মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে একই স্থানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও ইসালামিক অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার কোলাপাড়া ইউনিয়নের দক্ষিণ পাইকসা গ্রামের বটতলা খেলার মাঠে একই দিনে পৃথক দুটি অনুষ্ঠানের ঘোষণা ঘিরে উত্তেজনা বিরাজ করছে। একদিকে তাফসিরুল কোরআন মাহফিল, অন্যদিকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানÑউভয় আয়োজকই শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) বিকেলে একই স্থান ব্যবহার করার ঘোষণা দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরের পর থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া পোস্টার অনুযায়ী, সর্বদলীয় ওলামায়ে কেরাম ও তৌহিদী জনতার ব্যানারে ওই মাঠে অনুষ্ঠিতব্য তাফসিরুল কোরআন মাহফিলে সভাপতিত্ব করবেন মধুপুর পীর আল্লামা আব্দুল হামিদ। বক্তা হিসেবে থাকবেন আল্লামা খলিল আহমদ কোরাইশী, আল্লামা ওবায়দুল্লাহ হামজা, আল্লামা জুনায়েদ আল হাবিবসহ আরও অনেকে।
অন্যদিকে, দক্ষিণ পাইকসা গ্রামবাসীর উদ্যোগে একই স্থানে অনুষ্ঠিতব্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পোস্টারে দেখা যায়, বিকালে গান পরিবেশন করবেন সঙ্গীতশিল্পী ফেরদৌস ওয়াহিদ, খুরশীদ আলম, হাবিব ওয়াহিদ, কেয়া বাঙালি, রুপা, পুতুলসহ অন্যান্য শিল্পীরা।
তাফসিরুল কোরআন মাহফিল আয়োজনের বিষয়টি নিশ্চিত করে মধুপুর পীরের ছেলে মাওলানা ওবায়দুল্লাহ কাসেমি বলেন, “পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী কাল মাহফিল হবে এবং আমার বাবা উপস্থিত থাকবেন বলে আয়োজকদের কথা দিয়েছেন।”
অন্যদিকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজক কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী মামুন আহমেদ মৃধা জানান, “আমরা ১০ এপ্রিল পুলিশের বিশেষ শাখা থেকে অনুমতি নিয়েছি। অথচ হঠাৎ করে সেখানে ওয়াজ মাহফিলের ঘোষণা এলো, আয়োজকদের কারও নাম-পরিচয় জানা যাচ্ছে না।”
এদিকে বৃহস্পতিবার বিকেলে শ্রীনগর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সর্বদলীয় ওলামায়ে কেরাম ও তাওহিদী জনতার আয়াজনে ইসরায়েল বিরোধী প্রতবিাদ মহা সমাবশ অনুষ্ঠতি হয়। এতে সভাপতত্বি করেন মধুপুর পীর সাহেব আল্লামা আব্দুল হামিদ।
এই সমাবেশ থেকে শুক্রবারের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বন্ধের ঘোষনা দেওয়া হয়েছে।
এ সময় বক্তব্য রাখেন আয়াজক কমিটির আহবায়ক মুফতী ইউনুস আলী কাশেমী, মুফতী আশরাফ আলী কাশেমী, মুফতী শাহাদাৎ হাসাইন লস্করপুরী, মাওলানা হোসাইন আহমদ ইসহাকী, মুফতি জাকির হাসাইন, মাওলানা ফয়জুল্লাহ উসমানী, মাওলানা আলী হায়দার, মাওলানা আব্দুর রহমান, মাওলানা আল-আমিন ও মাকসুদ হাসন প্রমুখ।
বিশ্ব সস্ত্রাসী ইসরাইলিদের অমানবিক ও বর্বরোচিত হত্যাকান্ড বন্ধসহ ৯টি দাবী তুলে ধরেন বক্তারা। এ সময় ইসরায়েলি পণ্য বয়কটের ডাক দেন। উপজলার বিভিন্ন স্থান থেকে ধর্মপ্রাণ মুসল্লীরা প্রতিবাদ বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে মহাসমাবেশে যোগ দেন।
শ্রীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাকিল আহমেদ বলেন, “কে বা কারা কী উদ্দেশ্যে পোস্টারিং করেছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনাস্থলে তাদের কোনো তৎপরতাও নেই।”
এমন পরিস্থিতিতে এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। তবে প্রশাসন বলছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।