বিশ্বের ঐতিহ্য সুন্দরবনের অপরুপ সৌন্দর্য দেখার জন্য কাটকাটায় মানুষের ঢল

এফএনএস (মোঃ রিয়াছাদ আলী; কয়রা, খুলনা) : : | প্রকাশ: ১ এপ্রিল, ২০২৫, ০৫:৫৮ পিএম
বিশ্বের ঐতিহ্য সুন্দরবনের অপরুপ সৌন্দর্য দেখার জন্য কাটকাটায় মানুষের ঢল

পবিত্র ঈদ উপলক্ষে নাড়ীর টানে বাড়ি ফিরেছেন কয়রার অনেক মানুষ। প্রিয়জনের সাথে ঈদ শেষ করে অনেকেই পরিবার, আত্বীয়স্বজন ও বন্ধু বান্ধবের সাথে একটু ঘুরতে যাবেই এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু কোাথায় ঘুরবে এমন জায়গা বেছে নেওয়া মুসকিল। তাই একটু বিনোদনের জায়গা হিসাবে সুন্দরবন সংলগ্ন কাটকাটা লঞ্চঘাটে মানুষের পদচারনায় ছিল মুখরিত। একটু হিমেল বাতাশ খেতে আর নদীর পাড় হতে বিশ্বের ঐতিহ্য সুন্দরবনে অপরুপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে হাজির হয় শত শত মানুষ। মানুষের ঢল ছিল চোখে পড়ার মতো। এ অঞ্চলের মানুষের ধারনা ইতিপূর্বে কখনও এই এলাকায় এত মানুষ তারা দেখেনি। শুধু কয়রার মানুষ নয় দেশের বিভিন্ন অঞ্চল হতে এখানে ছুটে এসেছে কপোতাক্ষ আর শাকবাড়িয়া নদী দেখার পাশাপাশি সুন্দরবনের সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য। ঈদের ছুটিতে পর্যটকদের বরণ করতে এবার সব সময় প্রস্তুতি ছিল  সুন্দরবন। খুলনার ৃৃকয়রা উপজেলা থেকে সুন্দরবন ভ্রমনের  অন্যতম পর্যটন স্পট হলো সুন্দরবনের শেখের টেক,কালাবগী ইকোট্যুরিযম কেন্দ্র,  নির্মাণাধীন কেওড়াকাটা পর্যটন কেন্দ্র, শিবসা নদীর তীরে রাজা প্রতাপাদিত্যের  প্রচীন দূর্গের ধ্বংসাবশেষ ৪০০ বছর আগের স্থাপনা, নীলকমল,  কাটকাটা পর্যটন স্পট, এসব আকর্ষণী স্থান দেখার জন্য এখানে লোকের সমাগম ঘটে। কাটকাটা এলাকার বিশিষ্ট সমাজসেবক তাজমিনুর বলেন, এবার ঈদে সুন্দরবনের কাশিয়াবাদ স্টেশন থেকে অনুমতিপত্র ( পাস) কাটকাটা লঞ্চঘাট থেকে  খুব কম সময়ে একদিনের জন্য সুন্দরবনের শেখের টেক,  শিবসা নদীর তীরে রাজা প্রতাপদিত্যের  প্রচীন দূর্গের ধ্বংসাবাশেষ, গাব বাগান, গহীন সুন্দরবনের শেখের খাল,ও বনের মধ্যে ৪০০ বছরের পুরনো স্থাপনা ও সুন্দরবনের নৈসার্গীক দৃশ্য উপভোগ করতে পেরেছেন। তিনি আরও বলেন, খুলনা জেলা শহর থেকে এসে চুকনগর- পাইকগাছা হয়ে  কয়রা থেকে খুব কম সময়ে সুন্দরবন ভ্রমন করা যায়। কয়রায় নির্মাণাধীন একমাত্র পর্যটন স্পট ' কেওড়াকাটা পর্যটন কেন্দ্রের কাজ শেষ হলে এই অঞ্চলে পর্যটন শিল্পের দার আরও উন্মোচিত হবে। সেচ্ছাসেবী সংগঠন আইসিডির প্রতিষ্ঠাতা আশিকুজ্জামান আশিক বলেন, কাটকাটার পাশাপাশি কয়রা সদর থেকে ৬ কিলোমিটার দূরে  ৬নং কয়রা গ্রামে প্রস্তাবিত