গাজায় হামলার প্রতিবাদে বাংলাদেশের রাস্তায় বিক্ষোভ

ঢাকায় অবস্থানরত মার্কিন নাগরিকদের সতর্ক থাকতে পরামর্শ যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের

নিজস্ব প্রতিবেদক : | প্রকাশ: ৭ এপ্রিল, ২০২৫, ০৭:৫৪ পিএম : | আপডেট: ৭ এপ্রিল, ২০২৫, ০৭:৫৪ পিএম
ঢাকায় অবস্থানরত মার্কিন নাগরিকদের সতর্ক থাকতে পরামর্শ যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের

ফিলিস্তিনের গাজায় চলমান সংঘাত এবং ইসরায়েলি বাহিনীর লাগাতার হামলার প্রতিবাদে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরে সোমবার দিনভর বিক্ষোভ হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের ডাকে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে অংশ নেন হাজারো মানুষ। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ঢাকায় অবস্থানরত যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের সতর্ক থাকতে পরামর্শ দিয়েছে ঢাকার মার্কিন দূতাবাস।

সোমবার (৭ এপ্রিল) দূতাবাসের ওয়েবসাইট, ফেসবুক পেজ এবং এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে এক সতর্কবার্তায় এ নির্দেশনা জারি করা হয়। সতর্কবার্তায় বলা হয়, গাজায় সংঘাতের প্রতিক্রিয়ায় ঢাকাসহ সারা দেশে শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হতে পারে। বিশেষ করে দূতাবাস অভিমুখে সমাবেশ ও সম্ভাব্য যানজটের কারণে সেদিন বিকেলের কনস্যুলার সেবা সীমিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

সতর্কবার্তায় মার্কিন নাগরিকদের উদ্দেশ্যে বলা হয়, “আপনারা বিক্ষোভ এবং বড় সমাবেশ এড়িয়ে চলুন। মনে রাখবেন, শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে আয়োজিত বিক্ষোভ পরিস্থিতির উত্তপ্ততায় সংঘর্ষ কিংবা সহিংসতায় রূপ নিতে পারে। তাই আশপাশের পরিবেশ সম্পর্কে সচেতন থাকুন, স্থানীয় সংবাদমাধ্যম থেকে আপডেট জেনে নিন এবং ব্যক্তিগত নিরাপত্তা পরিকল্পনা পর্যালোচনা করুন।”

সতর্কবার্তায় আরও কিছু করণীয়ের নির্দেশনাও দেওয়া হয়:

বিক্ষোভের এলাকা এড়িয়ে চলুন

বড় জনসমাগম থেকে দূরে থাকুন

হালনাগাদ তথ্যের জন্য স্থানীয় সংবাদমাধ্যম পর্যবেক্ষণ করুন

মোবাইল ফোন সর্বদা চার্জে রাখুন এবং সহজে যোগাযোগযোগ্য থাকুন

সোমবার সকাল থেকেই ঢাকার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ‘নো ওয়ার্ক, নো স্কুল’ কর্মসূচির আওতায় পাঠদান ও পরীক্ষা বন্ধ রাখা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজসহ অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে ইসরায়েল বিরোধী স্লোগান দেন এবং গাজায় গণহত্যা বন্ধের দাবি জানান।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, শাহবাগ, বায়তুল মোকাররম, কুরিল বিশ্বরোড ও নতুনবাজারসহ একাধিক স্থানে বিক্ষোভ মিছিল হয়। দুপুরে গুলশানে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের সামনেও অবস্থান নেয় শিক্ষার্থীদের একটি দল। সেখানে তারা মার্কিন সরকারের প্রতি আহ্বান জানান—ইসরায়েলের দমননীতিকে সমর্থন না দিয়ে গাজায় মানবতা রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের।

এ সময় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। মহাসড়কে শিক্ষার্থীদের অবস্থান চলাকালে সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ব্যাপকভাবে টহল দেয়। ফুটপাতে বা রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা পথচারীদেরও তল্লাশি করা হয়।

বিশ্বব্যাপী ঘোষিত ‘গ্লোবাল স্ট্রাইক ফর গাজা’ কর্মসূচির সঙ্গে সংহতি জানিয়ে বাংলাদেশেও সোমবারের বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়। ফিলিস্তিনপন্থী সংগঠনগুলোর আহ্বানে বিশ্বের নানা দেশে এই কর্মসূচি পালিত হয়েছে, যার আওতায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মক্ষেত্রে ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়।

বাংলাদেশে ছাত্রদল, ছাত্র শিবির, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদসহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে সকল শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রাখার আহ্বান জানায়। এতে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও সক্রিয়ভাবে অংশ নেন।

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW
আপনার জেলার সংবাদ পড়তে