মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় দাম্পত্য কলহের জেরে বিষপানে আত্মহত্যা করেছে আসমা আক্তার (৩৮) নামেচার সন্তানের জননী। তবে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করায় নিহতের স্বামীর শাস্তি দাবি করেছে তার স্বজনরা। নিহত আসমা আক্তার উপজেলার হোসেন্দী ইউনিয়নের রঘুরচর গ্রামের মহসিনের স্ত্রী বলে জানা গেছে। গেল বুধবার মাঝরাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় সে মারা যায়। এর আগে গত ২৮ নভেম্বর উল্লেখিত গ্রামে স্বামীর বাড়িতে আসমা আক্তার বিষ পান করেন।
জানা যায়, গত প্রায় ২০ বছর আগে পারিবারিক ভাবে গজারিয়া উপজেলার হোসেন্দী ইউনিয়নের রঘুরচর গ্রামের কালু ফকিরের ছেলে মহসিনের সাথে একই গ্রামের রশিদ মোল্লার মেয়ে আসমা আক্তারের বিয়ে হয়। মহসিন পেশায় একজন মাছ ব্যবসায়ী । সংসার জীবনে তাদের তিন মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। গত কয়েক বছর ধরে মহসিন নেশায় আসক্ত হয়ে পড়লে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে স্ত্রীর সাথে তার দাম্পত্য কলহ বাড়তে থাকে। মাঝেমধ্যে তাদের মধ্যে ঝগড়াঝাঁটি হতো। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় স্ত্রী আসমাকে মারধর করে তার গায়ে আগুন লাগিয়ে দেয় স্বামী মহসিন।
এসময় আশেপাশের লোকজন ছুটে এসে গাঁয়ের আগুন নেভালেও এর কিছুক্ষণ পরে কীটনাশক পান করে অসুস্থ হয়ে পড়ে আসমা। তাকে উদ্ধার করে গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে আসার পর প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে হাসপাতালে ভর্তি রাখে চিকিৎসক। পরদিন শুক্রবার দুপুরে কিছুটা সুস্থ বোধ করায় তিনি বাড়ি চলে যান। বাড়িতে যাওয়ার পর তিনি আবার অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে পুনরায় হাসপাতালে আনা হয়। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা পাঠিয়ে দেয় চিকিৎসক। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় বুধবার মাঝ রাতে মারা যান তিনি।
নিহতের চাচাতো ভাই পিন্টু মোল্লা বলেন, 'বেশ কয়েকবার আমার বোনকে মেরে ফেলার চেষ্টা করে তার স্বামী মহসিন। সর্বশেষ তার গায়ে আগুন লাগিয়ে তাকে পুড়িয়ে মারতে চেয়েছিল সে। এ ঘটনায় তার গায়ের কিছু অংশ পুড়ে যায়। বাধ্য হয়ে আমার বোন আত্মহননের পথ বেছে নেয়। আত্মহত্যায় প্ররোচিত করায় আমরা তার স্বামী মহসিনের শাস্তি দাবি করছি। এ বিষয়ে আমরা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করব'।
বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মাহবুবুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমাদের কাছে আত্মহত্যা বলে মনে হয়েছে। এ বিষয়ে থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হবে। বিষয়টিতে কেউ সংক্ষুব্ধ থাকলে থানায় অভিযোগ করতে পারে। অভিযোগ পেলে আমরা খতিয়ে দেখব।