর্তমানে ১৭ বিঘা জমিতে বিভিন্ন ফুল ও ফলের চাষ করছেন।  গত ছয় মাসে ২০ লক্ষাধিক টাকার ফুল বিক্রি করা হয়েছে। বর্তমানে প্রতিদিন ৮ হাজার থেকে ১২ হাজার ফুল সংগ্রহ করেন। একটি ফুল ১০ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। চাহিদা মোতাবেম প্রতিদিন এই ফুল ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। বিশেষ করে গান্না বাজার ও বালিয়াডাঙ্গা ফুলের পাইকারি বাজারে গিয়ে দেখা যায়, কাঁকডাকা ভোরেই চাষিরা বিভিন্ন যানবাহনে তাদের উৎপাদিত বাহারি সব ফুল নিয়ে দাড়িয়ে রয়েছেন। হঠাৎ গরম পড়ায় বাজারে ফুলের জোগানও বেশি। গ্লাডিওলাস, রজনীগন্ধা, জারবেরা, চন্দ্র মল্লিকা, গাঁদা ফুলের দাম কিছুটা কম হলেও ঊর্ধ্বমুখী গোলাপের দাম। মাত্র দুই দিন ব্যবধানে ফুলের দাম বেড়েছে দ্বিগুণ। যে গোলাপ বিক্রি হয়েছে ৫ টাকা দরে। গত বৃহস্পতিবার  থেকে সেই গোলাপ বিক্রি হয়েছে ৮ থেকে ১০ টাকা দরে। ফুলচাষের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন সামনের এই তিন দিবসে কোটি টাকার ফুল বিক্রি হবে।ঢাকা থেকে ফুল কিনতে আসা ফুল ব্যবসায়ী আব্দুল মজিদ বলেন, সামনে ৩ টি দিব এ কারনে অগ্রিম ভাবে ফুল কনে যাচ্ছি।জারবেরা ও গোলাপ ফুলটা বেশি কিনেছি, অন্যান্য বারের তুলনায় এ বছর বেশি লাভ হবে বলে আশা করা যায়। কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহবুবুল আলম রনি বলেন, জার্মান পরিবেশবিদ ডাক্তার ট্রাগোট জারবের নাম অনুসরন করে ফুলটির নামকরণ করা হয়।