ঝিনাইদহ কালীগঞ্জ উপজেলার কোলা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন আল আজাদ তার ইউনিয়নের হাটবাজার উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ শুরু করতে গেলে ২০ শতাংশ টাকা দাবি করেন কালীগঞ্জ উপজেলার এলজিইডির প্রকৌশলী আহসান হাবিব। দাবিকৃত ঘুষের ১০ শতাংশ টাকা অর্থাৎ ৫০ হাজার টাকা নগদ প্রদান করে কাজ শুরু করতে হয়েছিল। মালয়াট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজিজুল খাঁ এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে একই অভিযোগ করে বলেন,আমার ইউনিয়নের হাটবাজার প্রকল্পের কাজের জন্য ২০ হাজার টাকা দাবি করেছিলেন তিনি। আমি টাকা দিয়ে কাজ করবো না বিধায় উনি হাট বাজার উন্নয়ন প্রকল্পের কাগজপত্র স্বাক্ষর করেননি। যে কারণে আমার ইউনিয়নের অদ্যবধি কাজ শুরু হয়নি। এ কর্মকর্তার তার বেপরোয়া ঘুষ বাণিজ্যের ব্যাপারে কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের আইন-শৃঙ্খলা মিটিং এবং সমন্বয় সভায় একাধিক বার বলার পরও স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টি আমলে নেয়নি। কালীগঞ্জ উপজেলা এলজিইডি দপ্তরের একাধিক ঠিকাদার এবং বাসা বাড়ির নকশা অনুমোদনের জন্য আসা কয়েকজন বলেন,আহসান হাবিবের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে বেপরোয়া ভাবে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ তোলেন। প্রত্যেকেরই অভিযোগ তিনি যোগদানের পর থেকে প্রকাশ্যে দরদাম করে ঘুষের টাকা আদায় করেন। প্রকৌশলীর বেপরোয়া ঘুষ বাণিজ্যে অতিষ্ট্য দপ্তরের সংশ্লিষ্ট সেবা প্রত্যাশিরা।
এই কর্মকর্তার ঘুষ বাণিজ্য থেকে রেহাই পেতে স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।কালীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলীকে অন্যত্র বদলীর জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরা। ত্রিলোচনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল হিজরা, রায়গ্রাম ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান আবু তাহের, মালিয়াট ইউপির চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান খান ও কাষ্টভাঙ্গা ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত লিখিত আবেদনে নানা বিষয়ের অভিযোগ উল্লেখ করেন। লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে বর্তমান উপজেলা প্রকৌশলী আহসান হাবীব কালীগঞ্জ উপজেলায় যোগদান করার পর থেকে বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কাজে ১৫% থেকে ২০% অর্থ অগ্রিম দাবি করায় বিভিন্ প্রকল্পের চলমান উন্নয়ন মূলক কাজ ব্যাহত হচ্ছে। এছাড়া ইউনিয়ন থেকে যে সকল ব্যক্তি তাদের বাড়ির প্লান অনুমোদনের জন্য আসে তাদের কাছ থেকে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা দাবি করেন।
ইমরান হোসেন নামে এক ঠিকাদার লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, গত ৪ ফেবব্রুয়ারি ১নং সুন্দরপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাচির নির্মাণের জন্য ২২ লক্ষ ৪৬ হাজার ৭৬২ টাকার দরপত্র আহবান করা হয়। তিনি জাকারিয়া এন্ড সন্স এর নামে কাগজ পত্র দাখিল করে টেন্ডারে অংশ গ্রহন করেন। টেন্ডার ওপেনিং এর ২ মিনিট আগে টেন্ডার বক্স না খুলেই উপজেলা প্রকৌশলী জানান কাজটি পেয়েছে রেখা কনস্ট্রাকশন। টেন্ডার ওপেন করার আগেই কিভাবে একজন ঠিকাদার কাজটির জন্য চুড়ান্তভাবে নির্বাচিত হয়। টাকার বিনিময়ে তিনি কাজটি রেখা কনস্ট্রাকশনকে দিয়েছে।
ঘুষ বাণিজ্যের বিস্তার অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী আহসান হাবিব বলেন,আমি কারো কাছ থেকে টাকা নিয়ে কোন কাজ করি না। এখন কেউ যদি এ ধরনের অভিযোগ করে থাকে তাহলে সেটা তার নিজস্ব অভিমত। আপনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে এব্যাপারে কথা বললে বিষয়টি পরিস্কার হয়ে যাবেন।
ঝিনাইদহ জেলা এলজিইডি'র নির্বাহী প্রক্যেশলী মনোয়ার উদ্দিন বলেন, আহসান হাবিবের ঘুষ বাণিজ্যের ব্যাপারে ভুক্তভোগীর লিখিত অভিযোগ পেলে নেওয়া হবে আইনগত ব্যবস্থা।