বৈশাখের রঙে রঙিন বরিশাল : উৎসবে মাতোয়ারা নারী-পুরুষ

এফএনএস (বরিশাল প্রতিবেদক) : : | প্রকাশ: ১৪ এপ্রিল, ২০২৫, ০৪:২৬ পিএম : | আপডেট: ১৪ এপ্রিল, ২০২৫, ০৪:২৬ পিএম
বৈশাখের রঙে রঙিন বরিশাল : উৎসবে মাতোয়ারা নারী-পুরুষ

পহেলা বৈশাখ বাঙালির প্রাণের উৎসব। আর এই উৎসব যেন নতুন প্রাণ ছুঁয়ে দিয়েছে গোটা বরিশালকে। সকাল গড়াতেই শহরের অলিগলি থেকে শুরু করে প্রধান সড়ক, পার্ক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রগুলোতে উপচে পড়া ভিড় বেড়েছে। সব বয়সের নারী-পুরুষ একসাথে বৈশাখের উৎসবে মেতে উঠেছেন। দিনভর চলে প্রাণের এ উৎসব।

সকাল নয়টায় বরিশাল সার্কিট হাউজ থেকে শুরু হওয়া বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রায় বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন, শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ হাতে মুখোশ, কাঁধে ঢাক-ঢোল নিয়ে অংশগ্রহণ করেন। মঞ্চে গান, কবিতা, নৃত্য আর পটচিত্রে ভরপুর হয় সার্কিট হাউস চত্বর ও বেলস পার্ক। ‘নববর্ষের ঐক্যতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’ শ্লোগানে মুখর ছিল গোটা বরিশাল। আর গ্রামীণ জীবনের প্রতিচ্ছবি হিসেবে পালকি, চাষী, জেলে আর ঐতিহ্যবাহী সরঞ্জামগুলোর ছিল প্রধান প্রদর্শনী।

বৈশাখ মানেই যেন পান্তা-ইলিশ আর সংস্কৃতির বন্ধন। তাই নগরীর রেস্টুরেন্টগুলোতে আয়োজন করা হয়েছিলো বৈশাখী স্পেশাল মেন্যু। ইলিশ-পান্তা, বেগুন ভাজি, খেজুরের পায়েসে জমে ওঠে বৈশাখের স্বাদ। অনেকেই পরিবারসহ হোটেলে কিংবা বাড়িতে আয়োজন করেন দিনব্যাপী ভোজ।

সাংস্কৃতিক আয়োজনে রঙ ছড়াতে বরিশাল নগরীর বেলসপার্কে স্থাপন করা হয় প্রায় অর্ধশত স্টল। যেখানে লোকজ শিল্প, পণ্য ও খাবারের সমাহার ছিলো। পাশাপাশি সার্কিট হাউজ চত্বরে বরিশাল সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, জাসাস, হেরারশ্মি, অমৃত লাল দে কলেজ, বিএম স্কৃল, শিল্পকলা একাডেমি সব জায়গায় দিনভর চলে একের পর এক বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বরিশাল প্লানেট ওয়ার্ল্ড শিশু পার্কে সকাল থেকে শুরু হয়ে দুপুর পর্যন্ত চলে প্রাত ভ্রমণ পরিষদের বৈশাখী সাংস্কৃতিক আয়োজন।

জেলার বাহিরে বৈশাখের সবচেয়ে বড় আয়োজন করা হয়েছিলো গৌরনদীতে। উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পৌর প্রশাসক মো. আবু আবদুল্লাহ খানের নেতৃত্বে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা শেষে বাঙালিয়ানা খাবারের আয়োজন, দিনভর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শিশুদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়েছে।

শোভাযাত্রায় হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য \ সময়ের সাথে সাথে হারিয়ে গেছে বাঙালির অনেক ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি। হারিয়ে যাওয়া সেসব ঐতিহ্যের অন্যতম হলো উপকরণ হলো “পালকি”। এবারের নববর্ষের শোভাযাত্রায় হারিয়ে যাওয়া পালকি ফিরিয়ে এনে এক ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পৌর প্রশাসক মো. আবু আবদুল্লাহ খান। শোভাযাত্রায় সবার নজর কেড়ে নিয়েছে ফুল ও আলপনায় সজ্জিত এই পালকি। পালকির ভিতরে স্থান পায় একটি শিশু, যার পোশাকে ছিল গ্রামীণ নববর্ষের প্রতীকী রূপ। এছাড়াও কৃষকরা পাকা ধানের ছড়া নিয়ে শোভাযাত্রায় অংশগ্রহন করে। ফলে পুরো শোভাযাত্রাটি বাঙালির ঐতিহ্যে প্রানবন্ত হয়ে ওঠে।

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW
আপনার জেলার সংবাদ পড়তে