কেওড়াকাটা পর্যটন কেন্দ্রের কাজ ইতিমধ্যে চলমান আছে। এখানে গেলে পর্যটকরা পর্যটন স্পটের গাঁ ঘেঁসে গড়ে উঠা ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক( আদিবাসি) সম্প্রদায়ের  কালচার সম্পর্কে জানতে পারবে। সরেজমিনে গত মঙ্গলবার  সুন্দরবন সংলগ্ন কয়রার  কাটকাটা এলাকায় গিয়ে দেখা যায় নদীর তীরে গড়ে ওঠা ম্যানগ্রোভ ক্যাফে এন্ড রেস্টুরেন্টে ঈদকে সামনে রেখে সাজসজ্জায় রেখেছে ভরপুর। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক জাহিদ হাসান বলেন, ঈদ উপলক্ষে  আমরা রেস্টুরেন্ট পরিষ্কার পরিছন্ন রাখতে পেরেছি । যাতে পর্যটকরা এসে স্বাচ্ছন্দ্যভাবে আসতে পারে। এ বছর প্রচুর বেচাকেনা হয়েছে। অন্য বারের তুলনায় এবার সুন্দরবন ভ্রমণে পর্যটক এসেছে অনেক বেশি।তিনি আরও বলেন, কয়রার কাটকাটা লঞ্চঘাট  থেকে সুন্দরবনের শেখের টেক ও কালাবগী ইকোট্যুরিজম কেন্দ্র গুলো সহজে একদিনের মধ্যে ভ্রমন করা সম্ভব হওয়ায় লোকজনের সমাগম বেশি ছিল। কয়রা কপোতাক্ষ কলেজের সাবেক অধ্যাপক আ,ব,ম আব্দুল মালেক বলেন। দেশের সর্ব দক্ষিনে খুলনার কয়রায় পর্যটন শিল্পের অপর সম্ভাপনা থাকলেও যোগাযোগ ব্যাবস্থা ও প্রচার প্রচারনায় পিছিয়ে থাকার করনে পর্যটকরা যানেনা যে এই অঞ্চল দিয়ে খুব সহজে সুন্দরবন ভ্রমন করা যায় । কিন্তু পর্যায়ক্রমে সেটা জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।  খুলনা জেলা শহর থেকে পর্যটকরা  মাত্র চার ঘন্টায় কয়রার সম্ভাবনাময়  পর্যটন স্পটগুলোতে পৌছাতে পেরেছে। তবে  যাতায়াত ব্যবস্থা উন্নতি ও ভালো মানের হোটেল এবং আবাসিক হোটেল স্থাপন করা গেলে পর্যটকের সাড়া পড়তো পর্যাপ্ত । পাশাপাশি  সরাসরি বাস (গেটলক) সার্ভিস কাটকাটা থেকে চালু করা যায় তাহলে আরো কম সময়ে পর্যটকরা ভ্রমন করতে পারবেন । কাটকাটা রিভার ভিউ ক্যাফে এন্ড রেস্টুরেন্টের সত্ত্বাধিকারী আলমগীর হোসেন জানান, আমাদের রেস্টুরেন্টে প্রতিদিন ভালোই বেচাকেনা হচ্ছে। তবে এবার ঈদের লম্বা ছুটিতে সুন্দরবন ভ্রমনে ব্যাপক লোকজনের সমাগম ঘটেছে  । ইতোমধ্যে বিভিন্ন স্থান থেকে সুন্দরবন ভ্রমনের জন্য ট্রলার বুকিং দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় যাচ্ছে ঘুরতে। স্থানীয় পর্যটন ব্যবসায়ী শেখ রিপন বলেন , এবার ঈদের ছুটিতে ়আগেভাগে। তাদের স্পিড বোর্ড, ট্রলার  বুকিং হয়ে যায়।  ভ্রমন পিপাসুদের আগ্রহ দেখে তিনি আরও বলেন অন্যান্য বারের তুলনায় এবার সুন্দরবনের কাটকাটা এলাকায় অনেক বেশি পর্যটকের উপস্থিত ছিলো।

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW
আপনার জেলার সংবাদ পড়তে