শেরপুরে আলুর বাম্পার ফলন : হিমাগার সংকটে বিপাকে কৃষক

এফএনএস (শাকিল আহমেদ শাহরিয়ার; শেরপুর) : : | প্রকাশ: ১৫ মার্চ, ২০২৫, ০৭:৫২ পিএম
শেরপুরে আলুর বাম্পার ফলন : হিমাগার সংকটে বিপাকে কৃষক

শেরপুরে এবার আলুর বাম্পার ফলন হলেও হিমাগার সংকটের কারণে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। সংরক্ষণের সুযোগ না পেয়ে কৃষকরা বাধ্য হয়ে কম দামে আলু বিক্রি করছেন, যা তাদের জন্য বড় ধরনের লোকসানের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।  

কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে শেরপুরে ৫ হাজার ২৯৬ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ৫ হাজার ৩১৭ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯৩ হাজার ৮১৬ টন। এবার ফলন হয়েছে ৯৫ হাজার ৭০৬ টন। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১ হাজার ৮৯০ টন বেশি। অথচ জেলার হিমাগারগুলোর মোট ধারণক্ষমতা মাত্র ১৩ হাজার মেট্রিক টন।

শেরপুর সদর ও নকলা উপজেলায় বিএডিসির (বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন) দুটি সরকারি হিমাগার রয়েছে, যার সম্মিলিত ধারণক্ষমতা ৩ হাজার মেট্রিক টন। তবে এগুলো শুধু চুক্তিবদ্ধ চাষিদের বীজ আলু সংরক্ষণের জন্য ব্যবহার করা হয়। জেলার একমাত্র বেসরকারি হিমাগার ‘তাজ কোল্ড স্টোরেজ’-এর ধারণক্ষমতা ১০ হাজার মেট্রিক টন, যা ইতোমধ্যেই পূর্ণ হয়ে গেছে। এতে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। বাধ্য হয়ে তারা আলু কম দামে বিক্রি করছেন, কারণ সংরক্ষণের সুযোগ নেই। পাইকারি বাজারে বর্তমানে আলুর দাম ২০-২২ টাকা কেজি, যা উৎপাদন খরচের তুলনায় কম।

শেরপুর সদর উপজেলার লছমনপুর ইউনিয়নের কৃষক মো. গোলাম মোস্তফা বলেন, ১৮ বিঘা জমিতে বীজ আলুর চাষ করেছি। আল্লাহর রহমতে ভালো ফলন হয়েছে। কিন্তু বিএডিসি শুধু নির্দিষ্ট মানের (গ্রেড এ ও বি) আলু নিচ্ছে, বাকিটা সংরক্ষণ করার জায়গা নেই। তাই কম দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে, এতে বড় লোকসান গুনতে হবে। যদি সরকার রপ্তানির উদ্যোগ নিতো, তবে কৃষকদের অনেক সুবিধা হতো।

বেসরকারিভাবে স্থাপিত তাজ কোল্ড স্টোরেজের ম্যানেজার রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ধারণক্ষমতার তুলনায় আলু বেশি হওয়ায় অনেক কৃষককে ফিরিয়ে দিতে হচ্ছে।’

জেলা কৃষি বিভাগের উপপরিচালক কৃষিবিদ শাখাওয়াত হোসেন বলেন, লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এবার বেশি আলু উৎপাদন হয়েছে। আর বেশি আলু উৎপাদন হওয়ায় হিমাগারে সংরক্ষণের চাপ কিছুটা বেড়েছে। কৃষকরা স্বল্প মেয়াদে বাড়িতে আলু সংরক্ষণ করতে পারেন, তেমন ক্ষতি হবে না। তবে দীর্ঘমেয়াদি সংরক্ষণের জন্য হিমাগারে রাখা জরুরি। তিনি আরও বলেন, জেলায় প্রচুর সবজি উৎপাদন হয়। সবজির জন্য একটি হিমাগার নির্মাণের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। এটি বাস্তবায়ন হলে কৃষকদের দুর্ভোগ কমে যাবে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের সঙ্গে যোগাযোগ ও সহযোগিতা করছি।

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW
আপনার জেলার সংবাদ পড়তে