পবিত্র রমজান মাস জুড়ে পটুয়াখালীর শহরের ফোর লাইনের পাশে পটুয়াখালীবাসী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের উদ্যোগে মাসব্যাপী গরিবের ইফতার খানার আয়োজন করা হয়েছে। প্রতিদিন ১০০ থেকে ২০০ রোজাদারকে ইফতার পরিবেশন করে যাচ্ছে এই সংগঠন। দিনমজুর, পথচারী, শ্রমজীবী ও দরিদ্র মানুষ এখানে ইফতার করে থাকেন। সংগঠনটির এই মহতী উদ্যোগ কেবল পটুয়াখালীতেই নয়, জেলার বাইরেও ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে। স্থানীয় এবং প্রবাসী বিত্তবানদের সহযোগিতায় এই ইফতার কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
ইফতার মেনুতে থাকে ১৩ ধরনের আইটেমÑছোলা, মুড়ি, পেঁয়াজু, চপ, বেগুনি, জিলাপি, খেজুর, শসা, কলা, পেয়ারা, শরবতসহ নানান সুস্বাদু খাবার। শুধু ইফতারই নয়, ইফতার শেষে রোজাদারদের নিয়ে সম্মিলিতভাবে মাগরিবের নামাজ আদায়ের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। পটুয়াখালী পৌরসভার সহযোগিতায় একজন ইমাম নিয়োগ করা হয়েছে এবং ওযু খানা নির্মাণ করা হয়েছে।
আসরের নামাজের পর থেকেই সংগঠনের সদস্যরা প্রতিদিন রাস্তায় ইফতার সাজিয়ে রোজাদারদের জন্য অপেক্ষা করেন। তাদের আন্তরিকতা আর নিষ্ঠা এ আয়োজনকে আরো বিশেষ করে তুলেছে। একজন দিনমজুর, শফিক মিয়া, আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, “শহরে কাজ শেষে যখন বাড়ি ফিরি, তখন দেখি রাস্তার পাশে আমাদের জন্য ইফতার সাজানো। এই ইফতার পেয়ে আমাদের অনেক উপকার হয়।”
রিকশাচালক হাবিব রহমান বলেন, “বর্তমান দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে ভালোভাবে ইফতার করা আমাদের জন্য কঠিন। এখানে এসে বিনামূল্যে এত আইটেমের ইফতার পেয়ে আমি খুব খুশি। প্রতিবছর এখানেই ইফতার করি।” সংগঠনের সহ-সভাপতি সাইদুর রহমান রাব্বি বলেন, “প্রতিবছর রমজানে আমরা প্রতিদিন ২০০ থেকে ৩০০ মানুষের জন্য ইফতারের ব্যবস্থা করি। পুরো অর্থই আসে স্থানীয় ও প্রবাসী বিত্তবানদের সহযোগিতায়। এই ইফতার আয়োজন করতে পেরে আমরা গর্বিত।”
পটুয়াখালী পৌরসভার প্রশাসক জুয়েল রানা বলেন, রাস্তার পাশে ইফতারের আয়োজন এটা সত্যি ই প্রশংসার দাবিদার। পৌরসভার পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হয়েছে। পুরো রমজান মাস জুড়ে এই ইফতার কার্যক্রম যেন চলমান থাকে সে বিষয়ে যে কোন সহযোগিতা করব। উল্লেখ্য, শিক্ষার্থীদের নিয়ে ২০১০ সালে গঠিত 'পটুয়াখালীবাসী' সংগঠন দীর্ঘদিন ধরে পটুয়াখালীসহ প্রান্তিক পর্যায়ে মানুষের সেবা ও কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে। জেলার বিভিন্ন ক্লান্তিকালে তাদের উদ্যোগ প্রশংসিত এবং অনুকরণীয় হয়ে উঠেছে।