রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধানে বাংলাদেশের সঙ্গে একযোগে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা (ইউএনএইচসিআর)। মঙ্গলবার সুইজারল্যান্ডের দাভোসে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) সম্মেলনের ফাঁকে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকের সময় ইউএনএইচসিআরের হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি এ ঘোষণা দেন।
ড. ইউনূস রোহিঙ্গা সংকটের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, “বাংলাদেশে অতিরিক্ত এক লাখ শরণার্থীর আগমন আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আপনার কণ্ঠ আরও শক্তিশালী হতে হবে, যাতে এই সংকট সমাধানে বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা যায়।”
গ্র্যান্ডি বলেন, “আমরা রোহিঙ্গা সংকটের একটি টেকসই সমাধানে আপনাদের পাশে থাকতে প্রস্তুত। আপনারা যে মানবিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, তা প্রশংসনীয়।”
রোহিঙ্গাদের জন্য উন্নত আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের অনুমতি দেওয়ায় বাংলাদেশ সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন গ্র্যান্ডি। আগে রোহিঙ্গাদের জন্য শুধুমাত্র বাঁশ এবং ত্রিপল দিয়ে আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের অনুমতি দেওয়া হলেও এখন উন্নত উপকরণ ব্যবহারের সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
বৈঠকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মানবিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। সেখানে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি ও মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।
ড. ইউনূস জানান, রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে তিনি উচ্চপর্যায়ের একজন প্রতিনিধি নিয়োগ করেছেন, যিনি বিভিন্ন দেশের সরকার ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় করছেন। এ বছরের শেষ দিকে একটি বড় বৈশ্বিক সম্মেলন আয়োজনের প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হয়ে উঠছে। মিয়ানমার থেকে আরও রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। আমাদের সহায়তা না পেলে এ সংকটের সমাধান অসম্ভব হয়ে উঠবে।”
জাতিসংঘ ও বাংলাদেশের যৌথ প্রচেষ্টায় রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের পথে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।