ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে আজ শনিবার মিরপুরে জমজমাট এক ম্যাচ উপহার দিল পারটেক্স ও অগ্রণী ব্যাংক। বৃষ্টির শঙ্কা থাকলেও ম্যাচটি কোনো বাধা ছাড়াই শেষ হয়, যেখানে শেষ বলের রোমাঞ্চে ১ উইকেটে জয় তুলে নেয় পারটেক্স। ম্যাচের নায়ক ছিলেন মোহাম্মদ রাকিব, যিনি একাই দলকে টেনে নিয়ে যান জয়ের বন্দরে।
অন্যদিকে, বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে রূপগঞ্জ টাইগার্সের বিপক্ষে ব্রাদার্স ইউনিয়নের এবং পাশের মাঠে গুলশান ক্রিকেট ক্লাবের বিপক্ষে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের ম্যাচ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বৃষ্টি ও আলোক স্বল্পতার কারণে কোনো ম্যাচেই টস পর্যন্ত হয়নি।
বৃষ্টিতে ম্যাচ পণ্ড হওয়ায় সুপার লিগে ওঠার দৌড়ে ধাক্কা খেল গুলশান ও লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। গুলশান জয় পেলে পয়েন্ট তালিকায় তিনে উঠে আসতে পারত, আর লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ জয় পেলে পাঁচে পৌঁছাতে পারত। বর্তমানে সাত ম্যাচে ৯ পয়েন্ট নিয়ে গুলশান আছে পাঁচ নম্বরে, আর সমান ম্যাচে ৭ পয়েন্ট নিয়ে লিজেন্ডস আছে সাত নম্বরে। সুপার লিগে খেলবে শীর্ষ ছয় দল।
মিরপুরে ম্যাচের শুরুতে টস হেরে ব্যাট করতে নামে অগ্রণী ব্যাংক। নির্ধারিত ৫০ ওভারে শেষ বলে অলআউট হওয়ার আগে দলটি তোলে ২১৮ রান। ব্যাটিংয়ে সর্বোচ্চ ৮৭ বলে ৬৪ রান করেন মার্শাল আইয়ুব। ওপেনার সাদমান ইসলাম ৩১ রান করেন ৪৮ বলে, আর অধিনায়ক ইমরুল কায়েস করেন ৩৯ বলে ১৯ রান। পারটেক্সের বোলিং আক্রমণে সবচেয়ে সফল ছিলেন নাঈম ইসলাম জুনিয়র, যিনি ১০ ওভারে ৪১ রানে ৩ উইকেট নেন। এছাড়া মোহর শেখ, আলাউদ্দিন বাবু ও জাওয়াদ রোয়েন ২টি করে উইকেট দখল করেন।
রান তাড়ায় নেমে পারটেক্স শুরুতেই চাপে পড়ে। মাত্র ৩ রানে ওপেনার জয়রাজ শেখ আউট হয়ে যান। এরপর ৯১ রানের মাথায় চতুর্থ উইকেট হারায় দলটি। তবে সেখান থেকে ৭০ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটি গড়েন আহরার আমিন ও মোহাম্মদ রাকিব। আহরার ৪৭ বলে ২২ রান করে বিদায় নিলে, রাকিব জাওয়াদ রোয়েনকে (১৮) নিয়ে ষষ্ঠ উইকেটে ৪২ রান যোগ করেন।
কিন্তু ২০৩ থেকে ২০৯—এই ৬ রানের ব্যবধানে ৪ উইকেট হারিয়ে কঠিন পরিস্থিতিতে পড়ে যায় পারটেক্স। তখন ১৬ বলে ১২ রান দরকার ছিল। শেষ ওভারে তাদের হাতে ছিল মাত্র ১ উইকেট, প্রয়োজন ছিল ১০ রান।
প্রথম বলে কোনো রান আসেনি, কিন্তু দ্বিতীয় বলে চার মারেন রাকিব। তৃতীয় বলে তার সহজ ক্যাচ ছেড়ে দেন নাঈম হাসান। এরপর চতুর্থ বলে আরেকটি চার হাঁকান তিনি, ফলে ম্যাচ সমতায় চলে আসে। পঞ্চম বলে ১ রান নিয়ে শেষ ব্যাটসম্যান আবদুল গাফফারকে স্ট্রাইকে দেন তিনি। শেষ বলে দরকার ছিল মাত্র ১ রান। ব্যাট ছুঁয়ে দ্রুত দৌড় দেন গাফফার, দুই ব্যাটসম্যানই নিরাপদে পৌঁছালে উল্লাসে মেতে ওঠে পারটেক্স শিবির।
ম্যাচের নায়ক রাকিব ১০৩ বলে ৫ চার ও ৫ ছক্কায় ৮০ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন। তার অসাধারণ ব্যাটিং পারটেক্সকে এনে দেয় গুরুত্বপূর্ণ জয়। সাত ম্যাচে এটি ছিল তাদের দ্বিতীয় জয়, আর ১০ পয়েন্ট নিয়ে তারা এখন পয়েন্ট তালিকার চতুর্থ স্থানে।