দীর্ঘদিনের অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা ও স্বার্থান্বেষী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে সিলেট উইমেন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালনা পর্ষদ বিলুপ্ত করে প্রশাসক নিয়োগ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। নতুন প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোছা. শারমিন সুলতানা। নারী উদ্যোক্তারা দীর্ঘদিন ধরে চেম্বারের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাবের বিরুদ্ধে সরব ছিলেন। অভিযোগ উঠেছিল, সাবেক সভাপতি স্বর্ণলতা চেম্বারকে ব্যক্তিগত স্বার্থে ব্যবহার করেছেন এবং নির্দিষ্ট একটি গোষ্ঠীর জন্য সুবিধা নিশ্চিত করেছেন। গত ৫ আগষ্ট আওয়ামী সরকার পতন ও হাসিনার দেশ ত্যাগের সাথে সিলেট উইমেন্স চেম্বার সভাপতি স্বর্ণলতা রায়ও নিরুদ্দেশ।
স্বর্ণলতা দাশের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ
১. অর্থিক অনিয়ম: চেম্বারের তহবিল থেকে স্বেচ্ছাচারীভাবে অর্থ ব্যয়, যেখানে কোনো হিসাব বা জবাবদিহিতা ছিল না।
২. একনায়কতন্ত্র ও স্বেচ্ছাচারিতা: চেম্বারের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে সাধারণ সদস্যদের মতামত উপেক্ষা করা এবং এককভাবে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ।
৩. ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিল: নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বরাদ্দ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নিজের অনুগত ব্যক্তিদের মধ্যে বণ্টন করা।
৪. রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা ও সুবিধাভোগিতা: বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে চেম্বারের ক্ষমতা ব্যবহার করে রাজনৈতিক সুবিধা ভোগ করা।
৫. সংগঠনের স্বার্থবিরোধী কাজ: চেম্বারের নিয়মনীতি উপেক্ষা করে স্বার্থান্বেষী কর্মকাণ্ড পরিচালনা।
তবে, স্বর্ণলতা রায় তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলোকে ‘একটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র’ বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, "আমি সবসময় চেম্বারের উন্নয়নের জন্য কাজ করেছি। কিছু স্বার্থান্বেষী মহল আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।"
নারী উদ্যোক্তারা আশা করছেন, প্রশাসক নিয়োগের মাধ্যমে চেম্বারের পুরনো অনিয়মের অবসান হবে এবং একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরে আসবে। তারা চান, ভবিষ্যতে যেন স্বর্ণলতা দাশের মতো কেউ চেম্বারকে ব্যক্তিগত স্বার্থে ব্যবহার করতে না পারে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই পরিবর্তন সিলেট উইমেন চেম্বার অব কমার্সের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়, যা নারীদের ব্যবসায়িক সুযোগ আরও প্রসারিত করতে ভূমিকা রাখবে।