মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় তিন ফসলি জমির উপর দিয়ে ২৩০/১৩২ কেভি বৈদ্যুতিক লাইন নির্মাণ বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন করেছে ভুক্তভোগী জমি মালিকরা। রোববার (২৬ জানুয়ারি) বিকাল সাড়ে তিনটায় গজারিয়া উপজেলার ভাটেরচর নতুন রাস্তা এলাকায় অনুষ্ঠিত এই মানববন্ধনে ভুক্তভোগী জমির মালিক ও তাদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। ভুক্তভোগী জমি মালিক মমতাজ বেগম বলেন, ' শিল্প প্রতিষ্ঠানের জন্য সরকার বৈদ্যুতিক লাইন নিচ্ছে সেখানে আমাদের কোন আপত্তি নেই। আমাদের দাবি বৈদ্যুতিক লাইনটা অন্য জায়গা দিয়ে নির্মাণ করা হোক' ভুক্তভোগী জমি মালিক তানভীর হোসেন বলেন, ' এই জায়গা দিয়ে বৈদ্যুতিক লাইন নির্মাণ করা হলে কম করে হলেও তিনশো কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হবে। অনেকের তিন ফসলি জমির উপর দিয়ে লাইনটি যাচ্ছে। কৃষিকাজ করে যারা জীবিকা নির্বাহ করতো তারাও আর্থিক দিক দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে'। আরেক ভুক্তভোগী জমি মালিক কোহিনুর বেগম বলেন, ' আমার জমির উপর দিয়ে বৈদ্যুতিক লাইন যাচ্ছে না তারপরও আমি মানববন্ধনে দাঁড়িয়েছি। আমি শুনেছি যে জমিতে বৈদ্যুতিক লাইনের জন্য টাওয়ার নির্মাণ করা হয় সে জমির আশেপাশের জমি কেউ কিনতে চায় না। এই জমিতে বাড়ি ঘর নির্মাণ করা হলে ভাড়াটিয়া পাওয়া যায় না। এই জায়গা দিয়ে লাইন নির্মাণ করা হলে আমরা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হব। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি বিনীত অনুরোধ আপনারা লাইনটি অন্য জায়গা দিয়ে নির্মাণ করুন'। খবর নিয়ে জানা যায়, মেঘনা ঘাট এলাকার পাওয়ার প্লান্ট থেকে কুমিল্লার মেঘনা উপজেলায় নির্মণাধীন একটি বেসরকারি শিল্প প্রতিষ্ঠানের অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহের ২৩০/১৩২ কেভি ফোর সার্কিট সঞ্চালন লাইন নির্মাণ করছে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি)। তবে প্রস্তাবিত অ্যালাইনমেন্ট অনুযায়ী লাইন নির্মাণ করছে গজারিয়া উপজেলার কয়েক'শো কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে জানা যায়। এদিকে বাংলাদেশ সরকারের বিদ্যুৎ বিধিমালা ২০২০ অনুযায়ী ২৩০ কেভি বৈদ্যুতিক লাইনের উন্মুক্ত তার হইতে নূনতম নিরাপদ দূরত্ব ৪.৬০ মিটার। অ্যালাইনমেন্ট অনুযায়ী রাইট অফ ওয়ে উভয়দিকে ২০ মিটার করে। এই নিয়ম অনুযায়ী বৈদ্যুতিক লাইনের উভয় পাশে ন্যূনতম ২০ মিটারের মধ্যে কোন ভারী কোন স্থাপনা থাকতে পারবে না। তবে প্রস্তাবিত এলাইনমেন্টে ২০ মিটারের কম দূরত্বে মিল-ফ্যাক্টরিসহ বেশ কিছু স্থাপনা রয়েছে। বিষয়টি সম্পর্কে জানতে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি)-এর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ডিজাইন এন্ড কোয়ালিটি কন্ট্রোল (ট্রান্সমিশন লাইন) সরদার মোহাম্মদ জাফরুল হাসানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,' আমি একটু ব্যস্ত আছি আপনার সাথে পরে কথা বলব'। পরবর্তীতে তাকে একাধিক বার কল করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। উল্লেখ্য, এর আগে গত ১৩ জানুয়ারি, এই একই দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছিল ভুক্তভোগী জমি মালিকরা।